আমি যতদূর জানি ছবিতে দেখাইলে হয় প্রণয় কিভাবে হয় এবং নায়ক কিভাবে নায়িকাকে তার প্রেমের কথা জানাবে এই কাহিনী করে বিয়ের পিঁড়ি পর্যন্ত যাইতে যাইতে ২.৩০ ঘন্টা শেষ।তারপর বলে -বাচ্চারা পয়সা উসুল,এইবার বাড়ীত যাইয়া ঘুমায়া থাকো ।
সবসময় দেখবেন কোন প্রেমের গল্পেই ৩ টা অংশ থাকে না অথচ ৩ টা অংশই হচ্ছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।
১ম অংশঃ প্রণয়ের শুরু
২য় অংশঃ বিয়ে পর্যন্ত গল্পটাকে নিয়ে যাওয়া
এবং ৩য় অংশঃ বিয়ের পরে যত কিছু হয় তার বর্ণনা ।
আর যদি ব্যক্তিগত জীবন থেকে অভিজ্ঞতা নেয়া লাগে তাহলে বলা যায়--যদি কাউরে পছন্দ হয় তাহলে কি করবেন ? যদি মনের মধ্যে সাহস থাকে তাহলে সবার সামনেই বইলা দেন,যদিও মনে হয় না আপনি বলতে পারবেন তাই আপনার জন্য বিষেষ পদ্ধতি।
(শুধু ছেলেরা পড়বেন)। অধিকাংশ মেয়ের সাথে ভাব নিয়া চলবেন । কারো সাথে কথা বলবেন না। শুধু দুইজন বাদে । এবং ঐ দুইজন হবে অতীব সুন্দরী । একজন সুন্দরী হবে আপনার বান্ধবী আরেকজন সুন্দরী হবে আপনার মেয়ে বান্ধবী(গার্লফ্রেন্ড)। দুইজন কেন?দুইজনের দরকার হচ্ছে এই কারণে যে যদি আপনার গার্লফ্রেন্ড ঝগড়া করে তাইলে আরেকজনের সাথে কথা বইলা জেলাস ফিল করাইবেন।ঝগড়ার তাড়াতাড়ি অবসান ঘটবে ইনশাআল্লাহ।(তবে ঝগড়ার অবসান ঘটীবার পর পর ওই বান্ধবীকে ছাড়িয়া দিতে হইবে নতুবা আপনার কপালে দুর্গতি আসিলে লেখক কোন অংশে দায়ী থাকিবেন না।)
(শুধু মেয়েরা পড়বেন)বাঙালি মেয়ে হিসেবে আপনি তো আর কোনদিন আগ বাড়াইয়া যায়া কথা বলবেন না । তবে যদি কাউকে বেশি ভালো লাগে সেই ক্ষেত্রে--অনেক ছেলেই আছে যারা অতিরিক্ত ভাব নেয় এবং আপনার কপাল ও খারাপ আপনার ভাগ্যে এরকম একজন ই জুটলো তখন আপনি তাকে ফোন দিবেন কিন্তু নিজের ভয়েস শুনাবেন না। প্রত্যেকদিন ফোন দিয়া রোমান্টিক গান শুনাবেন।গান ডেডিকেট করবেন।আস্তে আস্তে যখন দেখবেন ফোন রিসিভ করে গান চলতেছে ।এর মধ্যে ৫-৬ বার হ্যালো বলে ফেলেছে,ঐদিন আপনার ভয়েস শুনাবেন,কারণ এতে আপনার ভাব ও বাড়ল আবার ওনার ভাব ও কমল । আর আপনার একটা সুবিধা আছে,যেকোন ঝগড়ায় আপনি ই জিতবেন।কারণ--প্রতি বার ঝগড়া হইলেই বল্বেন--''অনেক সহজে তোমার হাতে ধরা দিছি তো,তাই আমার মূল্য বুঝ না ।আমার পিছনে ছেলেরা লাইন নিয়া দাঁড়ায়া থাকত।''এইকথা বলিয়া-- উহু উহু উহু (কান্না করাটা মেয়েদের জন্মগত স্বভাব বলিয়াই গণ্য করা হইল । ) ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে আপ্নে জিতা গেলেন ।
এই গেল প্রপোজ করা গল্প । এরপর তো আরম্ভ হয় খেলা। কথায় আছে --''প্রেম করছেন তো ফাসছেন।'' যেমন-
প্রেমের পর তিন বন্ধুর মধ্যে কথোপকথন-
১ম- জাহাঙ্গীর নগর যাবো পাখি দেখতে !
২য়- ভাই! আপনার না গার্লফ্রেন্ড আছে ? তারপরও পাখি দেখবেন ?
৩য়- সবাই তোর মত নাকি ? এইডা শীতের অতিথি পাখি !
