somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সময়ের খুব অভাব

২০ শে ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ডিজিটাল দুনিয়ায় সবকিছু হাতের মুঠোয়, দশদিনের রাস্তা আজ একদিনে যাওয়া যায়। আগে যে কাজ চিঠি লিখে করতে হতো সেই কাজ আজ ইমেইলেই হয়ে যায়। আগে ফোনবুথে গিয়ে ফোন করতে হতো, অপরপাশের ব্যক্তির বাসায় যদি ফোন না থাকতো তাহলে আগে থেকেই শিডিউল করা থাকতো যে আমি অমুক সময়ে ফোন দেবো। আগে কোন একটা ইনফরমেশনের জন্য লাইব্রেরীতে যেতে হতো, এখন তা মোবাইলেরর এক গুতায় বের হয়ে যায়। বেশীদিন আগের কথা নয়, কম্পিউটার খুব অল্প বাসায় ছিল, ইন্টারনেট ছিল আরও অল্প বাসায়। কোন ইনফরমেশনের জন্য এটলিস্ট কম্পিউটারের সামনে বসতে হতো। এখন আর তা করতে হয় না। ৫ জির যুগ। যোগাযোগ, ইনফরমেশন, অফিশিয়াল প্ল্যান, অফিশিয়াল প্রোগ্রাম, হিসাব নিকাশ সবই এখন আগের চেয়ে পাচ গুন দ্রুত হচ্ছে , একমাসের কাজ এক সপ্তহে হচ্ছে এখন। তাহলে সময়ের এত অভাব কেন? কেন আমরা এখনো পরিবারকে সময় দিতে পারছিনা, কেন আমরা এখনো নিজেকে সময় দিতে পারছিনা। আমাদের কি কোন আত্বিক উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা যে বেঁচে আছি তা কি আমরা বুঝতে পারছি। আমরা যে মানুষ, আমরা যে জীবিত, তা কি আমরা জানি? নাকি মৃত্যুর পরে উপলদ্ধি করি যে মানুষটাএতদিন জীবিত ছিল!

বেকারদের কাজের অভাব নাই, বেকারদের সময় ও নাই। এটা চলতি বাক্য। কেন এমন হয় ? এর উত্তর হবে দীর্ঘসূত্রিতা। আমার নিজের উদাহরন দিয়েই বলি। আমি সকাল ১০টায় ঘুম থেকে উঠি, ক্লাশ করি, দুপুর দুইটায় কাজে যাই , রাত দশটায় আসি। ভাত খাই ঘুমাই। সারাদিনে অন্তত্য দুই তিন ঘন্টা ইউটিউবে বাল্ বুল দেখে বেড়াই। আগে ফেসবুকে মাদকাসক্তের মত স্ক্রল করতাম। আইডি ডিলিট করার পরে সে যায়গা দখল করেছে ইউটিউব। প্রচুর ডকুমেন্টরী দেখা হয় অথচ সেইসব আমি অল্প কিছুক্ষন পরেই ভূলে যাই, তারমানে এই ডকুমেন্টরী দেখার পেছনে আমি যে সময় ব্যয় করেছি তা অপচয় হয়েছে । অথচ ছোট বেলায় বিটিভি তে দেখা ডকুমেন্টরী আমার এখনো মনে আছে। কেন?? কারন প্রাচুর্যতা এবং অপ্রতুলতা। আগে এসব বস্তু অপ্রতুল ছিল, তাই মনযোগ দিয়ে দেখতাম। এখন এতইন প্রাচুর্যতা হয়েছে যে মনযোগ নেই। আগে এনসাইক্লোপিডিয়া মুখস্ত ছিল, এখন হাতে উইকিপিডিয়া আছে।

প্রচুর সময় নস্ট করি। কিভাবে নস্ট করি সেই ফিরিস্তি আমার নিজেরো ভাল হিসাব নেই। হিসাব থাকলে কি আর নস্ট করতাম!
কিভাবে সময়োপযোগীতা বৃদ্ধি করা যায়?

