somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বোকা নারীসমাজ

২১ শে মে, ২০১৬ রাত ১০:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এইডা হইল গিয়া একটা পিরিতির শর্ট ফিলিম। (https://youtu.be/xTkX7V9M5-4). Moments নামের এই ফিলিম দেইক্ষা ইদানিং মাইয়াগো মহলে ব্যাপক কান্নার রোল পইরা গেছে।
শর্ট ফিলিমে নায়কের চেয়ে নাইকার পিরিতের ডোজ বেশি। প্রথম কিসটাও নাইকা আগে করে। ফিলিমে নায়ক একসিডেনে মইরা যায়। নাইকা অন্য পোলারে বিয়া করার পরেও নিয়মিত কবরে আইসা ফুল দেয় আর কান্দে, জামাই মাইন্ড করে না। কিন্তু কথা হইল গিয়া কথা অইডা না। ব্যাপার হইল গিয়া আমি বুঝি না। দেখা যাইতেছে পিরিতের কাহিনির ক্ষেত্রে মইরা যাওয়া একটা বড় আহ্লাদিয় এলিমেন্ট। যেই পোলা নামাজ পরেনা, মরার চিন্তা ভয় নাই সেই পোলা যখন পিরিত করে তখন তার মধ্যে এক ধরনের গাঞ্জা খাওয়া আবেগ কাজ করে যার দরুন সে কথায় কথায় মরার কথা কয়। এই যেমন পোলা যখন মোবাইলে মাইয়ার লগে কথা কইতেছে তখন একবার না একবার সে বলেই ‘আমার ভাল্লাগে না, শরিরটা ভালা যাইতেছে না, আমি মনে হয় বেশি দিন বাচুম না’ ইত্যাদি। সিনেমাতেও নায়ক মইরা যাওয়ার হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারনা করতে পারলেই সিনেমা হিট হয়। টাইটাণিক মুভিতেও নায়ক মইরা গেছিল। নাইকা মইরা গেলে পাবলিক খাইত না। আর রিকশাওয়ালারা হইতাছে গিয়া প্রেমের কিউপিড। রিকশা না হইলে পিরিত জমে না। রিকশাওয়ালারা বড়লোক হইয়া গেলেও কাপলদের স্বার্থে রিকশা চালানি ছাইড়া দেয়া উচিত হবে না।
বাংলাদেশের সামাজিক পরিস্থিতিতে এখনো মেয়েরা যথেষ্ট ব্যাক্তিত্ব এবং ভাবগাম্ভির্য বজায় রেখে চলে। আবেগ অনুভুতি ভালোলাগা ইত্যাদি প্রকাশের ক্ষেত্রেও তারা যথেষ্ট সংযত। কথায় বলে মেয়েদের বুক ফাটে কিন্তু মুখ ফুটে না। প্রেমের ক্ষেত্রেও তাই ছেলেদেরই আগে সাহস নিয়ে এগিয়ে আসতে হয়। মেয়েরা মরে গেলেও আগে প্রপোজ করবে না। ছ্যাবলামি, লুলামি ছেলেটীকেই করতে হবে। প্রথম চুমোও ছেলেদের কাছ থেকেই আসে, মেয়েদের কাছ থেকে নয়। মেয়েদের এই দুর্ভেদ্য কঠিন ব্যাক্তিত্বের বিরুদ্ধে পুরুষ সমাজে এক ধরনের গোপন ইর্ষা কাজ করে। তাই যখন কোনো ব্যাটা ফিল্মের ডিরেক্টর হয় তখন তার সু্যোগ আসে প্রতিশোধের অস্ত্র তুলে নেয়ার। বাস্তবে মেয়েদের দিয়ে যা করানো সম্ভব না সেইগুলা ভার্চুয়ালি করায়ে নিয়ে এক ধরনের বিমলানন্দ উপভোগ করে। ফিল্মে নায়ককে কঠিন ব্যাক্তিত্বসম্পন্ন মহাপুরুষ এবং নাইকাকে চুড়ান্ত ছ্যাবলা, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, ইঙ্গিতপুর্ন চাউনির অভিনয় করিয়ে বিপরিত স্রোত দেখানোর চেষ্টা চলে। বেশিরভাগ সিনেমার কন্সেপ্ট দেখে মনে হয় নায়কের চেয়ে নাইকার কুরুত যেন একটু বেশিই। প্রেমের আহবান, চুমু ইত্যাদির অফার নাইকাদের দিক থেকেই আসে বেশিরভাগ।