somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কথা-ছবিতে আমার দেখা সিঙ্গাপুর

০৪ ঠা মে, ২০১৪ দুপুর ১২:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"হিউম্যান রিসোর্স আবার কোন কোম্পানি?" পান চিবোতে চিবোতে বদখত চেহারার ইমিগ্রেশনের এক মহিলা পুলিশ বাজেভাবে জিজ্ঞেস করল!!! X(X( ভাবখানা এমন যেন, ভুয়া এনওসি নিয়ে লেবার যাচ্ছে চোরকারবারী করতে!! তাকে বললাম, লেটার হেডে কোম্পানির নাম লেখা আছে, আর হিউম্যান রিসোর্স হচ্ছে ডিপার্টমেন্টের নাম যেখান থেকে এনওসি ইস্যু করেছে। মূর্খ্য মহিলা সন্তুষ্ট হতে না পেরে তার স্যারকে ডেকে নিয়ে আসল। ইনি এসে বিরক্তভাবে বললেন, ভিসা ঠিক থাকলে ছেড়ে দেন তো X(। যাইহোক, আর কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই সিংগাপুর পৌঁছলাম। প্লেনে বসে চামে চামে রোনিন ৪৭ টা দেখে নিলাম আরকি! আর হ্যাঁ, সিংগাপুর এয়ারলাইনসের অনলাইন চেক-ইনের মাধ্যমে বাসায় বসেই জানালার পাশে নিজের পছন্দমত সিট বেছে নিয়েছিলাম, যাতে বাতাস খেতে খেতে আশেপাশের রাস্তাঘাট দেখতে দেখতে যাওয়া যায় :P:P

আমার তিনদিনের অফিসিয়াল ট্রেনিং। ফ্লাইটের কারণে আমি পৌঁছলাম আগের দিন ভোরে। তাই সারাটা দিনই ছিল ফাঁকা। হোটেলে চেক-ইন করেই সকাল নয়টার মধ্যেই বের হয়ে গেলাম ঝটিকা ট্যুরে। এই এ্যাপ দিয়ে আগে থেকেই একটা রাফ ট্যুর প্ল্যান করে নিয়েছিলাম। এই এ্যাপে দর্শনীয় স্থানগুলোর ডিটেইলস, ম্যাপ, খোলা-বন্ধের সময়, টিকেটভাড়া ইত্যাদি থাকে, ফলে পরে আর অন্ধের মত হাতড়ে বেড়াতে হয় না।

সি একুরিয়ামঃ
৩৮ ডলারের টিকেট কেটে প্রথমেই ঢুকে পড়লাম সি একুরিয়ামে। লক্ষাধিক প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের এক একটি বিশালাকার স্বচ্ছ জলাধার। গোল্ডফিশের চাইতেও ক্ষুদ্র মাছ থেকে শুরু করে হ্যামারহেড শার্ক, সবই আছে এখানে। পুরোটা ঘুরে দেখতে কমপক্ষে তিনঘন্টা সময় লাগবে। পুরো জায়গাটি জুড়ে খুব স্লো মিউজিক বাজতে থাকে। সবমিলিয়ে চমৎকার এক পরিবেশ। চোখের সামনে এক সঙ্গে এত মাছ দেখাটাও একটা বিশাল ব্যপার। ছোট ছোট বাচ্চারা খুবই মজা পাচ্ছে এসব দেখে। পুরোটা ঘুরে দেখার পরে এক অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে। এর বিশালত্ব নিজের চোখে না দেখলে বোঝা যাবে না। চলুন কিছু ছবি দেখে আসা যাক।





