#দীর্ঘসূত্রিতা বন্ধ করতে হবে
# কাল করবো বা ৫ মিনিট পরে করবো এই চিন্তা না করে এখনই করে ফেলতে হবে।
#মাল্টিটাস্কিং বন্ধ করতে হবে। যখন যেটা করছি তখন সেটার পূর্ন স্বাদ গ্রহন করতে হবে।
# ভোরে উঠলে প্রচুর সময় পাওয়া যায়। দিন ভাল কাটে। অনেকের রাতে তাড়াতাড়ি ঘুম আসে না ( আমারোও আসে না)। তারা রাতে দেরীতে ঘুমিয়ে যদি পরের দিন ভোরে উঠে এবং ঘুম পূর্ন না হয় তারা দুপুর বেলা আধাঘন্টা পাওয়ার ন্যাপ নিয়ে দেখতে পারেন বেশ চাংগা লাগবে । আমিও তাই করি। কয়েকদিন এরকম করলে ভোরে উঠা অভ্যাস হয়ে যাবে।
#কখন কোন কাজ করবো তার পরিকল্পনা খাতায় বা ডায়রীতে লিখে রাখতে হবে। অনেকের মোবাইলের অর্গানাইজারে লিখে রাখার অভ্যাস। আমি এখনো এই ব্যাপারে কাগজের লোক। মোবাইলে ফীল আসেনা। মোবাইলে লিখে রাখা ভালো তাতে করে সব যায়গায় শিডিউল কাছেই থাকে। তবে মোবাইলে শিডিউল দেখার নামে ফেসবুকে ঢুকে গেলে সমস্যা। আমার অনেকবার এমন হয় যে ওয়েদার দেখার নামে মোবাইল আনলক করেছি কিন্তু ৫ মিনিট নেট ব্রাউজ করেছি কিন্তু ওয়েদার দেখা হয় নাই।
# সবকিছুর আলাদা আলাদা স্লট তৈরী করতে হবে , যেমন সকালে উঠে আমি নাস্তা করি, দাত ব্রাশ করি ১ ঘন্টা, ফ্রী হ্যান্ড এক্সারসাইজ করি একঘন্টা। তারপরে বিবিসি বাংলা, প্রথম আলো নিউজ, আর আমি যে দেশে থাকি সে দেশের নিউজ পেপার পড়ি, নেট ব্রাউজ করি এক ঘন্টা। মেইল চেক , রিপ্লাই, জবের ওয়েবসাইটে ঢুকা এসবে আরোও একঘন্টা। তারপরে ক্লাশ ৯ টা থেকে দেড়টা। তারপরে ভাত খাই, গোসল করি, কাজে যাই রাত নয়টায় জীমে যাই, দশটায় বাসায় আসি, ভাত খাই , ঘুমাই। আমি এভাবে করার চেস্টা করি, বেশীর ভাগ সময় চেস্টা করি কিন্তু পারি না ।
সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো মোবাইল টেপার সমস্যা। আমি একসম্য ফেসবুক থেকে মুক্তি চেয়েছি, আমি এখন মোবাইল থেকে মুক্তি চাই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম রেডিট, ইনস্টাগ্রাম এসবে আগে ইনফরমেশনের জন্য ঢু দিতাম, এখন বুঝতে পারছি সেসব আসলে সময় নস্টের আখরা। আমার সেসব আবর্জনার দরকার নেই। ইদানিং রাজনৈতিক খবরে আগ্রহ বোধ করি, তাই ইউটিউবে কয়েকটা চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করেছি। পডকাস্ট বাংলাডেশ বা ইন্ডিয়ায় খুব একটা জনপ্রিয় নয়। সব ইউটিউব ভিত্তিক। তাই ইউটিউবে ঢু মারা। তবে নিউজ পেপার হচ্ছে পাবলিককে ঠুলি পড়িয়ে রাখার একটা যন্ত্র বিশেষ। বেছে বেছে জেনে বুঝে এসব খবর দেখতে হয়। পেলেস্টাইনে বোমা পড়লে আমার কি ? কিন্তু শুনতে ভাল লাগে, এমন মশলা মাখিয়ে খবর পরিবেশন করে।
যাই হোক সবকথার শেষ কথা, সময়ের উপযোগীতা বাড়াতে হবে, আর উপযোগীতা বাড়াতে হলে, মোবাইল টপার হার কমাতে হবে, ভোরে উঠতে হবে, মাল্টিটাস্কিং বাদ দিতে হবে, সোশাল মিডিয়া বাদ দিতে হবে।





সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৩৫
৭টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দেশনায়ক তারেক রহমানকে সম্পৃক্ত করার নেপথ্যে  

লিখেছেন এম টি উল্লাহ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:০৮


আগেই বলেছি ওয়ান ইলেভেনের সরকার এবং আওয়ামীলীগের যবনায় জনাব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে পৌনে একশ মামলা হলেও মূলত অভিযোগ দুইটি। প্রথমত, ওই সময়ে এই প্রজন্মের নিকট উপস্থাপন করা হয়েছিল দেশনায়ক তারেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্পকে নিয়ে ব্লগারদের রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



**** এডমিন টিমের ব্লগারেরা আমাকে বরাবরের মতোই টার্গেট করে চলেছে, এভাবেই সামু চলবে। ****

ট্রাম্পের বিজয়ে ইউরোপের লোকজন আমেরিকানদের চেয়ে অনেক অনেক বেশী শংকিত; ট্রাম্প কিভাবে আচরণ করবে ইউরোপিয়ানরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্পের বিজয়, বিশ্ব রাজনীতি এবং বাংলাদেশ প্রসংগ

লিখেছেন সরলপাঠ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২১

ট্রাম্পের বিজয়ে বাংলাদেশে বা দেশের বাহিরে যে সব বাংলাদশীরা উল্লাস করছেন বা কমলার হেরে যাওয়াতে যারা মিম বানাচ্ছেন, তারাই বিগত দিনের বাংলাদেশের ফ্যাসিস্টের সহযোগী। তারা আশায় আছেন ট্রাম্প তাদের ফ্যাসিস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠেলার নাম বাবাজী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩১

এক গ্রামীণ কৃষক জমিদার বাড়িতে খাজনা দিতে যাবে। লোকটি ছিলো ঠোটকাটা যখন তখন বেফাস কথা বা অপ্রিয় বাক্য উচ্চারণ করে ক্যাচাল বাধিয়ে ফেলতে সে ছিলো মহাউস্তাদ। এ জন্য তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×