প্রিয় চারু,
অামাকে কাঁদাইয়া নিশ্চয়ই কুশলে অাছো। অামি জানি তুমি অবশ্যই কুশলে অাছো। অন্যথা তুমি অামাকে মুঠোফোনে অন্তত একখানা ছোট বার্তা পাঠাইতে। অাজ অনেক দিন তোমার সহিত কথা হয়না। অামার বুকের অগ্নিগর্ভ হইতে লার্ভার স্ফুলিঙ্গ বাহির হইতেছে। এ যন্ত্রনা সহ্য করিতে না পারিয়াই তোমার মুঠোফোনে অাজ দুইবার কল করিলাম। কিন্ত উত্তর নাই। যে তুমি অামার বুকে মাথা রাখিয়া অাগামীর স্বপ্ন বুনিতে। অামাকে স্বপ্ন দেখাইতে শিখাইয়াছিলে। অার বারংবার অামাকে ছলছল চোখে অাকুতি করিয়া বলিতে " অামি তোমাকে অামার সর্বস্য দিয়া ভালোবাসিয়াছি, কখনো অামাকে ছাড়িয়া যাইওনা"। অাজ সেই তুমিই অামাকে বোধয় চিনিতে পারিতেছনা। জানো? খুব কষ্ট হইতেছে। অামি জানি সভ্য সমাজ অামার এই অনুভুতিকে সম্মান নয় বরং "উপহাস" করিবে। কারন পৃথিবী নামক এই গ্রহে অনুভুতি বাজারে ক্রেতা শূন্য।
মনে অাছে? যেদিন তোমার সিঁথিতে পবিত্র সিঁদুর পড়াইছিলাম। সেদিন তুমি অামার পা ছুঁয়ে প্রণাম করিতে যাইবে ঠিক তখনই অামি তোমাকে অামার বুকে টানিয়া শক্ত করিয়া জড়াইয়া ধরিয়াছিলাম। অার বলিয়াছিলাম। ধরিত্রীর বুকে অামি যতদিন বাঁচিবো তোমাকে ভালোবাসিয়াই বাঁচিবো। হয়তো তোমার মনে নাই। অাচ্ছা তুমিওতো নারী। তোমার হৃদয়ে অামার জন্য এতটুকুও মায়া হয়না? মনে পড়েনা? সেই সোনালী অতীতগুলো? চলিয়াই যদি যাইবে তাহা হইলে বিবাহ বন্ধনে অাবদ্ধ কেন হইলে? স্বামী স্ত্রীর পবিত্র সম্পর্ককে কেন কলঙ্কিত করিলে? বিবাহ কি কোন পুতুল খেলা? সিঁদুরটা কি শুধুই রং?
তুমি বলিয়াছিলে "জীবনের শেষ সূর্যাস্ত অামার হাত ধরিয়া দেখিবে"। কিন্ত ভাগ্য কি নিষ্ঠুর। তুমি অাজ সহ্যই করিতে পারিতেছনা। দেখিতে দেখিতে অাজ ০১ (এক) বছর অতিক্রম করিলো। হঠাতই তুমি অচেনা হইলে। কি দোষ করিয়াছিলাম অামি? কোন অপরাধে তুমি অামার সহিত এমন করিতেছ? কি করিয়া অামার সরল ভালোবাসাকে পদদলিত করিলে? কিসের অভাব ছিলো তোমার? প্রশ্নগুলোর উত্তর দিও। অামিতো কোনদিন তোমাকে অবহেলা করিনাই এক তীল পরিমান। তাহলে কেন? কেন? কেন? এমন করিতেছ?
অাহত পাখির মত ছটফট করিতেছি। মনে হয় হৃদপিন্ডটা ঢিব ঢিব করিতে করিতে বিস্ফোরিত হইয়া যাইবে। কেন অামার ভালোবাসার মন্দিরটাকে নরক বানাইয়া দিলে? বুকটা কাপিলোনা বুঝি! অামার গগনগ্রাসী কান্না বুঝি তোমার কান পর্যন্ত পৌছায়না। হৃদয়হীনা, নির্মম, নিষ্ঠুর কি করিয়া হইলে? যদি অন্তত প্রতিদিন একটি বার মহান স্রস্টাকে স্মরন করিতে তাহা হইলে এমন হৃদহীনা হইতে পারিতানা।
কেন অাসিয়াছিলে অামার জীবনে? কেনইবা করিয়াছিলে তোমার জীবনসঙ্গী? কেন অামার হৃদয় মন্দিরটাকে পদদলিত করিলে? কেনইবা অামাকে এমন নরকের দ্বারপ্রান্তে নিক্ষেপ করিলে? কি অপরাধ করিয়াছিলাম অামি?
অাজ অামার চোখের অশ্রুতে তুমি পদযুগল প্রক্ষালন করিলে? খুব সুখ পাইয়াছ তাইনা? খুব যতন করিয়াই অামার বুকে ছুড়ি চালাইয়া দিলে। তাহলে ছলনা কি অাজকাল "শিল্পে" পরিনত হইয়াছে? জানিনা! উত্তর দিও।
নিশাচরদের সঙ্গী করিয়াই অামার প্রতিটা রাত কাটিয়া যায়। যদি কখনো চোখ বন্ধ করি তোমার মুখটা দেখিতে পাই অার ঢুকরে কাদিয়া উঠি। তাই নিদ্রার সহিত বিচ্ছেদ ঘটাইয়াছি। তবে মাথার বালিশটা থেকে কেমন একটা ভ্যাপসা গন্ধ বাহির হইতেছে। অামার কান্নার সাক্ষী ঐ বালিশ। অাহ! তুমি অামার ভালোবাসার দেবী ছিলে। অার অাজ! অামাকে পরম যতনে বিষাদের সমুদ্রে ছাড়িয়া দিলে।
অাজ অার লিখিবোনা। মস্তিস্কের কালি ক্রমশ হ্রাস পাইতেছে। হাত দুখানা কাপিতেছে। কি-বোর্ডে অার স্পর্শ করতে পারছিনা। ভালো থেকে। যদি পারো ফিরে এসো।
ইতি,
অামি।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৪