অধিকার নাকি সম্মান
.....................................
কিছুদিন আগে আমি কলেজ থেকে ফিড়ছিলাম। লোকাল বাসে প্রচন্ড ভিড়। কোন সিট ফাকা নেই। আমার সাথে একজন অন্টি ছিল ওনি হয়তো অফিস করে এসছে। ক্লান্ত ছিলেন, সিট না থাকায় দাড়লেন। ওনাকে আমি চিনি তবে ব্যক্তিগন ভাবে না। এক আন্দোলনে দেখেছি। ওনার এমন আবস্থা দেখে আমি আমার সামনে থাকা ছেলেকে বললাম "ভাই আন্টি টা দাড়াতে পারছেন না, আপনি যদি দাড়িয়ে তাকে জায়গা
দেন তাহলে বসতে পারতেন। " এই কথা শুনে আন্টিও আশা নিয়ে তাকিয়েছিলন। লোকাটা একটা উত্তর দিয়েছেন আমি ত হতভাগ হয়ে গেছি। লোকটা বল " ভাই বিষয়টা আমিও ভেবছি। যে ওনাকে দাড়িয়ে বসতে দেই। তবে না দেয়ার কারনটা ওনাদের থেকে শিখছি। সম অধিকার ভাই। সিটে ওনার আমার অধিকার ত সমান। কেন দেব আমি? " কথা শুনে আন্টি মলিন চোখে তাকিয়ে ছিলেন। আমিও কিছু বলি নাই। কারন আমি ওনাকে যেই আন্দোলনে দেখেছি যেটা ছিল সম অধিকার আন্দোলন। শুধু ভাবেছিলম, সত্যি নারী পুরুষ সমান অধিকার।
আচ্ছা ঐ দিনটা খুব পুরাতন, যখন পাবলিক যানবাহনে চলাচলের সময় মা বোন দের সাম্মানে দাড়িয়ে বসার স্থান দিত! তাদের দেখে নিজের মায়ের বোনের কথা মনে পড়তে! দিনগুলো কি বেশি পুরাতন হয়ে গেছে! না, বেশি পুরুনো হয়ছে মনে হয় না!
তারপর কি হল? আমাদের মা বোনের বুদ্ধি বাড়ল, আসলে ঠিক বুদ্ধি না এটা কু বুদ্ধি। তাদের আর মা বোন হতে ভালো লাগে না, তারা হতে চায় না আর মা বোন। আসলে তারা ছেলেদের দুঃখ মুছনে সাহায্য করতে চেয়েছিল। আমরা বেচারা নেহাত বোকা বাঙ্গালি, বুঝতে পারি নি। তারা এবার মা বোন হওয়া বাদ দিয়ে হতে শুরু করল শালী, ভাবি, কেউ বা হয়েছে শুধু বন্ধু (just friend)। একটা সময় ছিল যখন প্রবাদ ছিল "ভাবী মায়ের মত।" কিন্তু এখন সময় পরিবর্তন হয়েছে। ভাবী আর মায়ের মত হতে চায় না। তাই এখন প্রবাদ হয়েছে " ভাবীর কাছে দাবি আছে।"
কিছুদিন আগেও মায়েরা ঘরে থাকত, বোন স্কুল, কলেজ থেকে ফিরে মাকে কাজে সাহায্য করত। বাবা , ভাই সকলেজ জন্য অর্থ উপার্জন করত, বাহিরে কাজ করত। ঘরেরে কর্তা দেখতে বাবা হলেও, আসলে ঘরের দায়িত্ব ছিল মায়েদের হাতে। তারা যা বলত তা পালনের চেষ্টা থাকত ঘরের সকল পুরুষে। ছেলেরা মা ভক্ত ছিল।" মা যা চাইবে তাই হবে" এক বাক্যারের সহজ স্বীকারোক্তি ছিল। বোনেরা ভাই বাবার চোখের মনি ছিল। তার একটু কষ্টে সবাই কান্না করত। তবে নারী এই সম্মান বুঝতে পারে নি। তারা মনে করেছে পুরুষ গন পৃথিবীতে বিচরন করে, তারা স্বাধীন, মুক্ত বাতাসে শ্বাস নেয়, আমরা কেন গৃহে! আমাদেরও অধিকার আছে। তারা বাহির হল। রঙ্গিন পৃথিবীতে মিশে যাতে চাইল, হারাতে চাইলো সময় আর নিয়মের বেড়া জালে। তারা সম্মান চায় নাই। তারা চেয়েছে সমান অধিকার। তবে এখানে ও তারা পরিচয় দিয়েছে দূর্বল বুদ্ধিমত্তার! তার যে দূর্বল বুদ্ধিমত্তার অধিকারি, তার প্রমান তারা সমান অধিকার চাওয়ার মধ্যমে প্রকাশ করেছে! কিভাবে তার প্রমান নিচে দেয়ার চেষ্টা করি!