বাংলা সিনেমা তো তাও ভাল, তামিল ছবির ডিরেক্টরগুলা ত পুরাই গাঞ্জাখোর, মোছওয়ালা বেঢপ ফিগারের নায়কের মারাত্ত্বক সুন্দরি নাইকা, ন্যাকামি যার চুড়ান্ত পর্যায়ের। নাইকা পারলে পায়জামা খুইলা নায়কের উপর ঝাপায়া পড়ে, নায়ক দেবতার মত স্থির, তিনি নড়েন না। আগে তো দেখা যাইত নাইকা ‘তুই আমার দেহ পাবি কিন্তু মন পাবি না’ বলে নিজেই মাটিতে শুয়ে পড়ছে। এখন নাইকা নায়ককে ধর্ষন করছে এই ধরনের উদ্ভট কন্সেপ্টও চলে আসছে। কোন ছবিতে যেন দেখলাম অপু বিশ্বাস সাকিব খান কে অন্য মেয়েকে বিয়ে করার অপরাধে রুমে নিয়ে ধর্ষন করার চেষ্টা করছে। আর এইবার আসতছে মইরা যাওয়ার ব্যাপার। নাইকা মইরা গেছে এই কাহিনি বেশি পাব্লিক খায় না। নাইকাকে তখনি মারা হয় যখন দুইজন নাইকা, নায়ক কাকে বিয়ে করবে সে নিয়ে চরম ডীলেমা দেখা দিছে তখন অপেক্ষাকৃত কম সুন্দরি নাইকাকে মেরে ফেলা হয়, তা সেই নাইকাকে দর্শকের ইমোশোনাল ফোকাসিং এর জন্য নয়, পথের কাটা সরানোর জন্য যাতে মেইন নাইকা নায়কের সাথে অতপর তারা সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারে। আর নায়ককে মারা হয় তাকে দর্শকের ইমোশোণাল ফোকাসিং এ আনার জন্য। শুধু এতেই ডীরেক্টর ক্ষান্ত হয়না। নায়কের মৃত্যুর পর নাইকাকে অন্য নায়কের সাথে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে দেয়া হয়না। বরং নাইকা বিয়ের পরেও নায়কের কবরে ফুল দিতে আসে এই কাহিনির অবতারনা করে নায়ককে দুনিয়া ও আখেরাতে নাইকার সমস্ত প্রেম চেটে পুটে খাইয়ে, মেয়ে দর্শকদের ইমোশোন লুটে ষোলকলা পুর্ন করা হয়।
মাইয়া মানুষ তো সাইজা গুইজা শুধু ক্যামেরার সামনে দাড়াইতে পারলেই খুশি। কাহিনিতে কিন্তু পুরুষ শাসিত সমাজের সুক্ষ কারচুপি কি বেকুব মাইয়া মানুষগুলা বুঝে?
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০১৬ রাত ১০:০৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

তোমার বিহনে কাটে না দিন

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:০৩



অবস্থানের সাথে মন আমার ব্যাস্তানুপাতিক,
বলে যাই যত দূরে ততো কাছের অপ্রতিষ্ঠিত সমীকরণ।
তোমাকে ছেড়ে থাকা এতটাই কঠিন,
যতটা সহজ তোমার প্রতিটি চুল গুনে গুনে
মোট সংখ্যা নির্ণয় করা।
তোমাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

×