somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নির্বাক স্বপ্ন
চিন্তা প্রসবের বেদনা মগজব্যাপী স্থায়ী হওয়ার আগেই কলম ধরতে হতো। মাথার মধ্যে জমে থাকা ভয়ংকর সব চিন্তাগুলোকে পরিণতি দেয়া মত শব্দ কোনো কালেই ছিল না।তারপরও সেই সব গল্প লেখতেই হতো,যেগুলো লেখার পর শান্তিতে ঘুমানো যায়।

মুরাকামি ও গাণিতিক নয়নতারা

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

উচ্চতর মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনায় 'কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্ট' নামে একটি কোর্স করানো হয়।এই কোর্সে কনফ্লিক্ট রেজুলেশন করার পাঁচটি স্টাইলের কথা বলা হয়েছে - Collaborating (সহযোগিতা), Compromising (আপস), Avoiding (এড়িয়ে চলা), Accommodating (মানিয়ে নেওয়া), Competing (প্রতিযোগিতা)। লক্ষ্য করে দেখবেন, বৈদিক লিটারেচার -কৌটিল্য অর্থশাস্ত্রের 'সাম- দাম- ভেদ- দণ্ড' কনসেপ্টের সাথে এই আধুনিক ম্যানেজমেন্ট স্টাইলগুলো কে চমৎকার ভাবে এলাইন করতে পারবেন।

আপনার যদি রিসার্চ সেক্টরে হাতেখড়ি থাকে,রিসার্চ মেথোডলিজ ডেভলাপমেন্ট শেখার সুযোগ পেয়ে থাকেন, তবে খেয়াল করবেন আপনি খুব সাধারণ কোন বিষয় নিয়েও খুব পদ্ধতিগত ভাবে চিন্তা করছেন।আপনি একটা কনসেপ্টের সাথে আরেকটা কে মিলাচ্ছেন।আপনার মধ্যে একটা এন্যালিটিক্যাল এপ্রোচ ডেভলাপ হয়েছে।এটা আশীর্বাদ না অভিশাপ সেই আলাপে পরে যাচ্ছি। একটা উদাহরণ দিয়ে বুঝাই - মনে করেন আপনার কোন ঘনিষ্টজন আপনাকে আক্রমন করে আঘাত দিয়ে বক্রভাবে কোন কথা বলেছে।খুব স্বাভাবিক ভাবে আপনাকে প্রতিবাদ করতে হতো,এটা তো হিউম্যান ইনস্টিং।কিন্তু আপনি সাথে সাথে কোন জবাব দিতে পারছেন না।অপরদিকের মানুষের কথা যতোই 'অন্যায' হোক না কেন।আপনি মোটেই মেরুদন্ডহীন -কাপুরুষ নন।তবু আপনি জবাব দিতে পারছেন না ।কারণ আপনি এনালিটিক্যাল ওয়েতে চিন্তা করছেন - আপানাকে এইভাবে আক্রমণ করার পেছনের কারণ টা কী।আপনি অতিদ্রুত এটার কার্যকরণ খুঁজে বের করতে পারেন।পাতাল খুঁড়ে বের করে ফেলেন যে - এই সবের জন্য হয়তো আপনি-ই দায়ী।

নিজের একটা উদাহরণ দেই - করোনা কালীন লকডাউনের সময় আমি এক মেয়েকে ভালোবাসতাম।এখনো বাসি (কিছু বিষয়ের পাস্ট টেন্স হয় না )।তখন সেই মেয়ে এসএসসি দিয়েছিল।সময়ের আবর্তনে সে এখন মেডিকেল কলেজে পড়ে। খুব স্বাভাবিক প্রেমিকসত্তা থেকে আমার ওকে প্রেম নিবেদন করতে হতো।ফলাফল যা ই হোক না কেন।সাটেল ওয়েতে - গল্প কবিতা লেখে ,এমন কি চিঠি লেখেও নিজের মনের ভাব প্রকাশ করি নি এমন নয়।কিন্তু বেপরোয়া ভাবে যে প্রেমের প্রস্তাব দিবো সেটা কখনোই পারি নি।জানি না কেন, খুব সম্ভবত রাগে অভিমানে।কিসের অভিমান কেন এতো অভিমান আমার জানা নেই।বা চাইনি।সাহসে কুলায় নি হয়তো।বারবার ভেবেছি - আমার কোন কিছুই যে ও গ্রাহ্য করে না - তার মানে আমার চেয়ে সুন্দর করে লেখা চিঠি পেয়ে সে অভ্যস্থ।আসলেই কিন্তু তাই।এই শহরে ওর গুণগ্রাহীর অভাব নেই।একটু যদি কাঠামোগত ভাবে চিন্তা করার চেয়ে বের হতে পারতাম তবে হয়তো কিছু না কিছু উত্তর পেতাম। মন ভাঙ্গতো তবুও আফসোস টা কমতো।

ফিন্স্যাসিয়াল ম্যানেজমেটে ক্যাপিট্যাল বাজেটিং/ মূলধন প্রাক্কালন- ব্যয় করার জন্য খুব বেসিক একটা ফর্মূলা হলো - আইআরআর (IRR)/ ইন্টারনাল রেট অফ রিটার্ন।এখানে নিদিষ্ট একটা পার্সেন্টজ ধরে প্রজেক্টের ফিজিবিলিট বের করা হয়।কাঙ্খিত ফলাফল না পাওয়া পর্যন্ত ট্রায়াল এন্ড ইরর মেথডে হিসেব করে যেতে হয়।আমি যদি দাবিও করি- আমি খুব মেথডলজিক্যালি চিন্তা করি তবেও কী আমার প্রেম নিবেদন করা উচিত ছিল না? এখানেই মজাটা।আমাদের অর্থশাস্ত্র যত ই আগাক না কেন মার্ক্স থেকে শুরু করে টমাস পিকেটি , অমর্ত্য সেন থেকে শুরু করে হাল আমলের অভিজিৎ ব্যানার্জী কেউ ই আবেগ কে অনুভূতি কে সংখ্যা দিতে পারেন নি।অভিমান কে তারা কখনো কেউ আকার দিতে পারেন নি।

