মানুষ মানুষের জন্য
জীবন জীবনের জন্য
একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারেনা?
আমরা অনেকেই অন্যের পেছনে লেগে থাকি। সাধারণত যার পেছনে লেগে থাকি, হতে পারে তাকে ব্যক্তিগত ভাবে অপছন্দ করার কারণে অথবা তার প্রতি মনে প্রচুর হিংসা জন্ম নেওয়ার কারণে যাই হোকনা কেন যদি প্রশ্ন করা হয় অন্যের পেছনে লেগে কি লাভ? তারা মুখে কিছু না বললেও মনে মনে উত্তর দিবে অন্যের পেছনে লাগার মধ্যে একটা পৈশাচিক আনন্দ আছে ।
সে পৈশাচিক সাময়িক আনন্দ উপভোগ করার জন্যই এই ঘৃণ্য কাজ গুলো করে থাকে কিছু ব্যক্তিত্ব ও আদর্শহীন মানুষ। এরা এতোটাই অসভ্য যে সুযোগের অপেক্ষা করতে থাকে কিভাবে যাকে হিংসা করে তার পেছনে লেগে তাকে হেয় করা যায়? কিভাবে তাকে অপমানিত করা যায়।
ব্লগের এক্সাম্পল দেই । অনেক ব্লগার আছে যারা হিট সীকার । নিজে হিট না হয়ে অন্য কেউ হিট হলে নিজের মনের ভেতরের হিংসা এতটাই জঘন্য ভাবে জ্বলতে থাকে যে আগুনে নিজে জ্বলার পাশাপাশি যাকে হিংসা করে তার ক্ষতি করার জন্য উঠে পড়ে লাগে।
এ হিংসুকদের খুব সহজে চেনা যায়। ওরা বিভিন্ন মাল্টি থেকে যারা ব্লগ হিট হচ্ছে তাকে ট্যাগ দিবে । ব্যক্তি আক্রমণ করবে। অন্য মাল্টি থেকে পোস্টের প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে উল্টা পাল্টা মন্তব্য করবে। যার পোস্ট হিট হচ্ছে তার পোস্টের উপর ভিত্তি করে কাউন্টার পোস্ট দিয়ে ভিত্তিহীন ট্যাগ দিয়ে উক্ত ব্লগারকে আরো যারা হিংসা করে তাদের সুযোগ করে দিবে সে ব্লগারকে অপমানিত করে মন্তব্য করার । এবং সবশেষে সেই পোস্টে সব হিংসুক একত্রিত হয়ে খোঁচা মেরে মন্তব্য করবে । এভাবেই ব্লগে সাধারণত একজন হিংসুক ব্লগার নিজের হিংসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে থাকে। অথচ বুঝেনা সাময়িক পৈশাচিক আনন্দের জন্য হিংসার নির্মম বহিঃপ্রকাশে উক্ত ব্লগার কষ্ট পেয়ে হয়তো নীরবে কাঁদছে।
কি লাভ একজন মানুষকে কষ্ট দিয়ে? একজন মানুষকে অপমান করার কি মজা আছে কে জানে? অবশ্য হিংসুকরা সাময়িক আনন্দ পেলেও লাভের লাভ কিছু হয়না। দেখা যায় যে ব্লগারকে হিংসা করছে সে ব্লগারের পরবর্তী পোস্টটিও অনেক হিট হচ্ছে।
আবার হিংসায় পোড়তে থাকে সেই হিংসুক কিন্তু এবার উক্ত ব্লগারকে ট্যাগ দেওয়ার কোন সুযোগ মিলেনা। আর সেই দুঃখে হিংসুক ব্যক্তিটি দুঃখে নিজের চুল নিজে তুলে।
সাধারণ ব্লগাররা এদের খুব ভালোভাবেই চিনে। এবং তাদের এড়িয়ে চলে। অনেকেই বুঝে কিন্তু চুপ থেকে মনে মনে এই নিন্দনীয় হিংসুক অসভ্য ও পরনিন্দাকারীদের দিকে ঘৃণা করে।
এদের চেনার সহজ উপায় হলো এদের একটা বড় সিন্ডিকেট থাকে। ব্লগের প্রতিষ্ঠিত জনপ্রিয় নিকগুলোর সাথে খাতির করে বেড়ায়। তাদের তেলাতে থাকে। তেলের পরিমাণ এতই বেশি যে অন্যরা খুব সহজেই অনুমান করে তার পারসোনালিটি লেভেল কতো নিম্ন।
