বুডঢা হোগা তেরা বাপ দেইখা অমিতাভের পিন্ডি একপ্রস্থ চটকাইলাম।এতগুলা মুভির মাঝে কিনা আমার এইটা দেখা কপালে ছিলো !! রিমোট হাতে নিয়া চ্যানেল ঘুরাইতে থাকলাম।হঠাৎ কইরা এক জায়গায় আইসা চোখ আটকায়া গেলো,দেখলাম তন্বী তরুনী এক সুন্দর মত মাইয়া কেমনে যেনো মোচরাইতাছে,দুনিয়ার যাবতীয় কাগজের তৈরী মোটা শিকল দিয়া বান্ধা,লগে পরিচিত এক লুল হাশমী ভাই। ভাবলাম হাশমী ভাই কি ধনুষ্টংকার রোগের প্রচারনায় নামলো কবে ?( নায়িকার এমনভাবে মোচরানীর দুইটা কারনই থাকতে পারে,হয় ধনুষ্টংকার,নাইলে গুড়া কৃমি--ভুল হৈলে পাঠককূলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী ) । নাহ,এইটা নাকি মার্ডার ২ ছিনেমার জাতীয় সঙীত। কাগজের শিকল দিয়া নায়ক নায়িকা দুইডারেই কোন পাষানে বান্ধলো,এই চিন্তা করতে করতে ঠিক করলাম ছবিডা দেখন দরকার।
ছবির শুরুতেই দেখলাম ইয়ানা গুপ্তাও মোচরাইতাছে।কাহিনী কি বে ? ছবিডা কি ধনুষ্টংকার না গুড়া কৃমি লইয়া ? যাউগ্গা, বেশিক্ষন মোচরাইয়া নাচনের আগেই হিজড়া ভিলেন ধীরাজ পান্ডে ( প্রশান্ত নারায়ানন)'র খঞ্জনীর বাড়ি খাইয়া যাবতীয় মোচড়ামুচড়ীর অবসান হইলো।ধীরাজ পান্ডে হইলেন সাইকো-সিরিয়াল কিলার,প্রথমালোর ভাষায় মনস্তাত্তিক ক্রমিক খুনী ( এহহে.... দাঁত-দুঁত ভাইঙা গেলো রে !! )।উনি খালি খুইজা খুইজা কলগার্ল বাসায় লইয়া যান আর হাতুড়ি-বাটাল-খঞ্জনী সহযোগে খুন কইরা কুয়াতে নিক্ষেপ করেন।উনার আবার নারী জাতিতে যাবতীয় ঘেন্না।তেনার ধারনা মাইয়ালোক সবখানে অনর্থক সুবিধা নেয় ( ব্লগের অনেকের ধারনা কি তাইলে উনার সাথে মিল্যা গেলো ?) । সুতরাং নিজের যৌনাকাংখা দমনের জন্য তিনি হিজড়াকূলের সাথে যোগ দিলেন,অতঃপর পুরুষের মূল্যবান সম্পদখানির ভবলীলা সাঙ্গ করলেন বিশাল এক তলোয়ারের আঘাতে। (বাংলার হাজামগুলা আরো বেশি মানবিক,ছোট ছুরির বদলে এত বড় তলোয়ার লৈয়া আইলে বাংলার কোনো পুরুষ খৎনা করতো না,এইটা সিউর )।
অন্যদিকে দুনিয়ার লুল সম্প্রদায়ের নয়নের মনি ইমরান কেমিক্যালস থুক্কু ইমরান হাশমী আগে পুলিশ ছিলেন,এখন দুই নম্বরী করবেন বইলা চালরি ছাইরা মুম্বাই-গোয়ার গ্যাংস্টারগো লগে যাবতীয় কুকাম সম্পাদন করেন( ব্যাডায় বলদ, পুলিশের চাকরি কইরা আরো বেশি দুই নম্বরী পয়সা,এইডাও জানেনা!!)।আর সব ছবির মতই উনারে কোনো কামের জন্য ভাড়া করতে হৈলে ২-৩ পেটির নিচে হয় না ( মনে হয় কিছুদিন জিম্বাবুয়েতে কাটায়া আসছে,তাই খালি বড় বড় বান্ডিল চায় )। ওহহো !! উনি কিন্তু আবার নাস্তিক ....... তবে নাস্তিক হইলেও নিয়মিত চার্চে গিয়া এতিমদের ট্যাকা দ্যান। আর বাকিটা সময় উনি মডেল কন্যা প্রিয়া ( জ্যাকুলিন ফার্নান্ডেজ ) এর সাথে থাকেন ।
