মহাবংশ বৌদ্ধ ধর্মের প্রাচীন একটি বই। বর্তমানে এই বইটি আমি পড়ছি। বইটির নাম আমি পেয়েছি চার্লস এলেনের আশোকা বই এর রেফারেন্স থেকে। বৌদ্ধ ধর্ম সম্পর্কে আমি হিন্দু ধর্ম থেকে কম জানি, অথবা বলতে গেলে প্রায় কিছুই জানিনা। তবে ধর্ম গ্রন্থের রূপকথা পড়তে আমার ভাল লাগে। এর মাধ্যমে সে সময়কার জীবন চিত্রের কিছু রূপ মানষপটে ভেসে উঠে। মহাবংশ বইটিতে শ্রীলংকার রাজবংশের প্রতিষ্ঠা হবার গল্প পাওয়া যায়। শ্রীলংকার রাজবংশ প্রতিষ্ঠার গল্পের আরো চারটি ভিন্ন ভিন্ন ভার্শন রয়েছে। যার মধ্যে দ্বীপবংশ বই এবং মহাবংশ বই এ প্রথম রাজার নাম বিজয় , এবং বাকী দুই গ্রন্থে অন্য নাম রয়েছে। উল্লেখ্য যে দ্বীপবংশ বই টি মহাবংশ থেকেও প্রাচীন। এবং মহাবংশ বইয়ে প্রচুর জাদুমন্ত্র ভেল্কীবাজী এসবের উল্লেখ রয়েছে। মহাবংশ বইয়ের ছয় নম্বর অধ্যায় থেকে বিজয়ের গল্প শুরু হয়। এর আগের অধ্যায় গুলোতে প্রথ তিনটি বৌদ্ধ সম্মেলন কিভাবে এবং কেন সংঘটিত হয়েছিল তার বর্ননা আছে, যা খুব একটা ইন্টারেস্টিং নয়, শুধুমাত্র আশোকের পার্ট টুকু ছাড়া। সেই পার্টেও প্রচুর ভেল্কীবাজি রয়েছে। তা পরে আর কোন দিন আলাপ করা যাবে। আজ বিজয়ের গল্প আরম্ভ করছি।
বিজয়ের লংকায় আগমন
একদা বংগদেশে এক রাজা ছিলেন। রাজার রানী ছিলেন কলিংগ ( ওরিষ্যা) দেশের রাজকন্যা। তাদের এক কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহন করে। সেই কন্যা সন্ত্যান জন্ম গ্রহন করার সময় দৈব বানী হয় যে এই কন্যা সিংহ ভোগ্যা হবে। তাই তার বাবা মা ত্তাকে কঠোর নিরাপত্তায় বন্দী রাখতেন। কিন্তু কন্যা ছিলেন স্বাধীনচেতা। তাই তিনি যৌবনবতী হবার সাথে সাথে রাজ্য থেকে পালালেন এবং মগধগামী এক বণিক কাফেলার সাথে দেশ বিদেশ ঘুরতে বের হলেন।
পথে সেই কাফেলা সিংহ দ্বারা আক্রান্ত হয়, এবং সেই কাফেলা সেই রাজকন্যাকে ফেলেই পলায়ন করে। সিংহ সেই রাজকন্যাকে খাবার উদ্দ্যেশ্যে বন্দী করেন। রাজকন্যা সেখান থেকেও পলায়ন করেন কিন্তু পথিমধ্যে সেই সিংহ রাজকন্যাকে আবার ধরে ফেলে এবং বন্দি করে। এবার সেই রাজকন্যার জন্মের সময়ের সেই দৈব বানী মনে পড়ে এবং সে সিঙ্ঘের হাতে নিজেকে সমর্পীত করে। সিংহ তাহে নিজের গুহায় নিয়ে যায় এবং তাদের মিলনে এক ছেলে ও এক মেয়ের জন্ম হয়। ছেলেটির নাম রাখা হলো সীহবাহু এবং মেয়েটির নাম রাখা হলো সমবলী। সীহবাহুর গায়ে অনেক শক্তি। সে তার মাকে জিজ্ঞেস করল যে তারা এই গুহার ভেতরে বন্দি কেন, তখন তাদের মা বললো যে তাদের বাবা একজন সিংহ এবং সেই সিংহ তাদের এই গুহার মুখে পাথর দিয়ে আটকে রেখেছে। তখন সীহ বাহু সেই পাথর তার হাত দিয়ে সরিয়ে দিল। এবং মা বোনকে নিয়ে পলায়ন করলো এবং এক গ্রামে আশ্রয় নিল। গ্রামবসী দয়াপরবশ হয়ে তাদের কাপর চোপড় এবং খাবার দিল। তারা সেই খাবার হাত দিয়ে ধরার সাথে সাথেই তা অনেক ভাল খাবারে পরিনত হলো, সেই কাপড় গায়ে পরার সাথে সাথেই তা মূল্যবান কাপড়ে পরিনত হলো। সেই দেশের রাজা দয়াপরবশ হয়ে সেই রাজকন্যা এবং তার পূত্র কন্যাকে আশ্রয় দিলেন।
এদিকে সেই সিংহ তার পুত্র কন্যা পলায়ন করেছে দেখে রাগে আশেপাশের গ্রামে হামলা করতে লাগলো । তখন গ্রামবাসীরা রাজার কাছে বিচার দিল। তাই রাজা ঘোষনা করলেন যে সে এই সিংহ কে হত্যা করতে পারবে তাকে অর্ধেক রাজত্ব ও অনেক ধনসম্পদ দেয়া হবে। অনেকেই চেস্টা করলো এবং বিফল হলো , অবশেষে সিহবাহূ এই সিংহ কে হত্যা করতে রাজী হলেন। সীহবাহুর মা তাকে অনেক বোঝালেন এবং বললেন যে পিতৃহত্যা মহা পাপ কিন্তু সীহবাহু তার মায়ের অপমানের প্রতিশোধ নিতে চাইলেন।
ওরে বাবা অনেক লম্বা লেখা হয়ে যাচ্ছে , সীহবাহু সেই সিংহ রূপী বাপকে হত্যা করত্রে পারলো কিনা, সেই লিখা পরে আর কোনদিন লিখবো। আজ এই পর্যন্তই। হাত ব্যাথা করতেছে
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৩০