ইউনিভার্সেল স্টুডিও-সিঙ্গাপুরঃ







এর নাম বহু শুনেছি। যে-ই সিঙ্গাপুর যাই, সে-ই নাকি একবার ঘুরে আসে। সি একুরিয়াম শেষ করেই ৭৪ ডলারের টিকেট কেটে ঢুকে পড়লাম এই অসাধারণ থিম পার্কে, এই টিকেটে সমস্ত রাইডে চড়া যাবে। বিশাল বিশাল সব কার্টুন কারেক্টার সাজানো চারদিকে। মাদাগাস্কারের রাইডে চড়লাম প্রথমে। মাদাগাস্কার পার্ট ওয়ান পুরোটা রাডাইডের সাথে সাথে তাল মিলিয়ে রোবটিক কারেক্টার দিয়ে করা। রাইডের শুরুতেই বিশাল আকারের কাঠের বক্স আপনার উপর এসে পড়তে যাবে...কিন্তু ভয় নেই, পড়বে না। পুরো রাইডে আছে ছোট ছোট চমক। তারপর ঢুকলাম, শ্রেক-এর ক্যাসলে। সেখানে ছিল ফোর ডি মুভি। সেখানে মুভমেন্টের সাথে সাথে আপনার সিটটিও নড়তে থাকে। আবার গাধাটি থুতু দিলে আপনার গায়ে পানি ছিটকে আসে। সবচেয়ে মজার হল, থ্রিডি স্ক্রিনে অনেকগুলো মাকড়সা নিচে পড়ামাত্রই মনে হল পায়ের উপর কী যেন নড়ছে! B:-) B:-)




আরেকটি রাইডে চড়লাম যাতে পা ঝুলিয়ে বসতে হয়। আমার মুখোমুখি আরেকটি বাচ্চা মা'র সাথে বসেছিল। রাইডে আমার জান যায় যায়, রাইডের শেষে পিচ্চি হতাশভাবে বলে, "দ্যাটস ইট!":|




এরপরে ঢুকলাম 'মামি'র সেটে। বিশাল আকারের পিরামিড গেট দিয়ে আমরা ঢুকলাম। এই রাইড আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে ভয়াবহ রাইড। রাইডের শুরুতে আমার পাশে একটা বাচ্চা মেয়ে এসে বসলো, বয়স বড়জোর পাঁচ কি ছয় হবে। আমি বললাম, ডোন্ট গেট স্কেয়ার্ড, ইট উইল বি এ গ্রেট ফান। সে হেসে বলল, ইয়েস আই নো। আমার কোন ধারণাই ছিল না যে আসলে কী হতে যাচ্ছে। পুরো অন্ধকার আর ভয়াবহ সাউন্ড ইফেক্টের মধ্যে দিয়ে আঁকাবাঁকাভাবে প্রচন্ড স্পিডে চলছে কার্টটি...পুরো সময়টি আমি সমানে চিৎকার করে চললাম। রাইড শেষে আমি চোখ খুললাম, পাশের পিচ্চিটা আমারে কয়, "ইটস সো ফানি...":D:D:D:D 'মামি'র আরেকটা হালকা রাইড, 'ট্রেজার হান্টার'-এ গেলাম, সেটা তেমন আহামরি নয়। এর পরে ঢুকলাম, 'ট্রান্সফর্মার' এর একটি রাইডে। সেটা বেশ কয়েকটি থ্রিডি স্ক্রিনের সমন্বয়ে তৈরী। যেই কার্টে আমরা উঠলাম সেটার মুভমেন্ট আর স্ক্রিনের কল্যাণে আমার চিৎকার সেখানেও থামেনি। প্রাইম আর মেগাট্রনের সংঘর্ষগুলো এতটাই বাস্তব ছিল যে নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। একটা পর্যায়ে বিশাল হাইরাইজের উপর থেকে যখন পড়ছিলাম তখন স্পেশাল এয়ার ইফেক্ট আর ডিনামিক্সের কারণে পুরোটাই সত্যি মনে হচ্ছিল। রাইড শেষে আমি নিজেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না, কী দেখলাম! :-*:-* এরপর বাচ্চাদের একটি কার্টুন রাইডে চড়লাম, এতে অবশ্য ভয়ের কিছু নেই। এরপর দেখলাম লাইট, ক্যামেরা, এ্যাকশন নামের একটি কৃত্তিম স্টুডিও। এতে মুহূর্তের মধ্যেই পুরো সেটটিকে ঝড়ের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হল, বাতাস আর ঝড়ের তোড়ে সামনে বিশাল আকারের জানালা উড়ে গেল। সবার গায়ে পানির হালকা ঝাপটা এসে লাগতে লাগল। সামনের পানিতে কিভাবে যেন আগুন ধরে গেল। পুরোটা বাস্তবের যত কাছাকাছি করা যায় আর কী! আরও অনেকগুলো রাইড ছিল, যাতে চড়ার মত যথেষ্ট এনার্জি আমার সহকর্মীর না থাকায়, বিধায় ফেরত গেলাম! ফিরে যাবার সময় বউয়ের জন্য অস্কারের আদলে করা একখান এওয়ার্ড ট্রফি কিনলাম, যাতে লেখা "ওয়াল্ডর্স বেস্ট ওয়াইফ" ;):P