আর্যভট্ট থেকে নিউটন-লিবনিজ কেউ ই সংখ্যা দিয়ে কোন দিন বের করতে পারবে না সকালে শিউল কুড়ানো,অনাদরের নয়নতারা, বেইলের রোডের নিঃসঙ্গতার সময়ে কাউ কে খুব করে চাওয়ার কে সংখ্যা দিয়ে বুঝাতে।মহাজনেরা কোন দিন বের করতে পারবে না মন কেমনের রাতের আর ও আই (ROI - Return on Investment) কোনভাবে বের করা যায় না।রিসার্চ মেথডলজির কোন থিওরিক্যাল ফ্রেমওয়ার্ক কিংবা কনসেপ্টচুয়াল ফ্রেমওয়ার্ক কোনটার মধ্যেই আকু পাকু কে ফেলা যায় না।সব হাইপথেসিস ই নালিফাইড হয়ে যায়।এসপিএসএস এর কোন টেস্ট ই এর এই বিষন্নতার কাঙ্খিত ফলাফল দিতে পারে না।

কদিন আগে তপোব্রত দাসের অনুবাদে হারুকি মুরাকামি (সান) এর স্পুটনিক সুইটহার্ট উপন্যাস টা পড়লাম।সেখানে আছে - ‘আমি সুমিরেকে অন্য সকলের থেকে অনেক বেশি ভালোবাসতাম ও এই জগতের অন্য সবকিছুর থেকে তাকে অনেক বেশি করে চাইতাম। আর সেইসব অনুভূতিগুলোকে আমি কিছুতেই দূরে সরিয়ে রাখতে পারিনি। কারণ এমন কিছু ছিল না যা তাদের জায়গা নিতে পারে।
আমি স্বপ্ন দেখতাম যে হয়তো কোনোদিন একটা বিশাল রূপান্তর ঘটবে। তা সত্যি হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হলেও স্বপ্ন তো আমি দেখতেই পারি, তাই না? কিন্তু আমি জানতাম যে তা কোনোদিনই সত্যি হবে না।’ (কাল্পনিক)
পুনশ্চ-
‘সব চিঠি সব কল্পনা জুড়ে
রং মিশে যায় রুক্ষ দুপুরে
সেই রং দিয়ে তোমাকেই আঁকি
আর কিভাবে বোঝাই ভালোবাসি!’

সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১:২৪
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৭.৬২ MM গুলি উদ্ধার। ব্রিগ. সাখাওয়াত ঠিকই বলেছিলেন।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ ভোর ৪:৫৫


*২০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ*

রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ২০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।

উত্তরা পশ্চিম থানা সূত্রে জানা যায়, আজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কামাল আতাতুর্ক: ইসলামী তাহযীব-তামাদ্দুন ও স্বকীয়তা ধ্বংসকারী এক বিতর্কিত শাসক

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:৪২

কামাল আতাতুর্ক: ইসলামী তাহযীব-তামাদ্দুন ও স্বকীয়তা ধ্বংসকারী এক বিতর্কিত শাসক

তুরষ্কের বিখ্যাত আয়া সোফিয়া মসজিদের ছবিটি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক (১৮৮১-১৯৩৮) তুরস্কের ইতিহাসে এক প্রভাবশালী ও বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব। তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=স্নিগ্ধ প্রহর আমার, আটকে থাকে স্মৃতিঘরে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:০০


কিছু স্নিগ্ধ প্রহর স্মৃতির ঝুলিতে বন্দি রাখি,
শহরের ক্লান্তি যখন ঝাপটে ধরে,
যখন বিষাদ ব্যথা আঁকড়ে ধরে আমায়,
স্বস্তি শান্তি দিয়ে যায় ফাঁকি
ঠিক তখনি উঁকি দেই স্মৃতিঘরে,
মুহুর্তেই সময় পরিণত হয় সুখ... ...বাকিটুকু পড়ুন

নাজলী নামের মেয়েটি

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:০৫

"নাজলী এখন ভালো আছে"

নাজলীর অসুখ করেছে, আকাশ পাতাল ভাবনায়
ডুবে আছে মেয়েটি।
ঢাকা শহরের উদাস হাওয়া,এলোমেলো পাগলা মিছিলের
আওয়াজে প্রকম্পিত চারদিক, তবুও ভালো আছে নাজলী নামের
মেয়েটি।

গুমোট নগরে
দু:খবোধ জন্ম নেয়, জন্ম নেয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমা করো মা'মনি

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:২৩

এখন অনেক রাত। বিছানায় শুয়ে শুয়ে আইপ্যাডে নিউজ পড়ছিলাম আর সেহরির অপেক্ষা করছি। মাগুরার ছোট্ট শিশুটির হাসপাতালে জীবন-মরন যুদ্ধের খবর বিভিন্ন পত্রিকায় দেখছিলাম। মন থেকে চাইছিলাম মেয়েটি সুস্থ হয়ে যাক।

আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×