অরুর বাবা মা গত হবার পরে তার চাচারা তাকে বোর্ডিং স্কুলে দিয়ে আসে কারন এই ৭ বছর বয়সে অরুর মাঝে যে গম্ভীর ভাব দেখা যায় তাতে কেউ তার আশেপাশে ভিড়তে চায়না।
কিন্তু ব্যতিক্রম শুধু তার হোস্টেলের সুপারভাইজার মিস, রাহেলা, উনি সবসময় অরুর পেছনে কোন কারন ছাড়াই লেগে থাকেন এবং খুব ভয়াবহভাবে মানসিক যন্ত্রণা দেয়।
একদিন বিকাল বেলা-
এই অরু তোর না একটা পাখি না টাখি আছে কই দেখা তো। (অরুকে তার এক বন্ধুর বাবা একটা টিয়াপাখি কিনে দিয়েছিলো, যার সাথেই অরুর বেশিরভাগ সময় কাটে)
- আচ্ছা ম্যাম নিয়ে আসছি, বলে অরু খাঁচাটা নিয়ে আসে।
বাহ পাখিটা তো অনেক সুন্দর কিন্তু তোর মত এত কুৎসিত একটা মেয়ের কাছে এমন পাখি থাকাটা তো একেবারে বেমানান রে।
- অরু ছল ছল চোখে তাকায় থাকে ম্যামের দিকে, সে বুঝতে পারতেছেনা আসলে কি বলবে।
(মিস রাহেলা পাখিটা বের করতে গেলেই হাতে একটা কামড় দেয়) এই পাখিটা তো দেখি তোর মত একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে, পাখিটা বের কর তুই।
- অরু বুঝতে পারেনা তার মত নষ্ট বলতে আসলে কি বোঝালো, তারপরেও সে পাখিটা বের করে ম্যামের হাতে দেয়।
মিস রাহেলা পাখিটা নিয়ে অরুর টেবিলের উপর থেকে একটা কেচি নিয়ে ক্যাচ ক্যাচ করে ডানার সব লোম কেটে ফেলে দিল, পাখিটাকে দেখতে একেবারে অদ্ভুত কুৎসিত লাগছিলো ডানা কাটার পরে।
- অরু একটা দৌড় দিয়ে বের হয়ে মাঠের এক কোনে চলে গেল।
৩দিন পরে কোন এক বিকেলে।
মিস রাহেলা তার খুব পছন্দের বিড়ালটা খুঁজে পাচ্ছেনা কোথাও তাই হোস্টেলে খুঁজতে এসেছে।
সবগুলো রুম খুঁজে এসে অরুর রুমের সামনে এসে দাঁড়ায়, রুমে কোন আলো না থাকায় কেমন যেন সবকিছু ঝাপসা লাগছে তারপরেও উনি ভেতরে দেখার চেষ্টা করছেন যদিও একটু কেমন জানি একটা গা ছম ছম করা অনুভূতি হচ্ছে।
অন্ধকার চোখে সয়ে যাওয়ার পরে মিস রাহেলা বিকট শব্দে একটা চিৎকার দিয়ে ধপাস করে পরে যায়।
১৩ বছর পরে।
ইয়ুশ প্রচন্ড গরমের মধ্যে ঘেমে একাকার ঠিক তখনি অরু তার পাশে দিয়ে হেটে গেল, ইয়ুশ কিছু বলতে গিয়ে দেখল ঠান্ডায় সে একেবারে জমে গেছে এবং মুখ দিয়ে কোন শব্দ বের হচ্ছেনা।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:৫৫