দোস্ত , দেখ দেখ। ওই যে, ওই যে , বাম রাস্তাটার মোড়ে। আরেহ!! শিগগির তাকা, মিছ হয়ে যাবে তো।
ঘাবড়ে যেয়ে বায়ে তাকালাম। নতুন কোন মডেলের গাড়ি নাকি ??? চমকে উঠি। বেলা না ??? ক্লাসের ওই যে পাংকু মেয়েটা। একি হাল ??? শাড়ি কি আছে ??? নাকি পুরোটুকু কেনার টাকা হয় নি ? পাশের ছেলেটাও নতুন। ছেলেটা কে দেখে বেশ ধনীর দুলাল মনে হচ্ছে। বাপের টাকা আছে, নাও নাও লুটে নাও।
বেলাকে দেখে লাগছে সে যেন নিজের হাসি দিয়ে মুগ্ধ করতে চাইছে এই নবাবজাদা কে । আহঃ কি মধুর সে হাসি। চাঁদকে কিনে নিয়ে যেন সে হাসি জোয়ার ভাটার দখল নেবে।
গাটা রি রি করে ওঠে। কিভাবে এরা পারে নিজেদের পণ্য বানাতে? ছেলেদের দোষ??? শুধুই কি আমরা অপরাধি। তাদের মতে, গ্ল্যামার বলে একটা বেপার আছে না ??? একটু আধটু শরীর দেখলে কি আর হয় ??? বেশ তো। সৌন্দর্য যখন সকলের জন্য, এতই যখন উদারমনা, তখন বাকি টুকু পরারই বা কি দরকার ছিল???
নিজের বাপ মার সামনে এরা যায় কিভাবে ??? আমি সত্যিই বুঝি না।
আমি নিশ্চিত, এখনও এমন ছেলে আছে, যারা শরীর থেকেও মনকে বেশি দাম দেয়। এমন অনেকে আছে, কামাদ্র চুম্বন অপেক্ষা ছোট্ট ছোট্ট খুনশুটিকে অমূল্য মনে করে। ঝরে ঝরে পড়া শাড়ির আঁচল বা, এক পাশে রাখা ওড়না নয়, তারা নিজের স্ত্রী সমতুল্যকে পূর্ণ বসনেই ভালবাসে।
হে নারী, তোমারা কবে বুঝবে? এই যে পুরুষ তোমার শাড়ির প্রতি ভাঁজ খুলতে টাকা ঢালছে, সব ভাঁজ শেষ হলে তোমার অবশিষ্ট থাকবে কি ??? যা ধন, সব যদি আজই ঢেলে দাও, কাল তোমায় তুষ্ট করবে কিসে ?? রাস্তার পতিতারা পেট চালাতে দেহ বেঁচে, আর তুমি শকুনের খাদ্য হও কিসের ইচ্ছায়??? কোনদিন শুনিনি কোন ফুলকে কেউ নর্দমায় চুবিয়ে নিজের ঘরে রেখেছে।
নিজেকে তুমি যেভাবেই উপস্থাপন করবে, লোকে কিন্তু তাই ই দেখবে। ট্রান্সপারেন্ট কাপড় তোমার চামড়া দেখাবে, রুপ বাড়াবে না। ভালবাসা শরীর বেঁচে হয় না। ওটাকে বেশ্যা-বৃত্তি বলে। কোনদিন কাউকে বলতে শুনিনি, যে মেয়ের শরীরের কার্ভ বাইরে থেকে বোঝা যায়, সে সুন্দরি। আমি তাকে বলিউডের নায়িকা অথবা দামি হোটেলের পতিতা হিসেবেই জানি।
আমি বলি, তোমাকে হতে হবে ফুলের মত। ফুল ফোটে আকাশের দিকে মুখ তুলে, ছড়ায় সুগন্ধ। তুমি হবে তোমার মেয়ের প্রথম খোঁপার প্রথম গোলাপ। তুমি হবে তোমার প্রেমিকের টেবিলের উপর ফুটে থাকা একরাশ রজনীগন্ধা। তোমাকে দিয়েই তার মনের মন্দিরে পুজো হবে। তোমাকে দিয়েই হবে তার শেষ শয়নের ফুলেল গালিচা।