গল্পে অনাকাঙ্খিত লিখা থাকতে পারে,নিজ দায়িত্বে ঢুকুন ।
-এগুলা কি আনছস ? যা ভালো কিছু ধইরা নিয়া আয়
ওস্তাদ এর থেকে ভালো আর নাই। আমি আর কালা সারা দিন খুইজা এই দুইটারে পাইছি ।
-তাইলে কি এগোরে দিয়া পার্টি করতে হইব ?
-ওস্তাদ আর তো কিছু করার নাই ।
-হুম,এদের বুঝাইছস কি করতে হইব ?
-জ্বি ।
-এইবার তোরা যা , ওয়াইনের বোতল টা দিয়া যাইস ।
আর মাইয়া দুইটারে দেশি খাওয়াইয়া রেডি হইয়া থাকতে কইস ।(এইভাবে পার্টি করে রাত কাটায় হাসান)
২ মাস পরঃ
সকাল বেলা মিথিলা বের হয় ভার্সিটি যাবে বলে । মন টা খারাপ, গতকাল ই রিহ্যাব থেকে ফেরত এসেছে। বয়ফ্রেন্ড হাসানের সাথে ব্রেকআপ হয়েছে,ভার্সিটির ক্লাস করতে ইচ্ছে করছিল না , কি করবে ? মার বকুনি খেয়ে বের হল । হাসান অনেক ভালো ছিল,ঠিকমত ওর খোজ খবর নিত ,হঠাত করে কি যেন হয়,ওর সঙ্গ আর নাকি ভালো লাগে না তার । মিথিলা অগত্যা রাগ করে রিলেশন ব্রেক আপ করে ফেলে। এখনো ওর প্রচন্ড মন খারাপ । হাসানের সাথে প্রথম দিনের দেখার কথা মনে হচ্ছিল ,গাড়িতে যেতে যেতে মনে করতে থাকে পুরনো দিনের কথা--
-এই মিথিলা,তুই যাবি না? আজকে তোর ভয়েস ছাড়া গান রেকর্ড করা যাবে না । আর রেকর্ড না হইলে ওই শালারে তো চিনস ই ।তোর জান কবয কইরা ফালাইব ।
-নারে,ভাল্লাগতেছেনা,এখানে কিছুক্ষণ বসে থাকি,তাই বেশ । তোরা যা ।আমি আসছি ।
মিথিলা অনেক চিন্তা করে দেখে যে তার এই ব্যান্ডের কেউ ই ভা্লো না ,সবাই তাকে ইউজ করে ছেড়ে দিয়েছে । তার সতীত্ব না থাকলেও স্বচ্ছ পানিতে সাতার কাটার ইচ্ছে এখনো আছে । যাকে বিশ্বাস করে তার সবচেয়ে দামি জিনিস আমানত দেয় সেই খিয়ানত করে তাকে ছেড়ে চলে যায় । সে এখন একা,বড় একা।
হুদা নামে তার একজন ব্যান্ড মেম্বার ছিল । ঐ কুত্তার বাচ্চা এক নাইট ক্লাবে নিয়ে যায় ওকে । বলে যে ওই ক্লাবের মালিক তার এক বান্ধবী । মিথিলাকে নিয়ে হুদা মিলির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় । মিথিলার মনে হল,মিলি তার থেকে কম সুন্দরী নয়।ডানা কাটা পরীর মত ।শাড়ি-ব্লাউজ যেভাবে পড়েছে,তাতে করে সবাই তার দিকে লোলুপ দৃষ্টীতে তাকাচ্ছে।সেদিকে মিলির কোন খেয়াল নেই । সবাইকে নিজের উদভ্রান্ত যৌবন দেখিয়ে বাড়ানোই যেন তার প্রধান কাজ । পাতলা ফিনফিনে জর্জেটের শাড়ি পরনে,গায়ে তিন ইঞ্চি বহরের স্যান্ডো ব্লাউজ । ফর্সা ধবধবে প্রায় গোটা পিঠটা দেখা যাচ্ছে । মাঝে মাঝে শাড়িটা খসে পড়ে গেলে সেটাকে সময় নিয়ে ধীরে সুস্থে যথাস্থানে রাখছে ।যেন তা্র যৌবন দেখানোর জন্যই এই ক্লাব কিনা ।
হঠাৎ করে গোটা রুমটা কুয়াশার মত আচ্ছন্ন হয়ে গেল। হুদা তখন মিথিলার পিঠে হাত রাখল । মিথিলা এক থাপ্পড় দিয়ে হুদা কে বলল-তোর নামটা হুদা না হয়ে বেহুদা হইলে বহুত ভালো হইত । ক্যারেক্টারলেস জানোয়ার ।