আচ্ছা বলেন ত, আপনাকে যদি কোন দলের নেতা বানানো হয়, আপনি কি জোড় করে কখনো দলের সদস্য হবে? হবেন না ত? কেন হবেন না? কারন, দলের নেতার অধিকার দ্বায়িত্ব দলের সদস্যের চেয়ে বেশি। ঠিক তেমন ই পরিবারে নারী অধিকার অন্য পুরুষ সদস্য থেকে বেশি। শুধু বেশি না, অনেক বেশি।
অধিকার কথায় যখন হচ্ছে, প্রথমে আসি সম্পদ এর কথায়। "নারী সম্পদ পাবে তার স্বামী এবং তার বাবার থেকে, যেখানে পুরুষ পাবে শুধু বাবার থেকে! শুধু কি সম্পদ সাথে সারা জীবন সন্তানদের চোখের মনি হয়ে সেবা যন্ত পাওয়া।
কিন্তু নারী এর জন্য বোকা তারা বাবার কাছে ভাই এর সমান সম্পদ চায়, কিন্তু স্বামী কাছে যে পায় এটা তারা ভুলে যায়। আর এই অধিকার আদয় করতে গিয়ে খারাপ হয় ভাই এর কাছে, বাবার কাছে, মায়ের থেকে শিখে মেয়ে তা করে, আবার মেয়েও খারাপ হয়!
দ্বিতীয় যে বিষয়টি তারা বুঝে নাই, তা হল সম্মান আর অধিকার কখনো একসাথে থাকে না।
দুইটা বিষয় একটু জটিল! আপনি সম্মান চান তাহলে সম্মান এর মোড়কে আপনি অধিকার গুলোও পাচ্ছেন। কারন অধিকার থেকেও সম্মান অনেক উপরে! মনে করেন আপনি কোন লাইনে দাড়িয়ে আছেন, বিষয়টা শুধু অধিকার এর হলে, যে আগে আসবে সে আগে লাইনে যাবে, হওক আপনার ছোট বা বড়, হওক পুরুষ বা মহিলা। কিন্তু যদি বিষটা সম্মান এর হয়, তাহলে আপনি একজন বয়ষ্ক মানুষ, পরে আসছেন, তারপরে ও সামনে থাকা যুবক সম্মান করে আপনাকে সমনে দিবে! আপনি একজন নারী, তাহলে সামনে থাকা সকল পুরুষ আপনাকে সামনে দিবে,, আগে কাজ করতে সাহায্য করবে। মানে হল আপনার অধিকার সম্পূর্ণ আদায় হবে সম্মান এর সাথে। লাইনে দাড়িয়ে সবার সমান নিয়মে কাজ করানো আপনার অধিকার। অধিকার চাইলে এটাই পেতেন সবার সমান নিয়মে. কিন্তু আপনি সম্মান চেয়েছেন, অধিকার ও পেয়েছে। এবার বলুন অধিকার টা ভালো নাকি সম্মানটা।
সমাজে কিছু পুরুষও দেখি অনেক আগে থেকে বলে আসছে, "নারী ক্ষমতায়ান কর, নারীকে সম অধিকার দাও। তারা যেন আর গৃহবন্দী না হয়।
তারা ও কাজ করবে, নিজের পায়ে দাড়াবে, তারা পুরুয়ের সমান অধিকার পাবে।" নারীরাও তাদের সমর্থন জানালো। বেরিয়ে আসল ঘর থেকে । তারা মা চাচী বোন, থেকে হয়ে গেল ভাবী, সহ কর্মী, প্রেমিকা। সাথে সাথে বদলে গেল সামজে প্রচলিত প্রবাদ গুলো। "বড় ভাবী মায়ের মত। " এই প্রবাদ পাল্টে তা হলে " ভাবীর কাছে দাবী আছে।" প্রবাদে। আন্দোলন করা দেবর গুলো সোচ্চার হল দাবী আদায়ে। শুরু হল সুখের সংসার ভাঙ্গন। পরকীয়ার মত কাজ গুলো। ভাবী দেবরের সম্পর্ক আগে সেখানে ছিলো মধুর। ভাবী দেবর কে ছোট ভাইর এর মত শাসন করত। দেরব ভাবীকে বড় আপুর মত সম্মান দিত। এমন কাহিনি ও আছে মা মারা যাওয়ার পরে ভাবী দেবরকে মায়ের মত লালন পালন করছে। আর এখন সম্পর্ক হয়ে গেছে সন্দেহের। ভাবী দেবর এক সাথে মানে কিছু অনৈতিক করবে এমন আশংকা।
আচ্ছা একটা কথা পৃথিবীর বুকে এমন বোকা কে আছে, যেখানে বেশি অধিকার পেত, তারা এখন সমান অধিকার এর জন্য রাস্তায় নামে। হা হা.... বোকা কি আর গাছে ধরে!