সাধারণত সৎ ও ভালোমানুষ গুলো যেখানে যান সেখানে সম্মানিত হয়ে থাকেন। তাদের সততা এবং ভালো মনুষ্যত্ব বোধের জন্যই তারা সম্মানিত হয়ে থাকেন।
অপরদিকে ব্যক্তিত্বহীন , অন্যের পেছনে লেগে পরনিন্দাকারী , ঘৃণ্য রুচিহীন নোংরা মানসিকতার অধিকারী যেখানে যায় সেখানেই বর্জনীয় হয়।
হিংসা ইসলামে নিষিদ্ধ । অন্যের সমালোচনা করার আগে আমরা কেন ভাবিনা আমার নিজের বগলটা কতো দুর্গন্ধময়।
হিংসুক বেশিদিন টিকতে পারেনা। শেষ পর্যন্ত হিংসুকের করুণ পরিণতি হয় । হিংসুক ও পরনিন্দা পরচর্চা কারীকে সবাই এড়িয়ে চলে এবং নৈতিক ভাবে বর্জন করে।
ব্লগের হিংসুক ও নিন্দুক এবং হিংসার কারণেই গালি দিয়ে ট্যাগ দিয়ে ব্যক্তি আক্রমণকারীদের নৈতিক ভাবে বর্জন করতে হবে। নাহলে এরা ভালো ও ভদ্র ব্লগারদের সারাজীবন কষ্ট দিবে। অপমানিত করবে ।
যারা প্রকৃত মানুষ তারা প্রতিটি কাজ করার আগে অনেকবার ভাবে । আমি যে কাজটি করছি সেটি মানবিক নাকি অমানবিক ? আমার এই কাজের মাধ্যমে কেউ কষ্ট পাবে কিনা ? কারো ক্ষতি হবে কিনা? এবং এই কাজ আমার ধর্ম বা আদর্শ সমর্থন করে কিনা ? কারণ সে মানবিক গুণ সমৃদ্ধ একজন মানুষ ।
বিশেষ করে প্রকৃত মুসলমানরা এ নোংরামি থেকে বেঁচে থাকে। কারণ তারা যখন নামাজ পড়ে সে নামজের সুরা ফাতেহায় পড়েন " ইহ দিনাস সিরাতাল মুসতাকিমা সিরাতাল লাজিনা আন আমতা আলাইহীম গাইরুল মাগদুবে আলাইহিম ওয়ালাদুয়াল্লিন" অর্থঃ হে আল্লাহ আমাদেরকে সরল পথ দেখাও সে সমস্তদের পথ যাদেরকে আপনি হেদায়েত দান করেছেন , নেয়ামত দান করেছেন তাদের পথ নয় যাদের উপর আপনার গজব নাজিল হয়েছে।
একজন প্রকৃত মুমিন কখনো আল্লাহর আদেশ অমান্য করে অন্যের পেছনে লাগেনা। অন্যকে হিংসা করেনা। অন্যের নামে গীবত করেনা। অন্যের নামে কুৎসা রটাবেনা।
আর ট্যাগবাজ , গালিবাজ , ব্যক্তি আক্রমণকারী সেই হিংসুক এর কোন মনুষ্যত্ব নেই। তারা বিবেক ও ব্যক্তিত্বহীন অমানুষ । তারা কোন কাজ করার আগে কখনো ভাববেনা আমি যে কাজটি করছি সেটি মানবিক নাকি অমানবিক ? আমার এই কাজের মাধ্যমে কেউ কষ্ট পাবে কিনা ? কারো ক্ষতি হবে কিনা? এবং এই কাজ আমার ধর্ম বা আদর্শ সমর্থন করে কিনা ? কারণ সে একজন অমানুষ ।
এবং এখানে একজন অমানুষ ও মানুষের মধ্যে পার্থক্য নির্ধারিত হয়ে থাকে। অমানুষ গুলো কি জানে তারা অন্যের যে ক্ষতি করছে তার চেয়েও বড় ক্ষতি আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের জন্য নির্ধারিত হয়ে আছে।
মানুষের পেছনে লাগা একটি নিন্দনীয় ও অমানবিক কাজ আসুন এই অভ্যাসটা বর্জন করি ।
চারদিকে শুধু বিবেকহীন অমানুষ আর অমানুষ । মানুষ আছে কতজন? আমার এই পোস্টটি সে সব ব্লগারদের উৎসর্গ করা হলো যারা হাজারো অমানুষের ভিড়ে নিজেকে মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে।
জয় মানবতার। জয় মনুষ্যত্বের । জয় মানবিক মূল্যবোধের।