আরেকটি ঘটনা--শুভ্র তার জন্মদিনের দিন গেছে ফ্রেন্ড দের নিয়ে ঘুরতে । ঘোরার পর খাওয়া দাওয়া ,আরপর এক ফ্রেন্ড এর বাসায় গিয়ে কিছুক্ষণ আড্ডা দিল । বের হইছে সকাল ১১.৩০ এ আর ফ্রেন্ড এর বাসা থেকে আড্ডা দিয়ে বের হইল ৮.০৫ এ । তখন ই তার গার্লফ্রেন্ড তাকে ফোন দিল ।--
-এই তুমি কই?
-এইতো বাসায় যাচ্ছি।
-সারাদিন কই ছিলা?
-বন্ধুদের সাথে একটু ঘোড়াঘুড়ি করলাম।
-তোমার না ৩.০০ বাজে বাসায় থাকার কথা?
-এক ফ্রেন্ডের বাসায় গিয়েছিলাম,কিছুক্ষণ আড্ডা মারলাম,তাই দেরি হইয়া গেল।
-ও আচ্ছা,ঠিক আছে। আবার যাও। ঐ ফ্রেন্ডের বাসায় গিয়াই থাকো ।আজকে বাসায় গেলে তোমার কপালে কিন্তু খারাবি আছে।কিয়ামত লাগায়া দিব,তোমার আব্বুকে ফোন দিব,আজকে আমি তোমাকে তোমার বাসা থেইকা বের করায়াই ছাড়ব,তুমি আমারে চিন না।
-আরে বাবা,ঠিক আছে,আর কোনদিন কোন ফ্রেন্ড এর বাসায় যাব না,খুশি?
-এই তুমি কি বললা?আমাকে খুশি করার জন্য ফ্রেন্ড এর বাসায় যাবা না?হ্যা?তুমি আমার সাথে মশকরা আরম্ভ করছ?
-কি বিপদ রে ভাই ? আমি এমনিতেই আর যাব না,সত্যি ।
-আচ্ছা , ঠিক আছে।যাও বাসায় যাও ।
-লাভ ইউ জান ।
-টাসসসস(ফোন রাখার শব্দ কিরকম হয় জানি না।)
এইরকম বহুত কিছু ঘটবে ঐ প্রপোজ করার পরে । বিয়া পর্যন্ত যাইতে যাইতে আপ্নে এমনিতেই কলুর বলদ হইয়া যাইবেন । (ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রে ই প্রযোজ্য,যে বেশি চালাক আর কি! ) ।
ধরেন যে এরপরেও আপনার সাহস হইল আপনি বিয়ের জন্য পার বাড়াইলেন । প্রথমে তো বাপ মায়ের ঝাড়ি শুনতে শুনতে অর্ধেক হইয়া যাইবেন । তার উপরে আপনার উপরে গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ডের চাপ। জীবন টা এক্কেবারে তেজপাতা।
অফিসে যান তো বসের ঝাড়ি,বাসায় আসেন তো বউয়ের ঝাড়ি ।অফিসে যাওয়ার পর বউ মেসেজ পাঠাবে ,আপনিও পাঠালেন,যদি একটা মেসেজ এর রিপ্লাই না দেন তাহলে আবার বলবে-তুমি আমার একটা মেসেজের রিপ্লাই দেয়ার টাইম পাও না?ঝগড়ায় ঝগড়া।
এরকম ঝাড়ি খাওয়ার চেয়ে বাপ-মা যাকে এনে দেয় তাকে বিয়ে করাই ভালো । হোক না আরেকজনের গার্লফ্রেন্ড। বিয়ার আগে আপনার গার্লফ্রেন্ড যা করত বিয়ার পরে হয়ত তার থেকে একটু কম করবে ।
আসলে সম্পর্ক জিনিসটা অনেক জটিল একটা বিষয়। হয়ত আপনি একবার ভাববেন,আপনার ভালোর জন্য হচ্ছে কিন্তু পরক্ষণেই টের পাবেন যে -আপনি এই জিনিস কখনোই চান নি । একটা সম্পর্কে আবদ্ধ থাকলে ঝগড়া বিবাদ হবেই।প্রতি লিখার মত এইটারো মূল বিষয় আছে এবং তা হল--ঝগড়া করে জীবন নস্ট না করে ঝগড়া মিমাংসার উপায় বের করুন ।
যদি কেউ আঘাত পেয়ে থাকেন তার কাছে আগেই মাফ চেয়ে নিচ্ছি।আমি জিকো ভাই এর মত রম্য লেখক না বা হামা ভাইয়ের মত ডার্ক সাইডেড জোকস ও লিখি না,ইশতিয়াক চয়ন ভাইয়ের মত সব্যসাচীও না। তাই লিখা পছন্দ না হলে ভুলত্রুটি ধরায়া দিয়েন ।