গাড়ির হর্ণের আওয়াজে ওর কল্পনায় ছেদ পড়ল । জ্যাম ।আজকে ভার্সিটিতে যেতে পারবে না,গেলেও এক ক্লাস তো মিস ।
হাসানের সাথে পরিচয় হবার পর মিথিলা একবার হাসানের জন্য ফুল কিনে নিয়ে যায় , ভার্সিটিতে সবার সামনে ফুল নেয় হাসান। বাসায় যাওয়ার সময় মা সন্দেহ করবে বলে হাসান বাসার সামনের ডাস্টবিনে সবকয়টা ফুল ফেলে দেয় । সে মিথিলাকে ভালোবাসে না,আর সবার মতই দেহ ভোগ ছাড়া আর কিছুই নয় ।
হাসান মিথিলাকে নিয়ে নাইট ক্লাবে যায় । গিয়ে পুরা পিনিক নিয়া বাড়ি ফিরে । কার হাত কার উপর ,আর কে গায়ে হাত দিল তা আর তখন খেয়াল করে না মিথিলা।আধুনিকা ।
হাসান তার কর্মোদ্ধারের জন্য মিথিলাকে নিয়ে তার ফ্ল্যাটে যায় । আগে থেকেই সব ব্যবস্থা করা ছিল । মিথিলাকে বলে তুমি রেস্ট নাও,আমি আসছি । মিথিলা চিন্তা করেছিল হাসান বুঝি তার মার সাথে পরিচয় করিয়ে দিবে । কিন্তু তখন পুরো বাসা খালি ছিল । মিথিলা র মনে আতঙ্ক ভর করেছে ততক্ষণে । হাসান ফিরে এলে মিথিলা তাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে আসার অনুরোধ করে । হাসান তখন গাজার পিনিকে ছিল । মিথিলা বুঝতে পেরে ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেস্টা করে । প্রথমে নেশাগ্রস্থ হাসান বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে ,পরে আর পারে না । মিথিলা হাসানকে ফুলদানি দিয়ে বাড়ি দেয় নিজের ইজ্জত বাচাতে । মিথিলা জানে না ও এরকম কেন করেছে,ওর সতীত্ব তো আগে থেকেই নেই,তাহলে হাসান কে এভাবে রক্তলীলায় ভাসিয়ে আসল কেন?
ব্রেক আপ হওয়ার পর আজ ২ মাস । নতুন বছরে মিথিলা সব স্নাফিং ছেড়ে দিয়েছে । আজ সে মুক্ত । কিন্তু নিজের কাছে পরাজিত । হারের ভয় আর জিতার আশা -এই দুইয়ের মাঝে মিথিলা কখনোই নিজেকে রাখতে চায় নাই । হয়,হেরে গিয়ে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছে নাহলে জিতে এসে করেছে নিজেকে সমাজের কাছে ছোট (কোন মেয়েকে একটা ছেলের বাসা থেকে দৌড়ে বেড়িয়ে যেতে দেখলে মেয়েটাই ছোট হয় )।আমাদের সমাজ টাই এইরকম । ধিক্কার । আধুনিকতার নামে মানুষ হয়ে যায় পশু ।পশুরও তখন হয়তো লজ্জা লাগে ।
বরাবরের মতো -কারো যদি খারাপ লাগে তাহলে ভুল ধরিয়ে দিবেন । বড়রা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ।আমার পোস্ট তো আর কেউ প্রিয়তে নিবেন না , তাই রাগ কইরা রম্য লিখ ছাইড়া দিছি । রম্য ছাড়া কখনো কিছু না লিখলেও হঠাৎ সমাজ ব্যবস্থার নিকৃষ্ট আধুনিকায়ন নিয়ে লিখতে ইচ্ছা হল। তাই লিখলাম । আশা করি ভালো লাগবে ।