somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সময়ের সত্য কথা

২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কিছু কথা সঠিক সময়ে বলে ফেলতে হয়। নইলে, ইতিহাসের সাক্ষী থাকে না। কারণ, সময়টা পেরিয়ে গেলে, কিছু মিথ্যার মুখোশ খোলা কঠিন হয়ে পরে।

শাহবাগে ইমরান এইচ সরকারের ভূমিকাকে ডিফাইন করে একটা ভাষণ। খুব সম্ভবত ২১ ফেব্রুয়ারির দিনে ইমরান সরকার এই ভাষণটা দিয়ে, ৬ দফা দাবী ঘোষণা করে শাহবাগের সিট ইন মুভমেন্টকে ক্লোজ করে। এই ভাষণে ইমরান এইচ সরকার ঘোষণা দেয়, সেই দিন থেকে শাহবাগের প্রতিদিনের যে জমায়েত তা আর হবেনা এবং প্রতিদিন শুধু মাত্র বিকেল তিনটার সময়ে জমায়েত হবে। এর মাধ্যমে শাহবাগে যে সিট ইন প্রটেস্ট তার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। ইমরান এইচ সরকারের এই ভাষণটা খুব গুরুত্বপূর্ণ কারণ, এই ভাষণের যে ভিডিওটা প্রকাশিত হয়েছে সেখানে পরিষ্কার ধরা পরে, সরকারের ছাত্র সংগঠনের শীর্ষ একজন নেতা ইমরানকে প্রম্পট করছে, "একদম স্বাভাবিক- স্বাভাবিক- আসতে বলেন, দ্রুত বলেন, স্পীকারের কাছে নিয়ে বলেন" ইত্যাদি ইত্যাদি। এবং তাকে ঘিরে ছিলেন, সরকার দলীয় পরিচিত কালচারাল এক্টিভিস্টরা।

যাক বটম লাইন হচ্ছে, যারা বুঝতে চায় তাদেরকে, এই অফ দা রেকর্ড কথা গুলো প্রথম বারের মত পরিষ্কার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, ইমরান এইচ সরকার-শাহবাগে পরিষ্কার ভাবে সরকারের পক্ষ কাজ করছে- তার কোন ইন্ডিপেন্ডেন্ট সত্ত্বা নাই। এই সত্যটা এখন জ্বলন্ত সত্যকথা!

শাহবাগের ইন্ডিপেন্ডেন্ট যে স্পিরিট ছিল তাকে হত্যা করে, সরকারের হাতে তুলে দেয়ার যে রাজনীতি ইমরান এইচ সরকার শাহবাগের সময়ে করেছিলেন- সেইটা থেকে বের হওয়ার নৈতিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সাংগঠনিক সামর্থ্য ইমরান সরকারের কখনোই ছিলনা। এখনো নাই। তাই, ইমরান সরকারের ইতিহাস, আনুগত্য, সক্ষমতা সম্পর্কে যারা জানে, তাদের কাছে পরিষ্কার বিগত বছর খানেক ধরে, একটু সরকার বিরোধী যে আলাপ ইমরান দিচ্ছেন তা সরকারের প্রয়োজনে এবং পরামর্শেই দিচ্ছেন। আওয়ামী লীগের একটা স্ট্রেটেজি হলো তারা অনেক গুলো গোপন হাতকে এম্পাওয়ার করে। যেই সব কাজ করলে, হাত গন্ধ হবে, গোপন হাত দিয়ে সেই কাজটা আওয়ামী লীগ সারে। এই গোপন হাত গুলোর মধ্যে সব চেয়ে শক্তিশালী হচ্ছে, সেই গুলো যারা ঈষৎ সমালোচনার মাধ্যমে নিজের লেজিটিমেসি ধরে রাখে। এই জন্যে, বাংলা পরীক্ষার দিন ইংরেজি পরীক্ষা দিতে অনাগ্রহী ইমরান, বিগত বছর খানেক ধরে কেন ঈষৎ সরকার বিরোধী আওয়াজ দিচ্ছিলেন, তা বুঝতে কামেল বুজুর্গ হতে হয়না।

কিন্ত, ইমরান এইচ সরকারের এই সরকার বিরোধী বক্তব্য গুলোকে, যখন প্রধানমন্ত্রী তনয়, ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে লেজিটিমেসি দিলেন তখন বুঝতে হবে- শাহবাগের বিশ্বাসঘাতকের বিগত এক বছরের প্ল্যান এখন নেক্সট ফেজে নেমেছে। এমন হাজার হাজার স্ট্যাটাস অনেকেই দিচ্ছে প্রতি দিন, আওয়ামী লীগ ডাজ নট কেয়ার। এখন কেয়ার করছে, কারণ, আমার ধারনা, আওয়ামী লীগ ইমরান এইচ সরকারকে খুশি করতে চাইছে। আমার ধারনা, আওয়ামী লীগ এখন বুজতে পারছে, তার একপেশে ক্ষমতা বাংলাদেশের সুশীল এস্টাব্লিশ্মেন্টের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হচ্ছেনা। এবং লং টার্মে বিরোধিতার জন্যে তার একটা লেজিটিমেট তকমা লাগবে- যে সুশীল এস্টাব্লিশ্মেন্টের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।