একখান বিষয় দেইখা কিঞ্চিৎ লজ্জিত হইলাম। মডেল প্রিয়ার সাথে উনার কি কাজ-কাম তা ছবি দেখলেই বুঝবেন তয় তার বাইরে আরেকটা কাম উনি ছবিতে বেশ মনোযোগ দিয়া অনেকবার করছেন,তা হইলো নায়িকার বক্ষবন্ধনী অবমুক্ত করা।আমার ধারনা ছিলো শুধুমাত্র বাংলাদেশের টাকা'র উপরেই ''চাহিবা মাত্র বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবে'' লিখা থাকে। এখন দেখি নায়িকার বক্ষবন্ধনীতে হয়তো লেখা ছিলো, ''চাহিবা মাত্র খুলিয়া দিতে বাধ্য থাকিবে'' !! তবে হাশমীর জন্য যে চাওয়া যে লাগে নাই,এই নিশ্চিত। আর নায়িকারে চেহারা দেইখা মনে হৈলো, হুট কইরা লম্বা/হাতে পায়ে বড় হৈয়া গেছেন, কিন্তু বাচ্চাদের স্বভাব যায় নাই।ছোটবেলার জামাকাপড় পইড়াই শুটিংয়ে চইল্যা আসছেন।
গোয়া(গালি দেইনাই কইলাম )'র গ্যাংস্টার সমীর মিয়ার কলগার্লগুলা খালি হারাইয়া যাইতাছে বইলা উনি হাশমিরে ভাড়া করলেন,মাইয়াগুলারে কে গায়েব করতাছে তা খুইঁজা দে বাপ !! হাশমী ভাই অ্যাডভান্স ট্যাকা লৈয়া একপ্রস্থ বিতরন করলেন চার্চে,আরেকপ্রস্থ মডেল প্রিয়ারে।তারপর কামে নামতে না নামতেই আবিষ্কার করলেন ,একটা ফিক্সড নাম্বার থিকা কল কৈরা মাইয়াগুলারে নিয়া যায় । (কিলার ব্যাডায় ৯৯ টাকা দিয়া কি এয়ার্টেলের কয়েকখান সীম কিনতে পারতো না ?বেকুব )!! হাশমী ভাই থিওরী মারলেন,সিংহ ধরতে টোপ হিসাবে ছাগল লাগে,সুতরাং আরেকটা মাইয়া যেনো টোপ হিসাবে ঐ নাম্বারে সাপ্লাই দেওয়া হয়। তো সাপ্লাই হইলো ১৭ বছরের মাইয়া,মাইয়ারে পাইয়া ভিলেনে দুইডা গান শুনাইলো।তারপর হাতুড়ি বাটাল লৈয়া নকশা শুরু করলো । কাউরে মারার আগে নকশা করলে যা হয়,নিজের হাতেই হাতুড়ির কোপ খাইয়া ভিলেন লৌড়াইলো ফার্মেসীতে।ফার্মেসীতে মওজুদ ছিলেন হাশমী,উনি ভিলেনরে ধইরা দিলেন পিঠে কয়েক ঘা।পুলিশ আইসা দুইডারেই থানায় চালান দিলো।
হাশমী পুলিশরে কৈলেন এই ব্যাডারে প্রথমালো খুজতাছে,দারোগা কৈলেন যেহেতু প্রথমালোর ঘোষিত ক্রমিক খুনী,সেহেতু উনি সম্মানিত ব্যক্তি আর চুর হৈলো হাশমী।উনাদের ক্যাচালের মাঝেই ধীরাজ পান্ডে ক্ষমতাবান সরকারী অফিসার ও হিজড়া নেতা নির্মলা পান্ডের সহযোগিতায় ছাড়া পাইলেন।
ঐদিকে হাশমী ভাই তেনার বান্ধুবীরে তেমন একখান নাকি টাইম দেন না বৈলা নায়িকার মনে বড়ই দুষ্ক।নায়িকা দুষ্কের চোটে সংক্ষিপ্ত পোষাকে রাস্তায় নাইমা গেলেন।তয় জাতে মাতাল হৈলেও তালে ঠিক উনি,তাই অতি সংক্ষিপ্ত কাপড়ের উপর একটা শালের মত জড়াইলেন ( পাছায় কাপড় নাই,মাথায় ঘোমটা-টাইপ ব্যাপার স্যাপার )।তয় নায়িকারা যেই রাস্তায় হারায়,সেইসব রাস্তা আবার নায়কের সামনেই গিয়া শেষ হয় । সুতরাং হাশমী ভাই তাকে খুব সহজেই খুইজা পাইলেন।এরই মাঝে খবর আসলো ধীরাজ পান্ডের। নায়ক ক্রদ্নরতা নায়িকাকে ফালাইয়া ফুটলেন।