মুস্তাফা সেন্টারঃ
পরদিন ট্রেনিং শেষে সন্ধাবেলায় গেলাম মুস্তাফা সেন্টারে। এটা পুরাপুরি ঘুরে দেখতে সারাদিন লেগে যাবে। হেন জিনিষ নেই যা সেখানে পাওয়া যায় না। দামও তুলনামূলক। কাজেই টুকটাক কিছু গেরস্থালীর কেনাকাটা সেখান থেকে করলাম। হবু পিচ্চির জন্যও কিছু মোজা, ফিডার ইত্যাদি কিনলাম :!> :!> কিছু গোল্ডের অর্নামেন্টস কিনলাম। জানতাম এখানে গোল্ডের দাম কম। কিন্তু ট্যাক্স, মেকিং চার্জ সহ প্রায় প্রতি ভরিতে ৪৬০০০ টাকা পড়ল। এখানে টুরিস্টের জন্য জিএসটি রিফান্ড বলে একটি বিষয় আছে, আগে জানতাম না। কেনাকাটার পরে নির্দিষ্ট কাউন্টারে গেলে একটি এমাউন্ট ওরা রিফান্ডের জন্য ডকুমেন্ট দেবে। যা দেখিয়ে এয়ারপোর্টে ক্যাশ রিফান্ড পাওয়া যাবে। না জানার কারণে প্রায় ১৫০ সিঙ্গাপুরী ডলার ধরা খাইলাম।X((X(

চায়না টাউনঃ
আহামরি কিছু নয়। স্ট্রিট সাইড শপ। এখানকার পন্য মোটামুটি পুরো সিঙ্গাপুর জুড়েই পাওয়া যায়।

লিটল ইন্ডিয়াঃ
ঘুরে দেখার তেমন সময় পাইনি। যখন গিয়েছিলাম ততক্ষণে অধিকাংশ দোকনই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সিংহভাগ দোকান তামিল বা ভারতের দক্ষিণীদের মালিকানায়। এই এলাকায় অধিকাংশ দোকানের রজনীকান্তের ছবি দেখা গেল B-)। এটাও আহামরি কিছু নয়। একয়টি জায়গা ঘুরেই মোটামুটি দ্বিতীয় সন্ধ্যাটি শেষ করলাম।

মেরিনা বেঃ
ট্রেনিং শেষ করে সন্ধ্যায় বের হলাম সিটি ভিজিটে। প্রথমে গেলাম মেরিনা বে রিসোর্টে। এর ৫৭ তলা উপর থেকে পুরো সিঙ্গাপুর শহরটার চমৎকার একটা ভিউ পাওয়া যায়। এর টপ ফ্লোরে উঠতে সাধারণতঃ টিকেট কাটতে হয়। তবে রেস্টুরেন্টে খেলে কোন টিকেট লাগে না। এই ফ্লোরটা একটা নৌকার শেপে করা। আসলে পুরোটাই একটা বিশাল সুইমিংপুল। তবে সেখানে কেবল হোটেল গেস্টদের প্রবেশাধিকার আছে। আমরা আউটডোর লাউঞ্জে বসে সবচেয়ে কমদামের (১৫ ডলার) জুস এপল মোজিতো খাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় দেখলাম না। যাই হোক, বিল্ডিংটার ইন্টিরিয়র আর আর্কিটেকচারাল ডিজাইন সত্যিই অসাধারণ। এই ছাদ থেকেই আমরা মারলায়ন পার্কের সামনের লেকের উপর লেজার লাইট শো দেখলাম। এই শো সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে একঘন্টা পরপর হয়। মারলায়ন পার্ক থেকে এটা আরও সুন্দর দেখা যায়। চাইলে টিকেট কেটে লেকের উপর বোটে ভেসে ভেসেও শো'টি উপভোগ করা যেতে পারে। অবশ্য আমরা দুজনেই স্ত্রী-বিহীন হওয়ায় আর তেমন আগ্রহ হয় নাই...:((:(( মেরিনা বে থেকে সিঙ্গাপুরের প্যানোরামাঃ