একটা গল্প শুনাই,
এক শিয়াল আর এক মুরগির। মুরগি প্রতিদিন সন্ধ্যার আগে ঘরে চলে যেত, তাই শিয়াল মিয়ার আর তাকে খেতে সুবিধা করতে পারত না। তাই পরিকল্পনা করে শিয়াল মুরগী কে বুদ্ধি দিল, " কি রে মুরগি আমার ত রাত পর্যন্ত বাহির ঘুড়ি, আনন্দ করি, আর তোরা রাত না হতেই হতেই চলে যাস। বন্ধী পড়ে থাকস মালিকের ঘরে। জীবনে আনন্দ আর বুঝলি না। বেচার বেশি চালাক মুরগি, ভাবল ঠিক ত, আমরা বন্ধী থাকি, আর এরা কত স্বাধীন। মুরগি ঠিক করল কাল সন্ধ্যায় ঘরে যাবে না, রাতে বাহিরে ঘুড়বে। সন্ধ্যা নামলো মালিক তাকে খুজে না পেয়ে ফিড়ে চলে গেল। মুরগি ভাবল এবার আমি স্বাধীন। তখন তার দেখা হল শিয়াল এর সাথে । শিয়াল ত বেজায় খুশি, আজ রাতে খাবার হবে মজার। মুরগি হাসি দিল স্বাধীন হয় আর এটাই চেষ হাসি ছিল। আর সে বন্দী হল শিয়ালের পেটে।
এখন কেউ বলতে পারেন আপনি নারীকে মুরগির সাথে তুলনা করলে। "হ্যা করেছে। কারন একজন খামারির কাছে মুগরী গুলো তার জীবন। তার সংসার পরিবার সব এগুলোর উপর নির্ভব। এ গুলোর কিছু হলে মালিকে সব শেষ হয়ে যায়।
আর একটা বিষয়ের প্রতি নারীর বিষন ক্ষোপ প্রকাশ করে, যেকেন তারা পর্দায় থাকতে হবে। তার পর্দকে বন্দি খাচা মনে করে।
আচ্ছা কখনো দেখেছে এক টুকরো লোহা সিন্ধুকে লুকানো আর হীরা রাস্তায় পড়ে আছে। দেখেন নি ত। কেন? কারন হীর মূল্যবান এটা লুকানো থাকে সিন্ধুকে। নারীও ঠিক এমন। একজন বাবার কাছে তার মেয়ে হীরা, স্বামীর কাছে স্ত্রী হীরা ভাই এর কাছে বোন হীরা। বলেন কেউ কি এমন বোকা আছে তার হীরা কে রাস্তায় ফেলে রাখে। তবে হীরায় বুঝল না, ভাবলো লোহা ত কত স্বাধীন। বাহিরে দেখে কত মজায় আছে।
আর একটা কথা, আজকাল অনেক বলে রাস্তায় মেয়ে দেখেলে নিজের বোন ভাবতে। আমি ও বলি নিশ্চয়ই ভাব বোন, তবে তাকে যার মাঝে আমি আমার বোনকে দেখতে পাই। আমি আর বোনকে যেভাবে হীরা মত লুকিয়ে পর্দায় সাথে সম্মানে রাখি যেভাবে যে থাকবে তাকে বোনের মত দেখব। আপনি রাস্তায় জিন্স পরে চলবে নিজেকে পন্য বানিয়ে, আমি কেন একটা পন্য কে বোন ভাব,। আমার বোন ত এত সস্তা না। যাকে রাস্তায় সবাই দেখবে। যে নিজেকে উপস্থাপন করে সবার সামনে পন্যার মত। আমার বোন আমার হীর। আমার কলিজা। যদি আপনি ও হীরার মত হন তাহলে আপনি ও আমার বোন।
#Right_Or_Respect
........... সম অধিকার নয়
সম্মান দাও.......