চিরসুখীজন ভ্রমে কি কখন
ব্যথিতবেদন বুঝিতে পারে।
কী যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কিসে
কভূ আশীবিষে দংশেনি যারে
আমি যেই দেশে বসবাস করি সেই দেশটাতে অধিকাংশ লোক সাদা চামড়া প্রোটস্টান্ট খ্রিস্টান। এই দেশে আমি সংখ্যালঘু, আমার চামড়া কালো, আমার নাম মোহাম্মদ। ইউরোপ আমেরিকার অন্য দেশগুলোতে যখন কোন হেট ক্রাইম হয় তখন আমার খুব ভয় লাগে। যদি আমার এবং আমার পরিবারের উপরে কখনো কোন হামলা হয়? কেউ যদি আমাদের সম্পর্কে কটু কথা উচ্চারন করে? এদেশের মানুষ অনেক ভাল, তাদের আইন শৃংখলা খুব ভাল। তাই ভয় একটু কম লাগে, কিন্তু ভয় একটু হলেও লাগে।
আমি এই দেশে একবার মাত্র রেসিজমের স্বীকার হয়েছিলাম, লোকটা আমাকে বলেছিল "ইউ ব্লাডি ইন্ডিয়ান, তুমি কেন আমার দেশে এসেছ, নিজের দেশে ফেরত যাও, কেন যে এরা এসব দেশে আসে!"
আমি যাস্ট হতভম্ব হয়ে গাড়ির পার্কিংএ অন্ধকারে দাঁড়িয়ে ছিলাম।আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিল, আমার খুব কস্ট হচ্ছিল। সেই মুহূর্তে আমার নিজেকে দুনিয়ার সবচেয়ে অসহায় বলে মনে হয়েছিল। আমি শুধু অন্ধকারে ঠোট কামড়ে চোখের পানি চাপতে চাপতে বিড় বিড় করে বলেছিলাম আমি একজন বাংলাদেশী।
আজ নবমী, হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মউৎসব।
আল্লাহ পরম করূনাময় এবং দয়ালু, আমাদের নবী ছিলেন দয়ার সাগর। সেই ধর্মের অনুসারী সেই নবীর অনুসারী যারা, তারা একটা দেশের সংখ্যাগুরূ। সেই দেশে সংখ্যালঘুরা নিরাপত্তার অভাবে ভয় পাচ্ছে, তারা নিরাপদ বোধ করছেনা, তারা তাদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় অনুসঠান যথাযথ ভাবে পালন করতে পারছেনা, এটা কিভাবে সম্ভব হয়?
খ্রিস্টান দেশে একজন মুসলমান যদি নিরাপদে চলতে পারে, একটা মুসলমান দেশে হিন্দুরা কেন নিরাপত্তার অভাব বোধ করবে। তারা কেন দেশ ছেড়ে চলে যাবে। খ্রিস্টানপ্রধান দেশে আমার একটু হলেও ভয় লাগে, মুসলমান প্রধান দেশে কি হিন্দুদের একটুও ভয় লাগা উচিত?
আমার মর্দে মুজাহিদ ভাইদের প্রতি প্রশ্ন, যে হিন্দুরা মুসলমানের ছোয়া লাগলে গোবরজল শুদ্ধি করে, তারা যদি একটা কোরআন শরীফ তাদের দেবতার সামনে রাখেও তাহলে কি তাদের দেবতারই অসম্মান হয় না? ধরেই নিলাম আমাদের কিতাবের প্রতি তাদের সম্মান নাই, কিন্তু তাদের ঠাকুরের প্রতিতো তাদের সম্মান আছে। তারা কেনো এটা করবে?
কোন পয়গম্বরকে শুনিনাই মাথা ফাটাইয়া ইবাদতের রাস্তা বাতলাইতে। মাথা ফাটাইয়া ইবাদত করার পন্থা আবিস্কার করলো কে?