দ্যুচো অঙ্কিত ম্যাডোনা অ্যান্ড চাইল্ড কাঠের উপর টেম্পেরা ও স্বর্ণ ১২৮৪ সিয়েনা । টেম্পেরা হলো একটি স্থায়ী ও দ্রুত শুকিয়ে যায় এমন চিত্র মাধ্যম যা বিভিন্ন রঞ্জক পদার্থের সাথে পানিতে দ্রবণীয় বাইন্ডার সাধারণত ডিমের কুসুম বা এই জাতীয় আঠাল বস্তু,এর মিশ্রনে তৈরি হয়ে থাকে। টেম্পেরা বলতে এই মাধ্যমে আঁকা চিত্রকর্মও বোঝায়। এই মাধ্যমে আঁকা চিত্রকর্ম বেশ দীর্ঘস্থায়ী হয় যার উদাহরণস্বরুপ ১ম শতাব্দিতে অঙ্কিত চিত্র এখনো বিদ্যমান। এগ টেম্পেরা চিত্রকলার ইতিহাসে একটি প্রধান পদ্ধতি ছিল। ১৫০০ খ্রিস্টাব্দে তেল রঙের আবিস্কারের পর এর ব্যবহার কমে যায়। যুক্তরাষ্ট্রে বহুলব্যবহৃত একটি মাধ্যম, পোস্টার পেইন্টকে টেম্পেরা শ্রেণীর বলে বিবেচনা করা হয়, যদিও পোস্টার পেইন্টের ক্ষেত্রে ভিন্ন বাইন্ডার এবং রঞ্জক পদার্থ ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
একটি ১৩৬৭ এ নিকোলো সেমাইটকোলো এর আঁকা কাঠের ওপর টেম্পেরা চিত্র,
প্রাচীন মিশরীয় সারকোফেগাস বা ভাস্কর্যশিল্পঅলংকৃত শিলালিপিসমন্বিত প্রস্তর শবাধার এর অলঙ্করণে টেম্পেরা চিত্রের নিদর্শন পাওয়া গেছে। অনেক ফায়ুম মমি প্রতিকৃতিতে টেম্পেরার ব্যবহার আছে। প্রাচীন এবং মধ্যযুগের গোড়ার দিকে ভারতের বিভিন্ন গুহা এবং শিলা কেটে তৈরি মন্দিরে টেম্পেরার সাথে সংশ্লিষ্ট একটি কৌশলের ব্যবহার পাওয়া গেছে। ৪র্থ এবং ১০ম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ভারতের বাঘ গুহায় এবং ৭ম শতাব্দীতে রাবণ ছায়া গুহায় টেম্পেরার সাহায্যে উন্নত মানের কিছু শিল্প তৈরি করা হয়েছে।
Christ Enthroned with Saints Sebastian, লিও, আলেকজান্ডার, পেরিগ্রিন, ফিলিপ, রাফিয়ানিয়ানস, জাস্তা, কনক্রোডিয়াস এবং ডিসেন্ত্রাস, বের্নার্ডো ডাডি, ১৪শ শতাব্দী
টেম্পেরা ঐতিহ্যগতভাবে হস্ত-চূর্ণ শুষ্ক রঞ্জক এর সাথে আঠাল কোনো মাধ্যম যেমন, ডিম, মধু, দুধ,ছানার আকারে, পানি এবং বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক আঠার মিশ্রনে নির্মিত হয়। টেম্পেরা চিত্রকর্মের শুরুতে একটি প্যালেট, থালা বা বাটিতে কিছু পরিমান চূর্ণীকৃত রঞ্জক পদার্থ নিয়ে সমপরিমান বাইন্ডার মিশিয়ে রং তৈরি করা হয়। কিছু রঞ্জকের প্রকৃতি অনুসারে বাইন্ডারের পরিমান কম বা বেশি হয়ে থাকে। কয়েক ফোঁটা বিশুদ্ধ পানি যোগ করা হয়, এরপর অল্প অল্প করে বাইন্ডার বা ডিমের মিশ্রন যোগ করা হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত না মিশ্রনটি কাঙ্ক্ষিত স্বচ্ছতা পায়। ডিমের মিশ্রণ যতো বেশি দেওয়া হয়, রং ততো বেশি স্বচ্ছ হয়।
দ্য বার্থ অব ভেনাস, সান্দ্রো বত্তিসেলি, ফ্লোরেন্স, ক্যানভাসে টেম্পেরা, আনুমানিক ১৪৮৬
টেম্পেরার সবচেয়ে প্রচলিত মাধ্যম হলো এগ টেম্পেরা। এর জন্য বেশিরভাগ সময় ডিমের কুসুম ব্যবহার করা হয়। ডিমের সাদা অংশ এবং কুসুমের ঝিল্লি বাদ দেয়া হয়। ডিমের কুসুম কখনোই রঞ্জকের সাথে সরাসরি দেয়া হয়না কেননা এটি প্রায় সাথে সাথেই শুকিয়ে যায় এবং শুকিয়ে ফেটে যায়। তাই সবসময় বিভিন্ন অনুপাতে কিছু দ্রব যোগ করা হয় ভিনেগারের একটি প্রণালী আছে যেখানে ১:১ অনুপাতে ডিমের কুসুম ও ভিনেগার মেশানো হয়। আরেকটি প্রনালীতে ১:২ অনুপাতে ওয়াইট ওয়াইন ও কুসুম মেশানো হয়।
রাফায়েল, কাঠের উপর টেম্পেরা এবং স্বর্ণ, ১৫০৩–১৫০৫
সূত্রঃWondermondo.com। ২০১০-০৬-০৪। সংগৃহীত ২০১২-০৭-২৯।
Wondermondo.com। ২০১০-০৫-২৩। সংগৃহীত ২০১২-০৭-২৯।
এছাড়া ছবি ইন্টারনেট সংগ্রহ
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৩:৩১