(১)
প্রিয় অভিনেতা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও অভিনীত এবং প্রযোজিত ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলের ছবি 'বিফোর দ্য ফ্লাড' দেখলাম। অসাধারণ বানিয়েছেন লিও। একদম ভেতরটা নাড়া দিয়ে গেলো। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের ভয়াবহতা নিখুঁতভাবে তুলে এনেছেন তিনি, খুঁজেছেন বাঁচার উপায়। জাতিসংঘের শান্তির দূত হিসেবে ঘুরে বেড়িয়েছেন পৃথিবীর নানা প্রান্তে।
তবে, ছবিটি মুক্তি পেয়েছে এমন একটা সময়ে(৩০ অক্টোবর), যার মাত্র এক সপ্তাহ পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। আগামী চার বছরের জন্য আমেরিকা তথা বিশ্ববাসীর ভাগ্য নির্ধারণে এই ছবির স্পষ্ট মোটিভেশন থাকবে। লিও স্পষ্টভাবেই ইঙ্গিত দিয়েছেন কার পক্ষে এই ছবি। তিনি আহবান জানিয়েছেন এমন কাউকে নির্বাচিত করতে যিনি গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের ভয়াবহতা বোঝেন এবং এই নিয়ে প্যারিস এগ্রিমেন্টকে সামনে এগিয়ে নিতে আগ্রহী। নিশ্চিতভাবে তাঁর মতো শক্তিমান ও জনপ্রিয় অভিনেতার বার্তা কেউ ফেলতে পারবে না। সুতরাং, সবকিছুর সাথেই আসলে রাজনীতি জড়িয়ে আছে ওতোপ্রোতভাবে!
(২)
দিনকে দিন পৃথিবীতে কার্বন নি:সরণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়িয়ে আমরা কার্বন ছড়িয়ে দিচ্ছি পরিবেশে। এই কার্বন বাতাসের অক্সিজেনের সাথে মিশে তৈরি করছে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, বাড়িয়ে দিচ্ছে পৃথিবীর তাপমাত্রা। নি:সরিত হচ্ছে মিথেন, যা এর চেয়েও অনেক গুণ ক্ষতিকর। বৈশ্বিক উষ্ণতা বা গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে মরু অঞ্চলের বরফ গলে যাচ্ছে, আগের চেয়েও অনেক অনেক গুণ বেশি। ফলে বেড়ে যাচ্ছে সমুদ্রের পানির লেভেল, তলিয়ে যাচ্ছে অনেক দ্বীপ ও নিম্নভূমি। বিলুপ্ত হচ্ছে অনেক জীব। মরুকরণ বেড়ে যাচ্ছে।
এখনই এর লাগাম টেনে ধরতে হবে। জীবাশ্ম জ্বালানি শেষ না করে বিকল্প জ্বালানি যেমন নবায়ণযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। সুইডেন এই কাজে ইতিমধ্যেই সফলকাম হয়েছে। অথচ চীনের মতো শিল্প-কারখানায় উন্নত দেশুগুলোতে এই দূষণ দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। বিশ্বের ছোট ছোট দ্বীপরাষ্ট্রগুলো রয়েছে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। তারা সবচেয়ে কম দূষণ করলেও দূষণের ক্ষতির শিকার কিন্তু হবে তারাই বেশি। আমাদের বাংলাদেশও ক্ষতিগ্রস্থ হবে। বঙ্গোপসাগরের পানির লেভেল বেড়ে গেলে তলিয়ে যাবে অনেক নিম্নভূমি। এমনিতেই আয়তনের তুলনায় আমাদের এখানে জনসংখ্যা অনেক বেশি।
অস্কার বিজয়ী অভিনেতা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর প্রযোজনা ও অভিনয়ে ন্যাশনাল জিওগ্রাফি চ্যানেলের নতুন 'বিফোর দ্য ফ্লাড' ডকুমেন্টারি ছবিটা দেখে এমন অনেক কিছুই জানা গেলো। অসাধারণ লেগেছে আমার কাছে। অনেক এক্সক্লুসিভ ভিডিও আছে এতে। আছে অনেক তথ্যের ভাণ্ডার। জাতিসংঘের শান্তির দূত হিসেবে লিও এবং পরিচালক ফিশার স্টিভেনস গোটা দুনিয়া ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন স্তরের মানুষের সাথে কথা বলে এই ডকুমেন্টারি বানিয়েছেন। আপনারাও দেখুন।
-দেব দুলাল গুহ
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ২:১৮