ধীরাজ পান্ডে ঐদিকে মুড়ি-মুড়কির মত আরো গোটাকয়েক খুন কৈরা নায়িকারে ফোনাইয়া বললেন ,ফটোশ্যুট আছে.... সে যেন বাগান বাড়িতে চৈলা আসে। নায়িকাও দেরি না কৈরা ফটোশ্যুটের কাপড় পইড়া মাঝরাইতে বাইর হৈলেন।ওঠ ছুড়ি তর বিয়া টাইপ ব্যাপার স্যাপার, মাইঝরাইতে কৈলো,''আসো ফটুক তুলি'' আর নায়িকাও ল্যা ল্যা কৈরা লৌড় দিলো। কপাল !! ঐদিকে চাচাচৌধুরীর মস্তিষ্কের চেয়েও প্রতিভাবান,জেমস ভন্ডের চেয়েও লুল,আইরিন খানের চেয়েও বড় মানবতাবাদি ইমরান হাশমী কিলারের ঘরের খোঁজ পাইয়া গেলেন,সেইখানে গিয়া লিপস্টিক ও ফেসিয়াল করারত অবস্থায় পাইলেন ভিলেন বাবাজিরে ।আচ্ছামতন দু'ঘা লাগানের আগেই সুন্দরীতমা নায়িকা আইসা আহলাদের সাথে মারামারি দেখা শুরু করলেন। ভিলেনও জানতো চিরায়ত বলিউডি ফিল্মে মারামারিতে ব্যস্ত নায়কের মন ডাইভার্ট করতে নায়িকার জুড়ি নাই,সুতরাং আহত ভিলেনরে পাশে রাইখা নায়িকার সাথে জড়াজড়িতে উৎসুক নায়কের মাথা ফাটানের চান্স সে পাইয়া গেল,এবং ফাটাইয়াও দিতে কসূর করলোনা।
এইবার সে অজ্ঞান নায়করে মোটামুটি ৩০গজ দূরে রাইখা নায়িকার হাত-পা বাইন্ধা নায়করে নকশা দেখানো শুরু করলো,ক্যামনে তার নায়িকারে মারবো-এই আর কি।অন্য সব বার নকশা দেখাইলে যা হয়,এবারো তাই হৈলো,নায়িকারে থোতাঁ মুখ ভোতাঁ করার লাস্ট সেকেন্ডে আধা অজ্ঞান নায়ক শোয়েব আখতারের গতিতে আইসা ভিলেনরে ধরাশায়ী করলো। অ্যাজ ইউজুয়ালী ভিলেনরে মারার লাস্ট মোমেন্টে পুলিশের আগমন,''আইন নিজের হাতমে মাত তুলো' .... কিন্তু বিডিআর বিদ্রোহে উস্কানীদাতাদের মত ভিলেন নায়করে হালকা উস্কানী দিলেন।উস্কানীতে জেরবার ও উত্তেজিত হৈয়া নায়ক ভিলেনের সানডে মানডে ক্লোজ করলেন।
অবশেষে নাস্তিক নায়ক ও আস্তিক নায়িকা একসাথে চার্চে গিয়া মৃতদের জন্য দোয়া খায়ের করতে ব্যস্ত হৈলো,আর নাস্তিকতা দূরীকরনে 'মনস্তাত্তিক ক্রমিক খুনী'র কি ভুমিকা থাকতে পারে,তা চিন্তা করতে করতে পোস্ট লিখলাম।
**বি.দ্র. সমস্ত অন্তর্জাল ঘাটিঁয়া এর চাইতে ভালো কোনো ছবিও খুজিঁয়া পাওয়া যায় নাই নিজ নিজ শিশুকে এই পোস্ট পড়ানো ও মার্ডার-২ দেখানোর দায়িত্ব সম্পুর্নরূপে ঐ ব্লগারের। দূর্যোধন বিশ্বাস করে ব্লগের সকলের মানসিক বয়স ১৮+,এছাড়া দূর্যোধন হিটাকাংখীও নহে।সুতরাং হেডলাইনে ১৮+ ট্যাগ দেওয়া হৈলো না।
আরেকটি দ্রষ্টব্য বিষয়: ব্লগার কাঊসার রুশো এবং ব্লগার দিপ মার্ডার ২ ছবিটির পোস্টার এবং স্টোরি যেই সকল কোরিয়ান মুভি থেকে মারিং করা হয়েছে,তা এই পোস্টে প্রথম গোচরে আনেন।ছবির পোস্টার চুরি করা হয়েছে কোরিয়ান ফিল্ম Bad Guy এবং স্টোরিলাইন চুরি করা হয়েছে আরেকটি কোরিয়ান ফিল্ম The Chaser (2008) থেকে।ওনাদের ধন্যবাদ ।