বুঝতে পারছিলাম আমি হয়তো যথেষ্ট প্রগতিশীল নই যখন দেখলাম আমি কান্না আটকে রাখতে পারছি না অফিসারদের আর তাদের পরিবার পরিজনদের জন্য । ফেসবুক নিউজ ফিডে তখন বড় ফ্যাশন - অফিসাররা কত বড় শোষক সেটা আবিষ্কার করা। কিন্তু আমি তো কান্না আটকে রাখতে পারছি না আমার ভাইদের জন্য, তাদের পরিবারের জন্য । এই নৃশংসতা কোনো মানুষের সাথে কোনো মানুষ করতে পারে না । ঐ সময়ের প্রতিটা সেকেন্ড ঐ পরিবারগুলো কিভাবে পার করছিলো - ভাবতেই এখনো গা শিউরে ওঠে।
এই জাতি এই ক্ষত কয়দিনে কাটাবে জানি না । এভাবে ফেসবুকে স্টাটাস দিয়েছেন জনপ্রিয় নাট্যকার ও পরিচালক মোস্তফা সরওয়ার ফারুকি। নৃশংসতার সে ভিডিও দেখুনঃ
২৫ শে ফেব্রুয়ারি হায়েনার হাতে নির্মম ভাবে শহীদ হয় ৫৭ জন মেধাবী সেনা কর্মকর্তাঃ আজ থেকে ঠিক ৫ বছর আগের ঘটনা। দিনটি ছিলো ২০০৯ সালের ২৫ শে ফেব্রুয়ারি।এই দিনের নৃশংসতা জাতির জন্য কলঙ্কিত এক ইতিহাস।মাত্র দু’দিনের নারকীয় নৃশংসতায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা সহ একসঙ্গে ৭৫ জনকে হত্যাযজ্ঞের বীভৎস ইতিহাস বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন। ১০০ এর ও বেশি সেনা পরিবার কিছু বি ডি আর এর পৈশাচিক আচরণে ধ্বংসের মুখে পতিত হয়। সেনা পরিবার শুধু নয় বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের অশ্রুতেও সেদিন বাংলাদেশের আকাশ বাতাস ভারি উঠেছিলো।আমাদের সেনা বাহিনী আমাদের গর্ব।২০১০ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশের প্রায় ১০,৮৫৫ সৈন্য সারা বিশ্বে জাতিসংঘ শান্তি-রক্ষী বাহিনীতে কর্মরত আছে, যা পৃথিবীর অন্য যে-কোন দেশ হতে বেশি। আমাদের বিডিয়াররা ছিলো প্রচুর দেশপ্রেমিক । ২০০১ সালের কথা মনে কি পড়ে? ভারতীয় কুকুর বাহিনী বি এস এফ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে যেতে চেয়েছিলো কিন্তু সেদিন বাংলার বাঘ বীর বি ডিয়ার রা তাদের কুকুরের মতো তাড়িয়ে ছিলো। সেদিন ৩ বিডিআর সদস্য নিজের জীবন দিয়ে দেশের মাটি রক্ষা করেন। অপরদিকে ৪০০ টি ভারতীয় কুকুর জাহান্নামে যাওয়ার পর এক পর্যায়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ১৯৭১ থেকে ২০০৮ এর ফেব্রুয়ারির ২৪ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশে অনেকদিন সামরিক শাসন থাকার পরও ও ৯০ এ স্বৈরাচারের পরও যা কখনো হয়নি ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর তা কি করে হলও আমাদের বুঝে আসেনা। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠনের মাত্র দেড় মাসের মাথায় একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীতে এমন নারকীয় ঘটনা আমাদের মনে প্রচুর প্রশ্নের সৃষ্টি করে। এ ঘটনা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও আলোচনার ঝড় তোলে। মেজর জেনারেল, ব্রিগেডিয়ার কর্নেল, লে. কর্নেল, মেজরসহ ৫৭ জন মেধাবী সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার লোমহর্ষক সেই কাহিনী আজও আমাদেরকে অশ্রুসিক্ত করে। আজও বিদ্রোহের সেই দুঃসহ স্মৃতি আমাদের শিউরে তুলে।
আমার ভাই এর রক্তে রাঙ্গানো ২৫ শে ফেব্রুয়ারি। আমি কী ভুলিতে পারি? খুনিদের রেহায় নেই। ঐ দেশদ্রোহী নরপিচাশদের বিচার এক দিন এই বাংলার মাটিতেই হবে। ইনশাআল্লাহ।