সিংগাপুর ফ্লায়ারঃ


মানে চরকী আর কী! তবে বিশেষত্ব হল এর আকার এবং উচ্চতা। এটিকে অবশ্য বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ফ্লায়ার বলা হয়। টিকেট লাগলো ৩৩ ডলার, তবে সিংগাপুর এয়ারলাইন্সের বোর্ডিং পাস বা টিকেট দেখাতে পারলে ২০% ডিসকাউন্ট পাওয়া যাবে। সাথে না থাকায় পুরাই লস খাইলাম/:)। পুরো ফ্লায়ারটা আধাঘন্টায় পূর্ণচক্র সম্পন্ন করে। কেবিনগুলো অনেক বড়। একসঙ্গে দশজন উঠতে পারে। আমি উঠতে গিয়ে দেখি, আমাদের পিছনে বিশাল সাইজের ভয়ঙ্কর মুখভঙ্গী নিয়ে কতগুলা তামিল/ব্ল্যাক দাঁড়ানো। শূণ্যে আধাঘন্টা এদের সাথে কাটানোর কোন ইচ্ছাই আমার নাই। কিছুক্ষণ ওয়েট করে একটি কাপলের সাথে উঠলাম। তারা উঠামাত্রই ক্যানন ডিএসএলআর বের করে ধুমধাম ছবি তোলা শুরু করল। হেলে, কাঁত হয়ে, বাঁকা হয়ে...:-* ফ্লায়ার থেকে তোলা মেরিনা বে'র ছবিঃ



মারলায়ন পার্কঃ


এটি হচ্ছে সিঙ্গাপুরের আইকন। এখানে ঢুকতে কোন টিকেট লাগে না :)। এখানে দাঁড়ালে বিশাল লেকের অপরপ্রান্তে মেরিনা বে-সিংগাপুর ফ্লায়ার-সাইন্স মিউজিয়ামটা একসঙ্গে দেখা যায়। রাতের আধারে আলো ঝলমলে স্থাপনাগুলোর প্রতিচ্ছবি পানিতে পড়ে এক চমৎকার আবহ তৈরী করে। যতক্ষন ইচ্ছে থাকতে পারেন এখানে। এটির অবস্থান ফুলারটন হোটেলের ঠিক বিপরীতে। এই পার্কে বেশ কয়েকটি রেস্তোঁরাও আছে, স্টারবাক্সও পাবেন। আমি রাতে ও দিনে দুবার গিয়েছিলাম দু'ভাবে দেখার জন্য:D। আজকের মত শহর-দর্শন শেষ করে হোটেলে ফিরলাম।


মারলায়ন পার্ক থেকে প্যানোরামাঃ



নাইট সাফারিঃ


ট্রেনিং শেষে পরের সন্ধ্যায় গেলাম নাইট সাফারীতে। সাফারী পার্ক সম্বন্ধে আমার জ্ঞান ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক পর্যন্ত। নাইট সাফরী পার্কটা সিঙ্গাপুর জু'র একটা অংশ বলে মনে হল। ৩৮ ডলারের টিকেট কেটে লাইন ধরে উঠে পড়লাম চারদিক খোলা একটি ট্রেনে। চারদিক সম্পূর্ণ নিস্তব্ধ। হালকা মৃদু আলোয় বাঘ-সিংহ থেকে শুরু করে বাইসন সবই প্রায় দেখলাম। পুরো সময়টা জুড়ে মিষ্টিকন্ঠে একটি মেয়ে বর্ণনা দিচ্ছিল...They may not have voice like us, but they have the same heart as we have. এখানে পায়ে হাঁটার পথও আছে। অনেককেই দেখলাম স্ট্রলারে পিচ্চি পিচ্চি বাচ্চা নিয়ে সাফারী পার্কে হেঁটে বেড়াচ্ছে :-* টিকেটের সঙ্গে একটা ম্যাপও দিয়ে দেয়, যাতে প্রাণীগুলোর অবস্থান উল্লেখ করা থাকে। অন্ধকারে কিভাবে এটা দেখবো ঠিক বুঝলাম না :-/ এক পিচ্চি আমাদের পিছে বসে ওর মাকে বার বার জিজ্ঞেস করছিল "মামি, হোয়াট ইজ দিস, হোয়াট ইজ দ্যাট"। মা'ও খুব আস্তে আস্তে বুঝিয়ে দিচ্ছিল।