যে সরকারকে ঘিরে ঢোরা সাপের মত ঘোষ ঘোষ ফোঁস করবে, বিবিসি যার সাক্ষাতকার ছাপাবে, প্রথম আলো যার সাক্ষাতকার ছাপাবে, টক শোতে যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলবে আবার অন্য দিকে হালকা করে দুর্নীতির কথা বলবে, কিন্ত, বড় ইস্যু গুলোতে হাত দিবেনা, দুর্বল যুক্তি দিবে- যার কোন পাবলিক এক্সেপ্টেন্স থাকবেনা- শুধু সুশীল এক্সেপ্টেন্স থাকবে।

এইটার একটা ক্লাসিক উদাহরণ হলো, আমাদের মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান।

ইমরানকে ঠিক এই রোলটার একটা রাজনৈতিক ভারশন প্লে করার জন্যে তৈরি করা হয়েছে বিগত এক বছরে, এখন মাঠে নামানো হচ্ছে। এবং মাঠে নামানোর আগে, তার লিজিটিমিসিটাকে মজবুত করার জন্যে এখন একটা হাইলি ভিজিবল, নিরাপদ আক্রমণ করা হচ্ছে, জনমনে সিম্পাথি ক্রিয়েট করানোর জন্যে।

অনেকের কাছে এইটা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব মনে হতে পারে। কিন্ত, বিগত তিন বছরের রাজনীতি গভীর ভাবে ফলো করলে, যে কারো কাছে পরিষ্কার হবে, ইমরান -সরকারের সিগনাল ছাড়া এক পাও মুভ করেনা। সেই চরম অনুগত ইমরানকে প্রধান মন্ত্রী তনয় সমালোচনা করার মাধ্যমে লিজিটিমেসি দিচ্ছেন সেইটাকে অন্য ভাবে দেখার কোন সুযোগ নাই।

লেট আস বি ভেরি ক্লিয়ার, আওয়ামী লীগ যাকে থ্রেট মনে করে, তাকে মামলা দেয়, হাজার হাজার মামলা যেন সেই কোর্টে যাইতে যাইতে হয়রান হয়ে যায়, সেইটাতেও যদি কাজ না হয় তাকে জেলে ভরে, সেইটা যদি রিস্কি হয় তাইলে গুম করে - ফেসবুক থেকে আন-ফ্রেন্ড বা আন-ফলো করেনা। দাট ইস টু সিলি ফর আওয়ামী লীগ।

কিন্তু শফিক রেহমান সম্পর্কে ইমরান এইচ সরকারের বর্তমান অবস্থান ভুল নয়, কৌশলগত। অতএব তাকে সমর্থন করার আগে আমাদেরকে চিন্তা করতে হবে গভীর ভাবে। আমরা আগেও সঠিক অবস্থান নিয়েছিলাম, এখনও সঠিক অবস্থান থাকতে চাই।

আগে শত্রু কে চিনতে হবে, অন্ধকারে হাতরালে হবে না। চীলে কান নিয়েছে বলেই দৌড় দিবেন না। আগে কানে হাত দিয়ে দেখুন।

সবাইকে ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইল।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত @ নীল আকাশ, এপ্রিল, ২০১৬
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৫০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মি. চুপ্পুর পক্ষ নিয়েছে বিএনপি-জামাত; কারণ কী?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৬


বিএনপি গত ১৬ বছর আম্লিগের এগুচ্ছ কেশও ছিড়তে পারেনি অথচ যখন ছাত্ররা গণহত্যাকারীদের হটিয়েছে তখন কেন বিএনপি চু্প্পুর পক্ষ নিচ্ছে? অনেকেই বলছে সাংবিধানিক শুন্যতা সৃষ্টি হবে তার সংগে বিএনপিও... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এতো কাঁদাও কেনো=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৫:০৬




আয়না হতে চেয়েছিলে আমার। মেনে নিয়ে কথা, তোমায় আয়না ভেবে বসি, দেখতে চাই তোমাতে আমি আর আমার সুখ দু:খ আনন্দ বেদনা। রোদ্দুরের আলোয় কিংবা রাতের আঁধারে আলোয় আলোকিত মনের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগারেরা প্রেসিডেন্ট চুপ্পুমিয়াকে চান না, কিন্তু বিএনপি কেন চায়?

লিখেছেন সোনাগাজী, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৪



**** এখন থেকে ১৯ মিনিট পরে (বৃহ: রাত ১২'টায় ) আমার সেমিব্যান তুলে নেয়া হবে; সামুটিককে ধন্যবাদ। ****

***** আমাকে সেমিব্যান থেকে "জেনারেল" করা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিকাহের পরিবর্তে আল্লাহর হাদিসও মানা যায় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪




সূরা: ৪ নিসা, ৮৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮৭। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নাই। তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্র করবেন, তাতে কোন সন্দেহ নাই। হাদিসে কে আল্লাহ থেকে বেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। পৃথিবীকে ঠান্ডা করতে ছিটানো হবে ৫০ লাখ টন হীরার গুঁড়ো

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:০২




জলবায়ূ পরিবর্তনের ফলে বেড়েছে তাপমাত্রা। এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। তাই উত্তপ্ত এই পৃথিবীকে শীতল করার জন্য বায়ুমণ্ডলে ছড়ানো হতে পারে ৫০ লাখ টন হীরার ধূলিকণা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×