আগামীকাল (১৮ই নভেম্বর ২০১১, শুক্রবার) প্রথমবারের মত 'তাহের মেলা' অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। চলে আসুন টিএসসি'র সড়ক দ্বীপে সকাল ১০টায়। দেখুন কর্নেল আবু তাহের (বীর উত্তম) এর ব্যবহৃত স্মৃতিবিজড়িত সামগ্রি, ছবি, জীবনপঞ্জী এবং বিভিন্ন সময়ে তাহেরের উপর লেখা। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন ১১ নং সেক্টরের তিনজন বেসামরিক মুক্তিযোদ্ধা। তাদের মুখেই শুনুন যুদ্ধের ইতিহাস। সকাল ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে তাহের মেলার অংশ হিসেবেই হবে ঘুড়ি উৎসব। এবং বিকেল টিএসসি'র সড়ক দ্বিপে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বক্তব্য রাখবেন জাস্টিস গোলাম রাব্বানি, ড. শাহদীন মালিক, অধ্যাপক সিরাজুল ঈসলাম চৌধুরী, ড. আনোয়ার হোসেন এবং আরো অনেকেই। গান গাইবেন মাহমুদুজ্জামান বাবু। আপনাদের প্রতি আমন্ত্রণ রইল।
ফেসবুকে তাহের মেলা Click This Link
কর্নেল তাহেরকে নিয়ে আমার এক পুরনো ব্লগ নিচে তুলে দিলাম -
হ্যাঁ
আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি-
যিনি স্বাধীনতা আন্দোলনের নিমিত্তে প্রয়োজনীয় সামরিক বুৎপত্তি অর্জনের লক্ষ্যে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন ।
হ্যাঁ
আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি-
যিনি পাকিস্তান থেকে ছুটিতে এসে এদেশকে স্বাধীন করতে লড়াকুদের ট্রেনিং দিতেন ।
হ্যাঁ
আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি
যিনি পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন ।
হ্যাঁ
আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি
যিনি সর্ববৃহৎ ১১ নং সেক্টর এর অধিনায়কত্ত্ব করেছিলেন ।
হ্যাঁ
আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি-
যিনি কামালপুর সম্মুখযুদ্ধে তার বাম পা হারিয়েছিলেন ।
হ্যাঁ
আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি-
যিনি সেনা অফিসারদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্ছার হয়েছিলেন ।
হ্যাঁ
আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি-
যিনি সেনাবাহিনীকে উৎপাদনমুখী করার পরকল্পনা করেছিলেন ।
হ্যা
আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি
যিনি জাসদ’র বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা ও গণবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ।
হ্যাঁ
আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি-
যিনি সিপাহি জনতার বিপ্লবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ,
মুক্ত করেছিলেন জিয়াকে ।
হ্যাঁ
আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি-
যাকে জিয়া বলেছিলেন ‘ইউ আর মাই ব্রাদার ,ইউ আর মাই সেভার ’।
হ্যাঁ
আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি -
যিনি ছিলেন প্রথম মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসার যাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল ।
তারিখ ২১ শে জুলাই ১৯৭৬ , ভোর ৪টা ।
জীবন মৃত্যুর মুখে একেছো মোহর
পোষ্টম্যান ফেরী করে এখন তোমাকে;
তুমি আর ব্যক্তি নও , তুমি যে খবর
আমাদের প্রতিপক্ষ সে খবর রাখে ?
অলক্ষ্যে নিজের মৃত্যু যে পায়নি টের
সে জানে না বিপ্লবের পতাকা তাহের ।
-মুহম্মদ নূরুল হুদা
হ্যাঁ, বিপ্লবের পতাকাই যদি হোন স্বয়ং তাহের তবে, তাকে হত্যা করতে পারে কোন শালা ! নিঃসঙ্ক চিত্তের তাহের কি মরতে পারে ? নাকি কেউ পারে তাকে মারতে ? তাহের নিজেও এটা জানতেন আর তাই "সকালে দাড়ি কেটে, পছন্দের নীল শার্ট পরে, আম কেটে খেয়ে, নিজের রচিত বিপ্লবের কবিতা আবৃত্তি করে ফাঁসির মঞ্চে ওঠেন আর ফাঁসির রশি নিজ হাতে গলায় পরেন " ।
আর এভাবেই কাপুরুষেরা যখন নিজ গৃহকেই পৃথিবী ভেবে আত্মপ্রসাদ লাভ করেছিল তখন তাহের সারা পৃথিবীকেই তার আপন ঘর করে নিয়েছিলেন ।
আর এভাবেই বাঙালীর সংগ্রামী প্রেরণায় তিতুমির, ক্ষুদিরাম, সুর্যসেন, আসাদ, লে. ক. মোয়াজ্জেম , সিরাজ শিকদার প্রমুখের নামের পাশে কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তম এর নামও যুক্ত হলো ।
হ্যাঁ যা বলছিলাম , এই সব বিপ্লবীদের শারীরিক হত্যাকান্ডে যারা উল্লাসিত হয়েছিল তাদের মত হাদারামরা বোঝেনি তাতে আসলে বেড়ে গেছে বিপ্লবেরই স্পর্ধা ।
একটু খেয়াল করে দেখুন তো, তিতুমির, ক্ষুদিরাম, সুর্যসেন, আসাদ, লে. ক. মোয়াজ্জেম , সিরাজ শিকদার , তাহের - আজও তাদের উপস্থিতি টের পান কিনা ? স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে-কানসাটে -ফুলবাড়ীতে-ভবদহে ।
অবশ্য, পরবর্তীতে তাহেরের সহযাত্রীদের -
কেউ হয়েছেন জিয়ার জাতীয়তাবাদী থিসিস প্রণেতা
কেউ জাসদ থেকে ইস্থফা দিয়ে বর্তমানে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের প্রধান সওদাগর
কেউ হয়েছেন এরশাদের সংসদের গৃহপালিত নেতা
কেউ হয়েছেন খালেদা সরকারের থিফ অফ বাগদাদ
আর অধিকাংশই পুজির নষ্ট সংগমের বেশ্যা ।
এখানেই জন্ম নেয় নিরাশার বীজ
কিন্তু তারপরও আমি আশাবাদী কারণ
বিপ্লবের পতাকা তাহের ।
তাহের মরেনি
তাহেররা কখনো মরে না ।
আমার সাথে তাহেরের দেখা হয় কানসাটে -ফুলবাড়িতে- ভবদহে- নারায়ণগঞ্জে-সাভারে-শাহবাগে-পরিবাগে কিংবা অন্য কোথাও ।
(প্রথম প্রকাশ , স্বাধীনতা যুদ্ধের অপর নায়কেরা // নুরুজ্জামান মানিক ,শুদ্ধস্বর ,একুশে বইমেলা ২০০৯ )