খাবারঃ
স্থানীয় খাবার বা সি-ফুড ট্রাই করে দেখার তেমন আগ্রহ বা সময় কোনটাই আমার ছিল না। তবে মুস্তাফা সেন্টারের আশেপাশে অনেক ভারতীয় রেস্তোঁরা আছে যেখানে দেশীয় ধাঁচের খাবার পেতে পারেন। তবে সবকিছুরই দাম আকাশছোঁয়া। আধালিটার পানির দাম প্রায় ১০০ টাকা। আমার ভরসা ছিল ম্যাডোনাল্টস বা স্টারবাক্স।

আরও কিছু বিষয়ঃ
এখানে চাইলেই ট্যাক্সি থামানো যায় না। প্রতিটি শপিং মলের নিচে ট্যাক্সি স্ট্যান্ড আছে। সেখানে ৩০-৪৫ মিনিট লাইনে দাঁড়ানোর পরে আপনি ট্যাক্সিতে উঠতে পারবেন। প্রতিটি ট্যাক্সিতে মাস্টার/ভিসা/এমেক্স কার্ড পাঞ্চের ব্যবস্থা আছে। তবে সারচার্জ সংক্রান্ত জটিলতায় ট্যাক্সিতে ভিসাকার্ড ১লা মে ২০১৪ থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। মোবাইল ফোনে দেশে কথা বলতে নাম্বারের আগে ০১৯ যোগ করে কল করলে, (মানে ০১৯৮৮০১৭৩০******) - কথা বলার খরচ অনেকখানি কমে যায় :-B। এছাড়া ভাইবার তো আছেই। এখানকার ভারতীয়রা অবশ্য একটু দুষ্টু। মানি এক্সচেঞ্জে আমার ৫০ ইউএস ডলার মেরে দিয়েছিল। ৫০ ডলার ভাঙ্গাতে গিয়ে ১০০ ডলারের নোট দিয়ে ৫০ ডলার ফেরত নিতে ভুলে গিয়েছিলাম। ঘন্টাখানেক পরেই ফেরত চাইবার সময় ব্যাটা পুরা পল্টি খাইলো। এখানকার ট্যাক্সি চালকরা সবাই বয়ষ্ক এবং শিক্ষিত। কারণ, এখানে বয়সের কারণে কাজ না করার সুযোগ নেই। আর লিভিং কস্টও হাই। অপরদিকে, ট্যাক্সি চালানো তুলনামূলক সহজ, নিয়মতান্ত্রিক এবং আয়ও ভালো। তাই অধিকাংশ প্রবীণ নাগরিকরা সাধারণতঃ এটাকেই প্রেফার করে; এদের অধিকাংশই যুবা বয়সে বেশভাল চাকরী করতো। হয়তো সিঙ্গাপুর তরুনদের জায়গা বলে এখানে কর্মহীন বুড়োদের কোন স্থান নেই /:)/:) এখানে প্রতিটি জায়গায় বাবা-মা'র সাথে শিশুদের ঘুরে বেড়াতে দেখলাম। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ (অবশ্যই পয়সাওয়ালা) আসে এখানে বেড়াতে। একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম, পৃথিবীর সব শিশুই আসলে একই রকম। তারা সবাই একইভাবে আবদার করে, একইভাবে রাগ করে, একই কারণে খুশি হয়। তারা বাস করে এক বৈষম্যহীন-আদর্শ পৃথিবীতে। আমরা তাদের টেনে সিয়ে আসি আমাদের শ্রেনী-বিভাজিত নোংরা জগতে! সব দেখতে দেখতে মনে হল, যদি আমার কোন দিন সাধ্যে কুলায়, অবশ্যই আমার পিচ্চিদের নিয়ে এখানে আসবো। তাদের আনন্দ-আবদার চোখের সামনে দেখতে পারাও নিশ্চই সিঙ্গাপুর ভ্রমনের চাইতে কোন অংশে কম হবে না :):)



ছবিস্বত্বঃ লেখক
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০১৪ সকাল ১১:১৭
২৫টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পার্বত্য চট্টগ্রাম- মিয়ানমার-মিজোরাম ও মনিপুর রাজ্য মিলে খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনের চক্রান্ত চলছে?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০১


মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা ভ্রমণ করেছেন । সেখানে তিনি ইন্ডিয়ানা তে বক্তব্য প্রদান কালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী chin-kuki-zo দের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনে আমেরিকার সাহায্য চেয়েছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×