সুখের সময় হাত বাড়ালেই সবাই বন্ধু হয়ে যায়। হয়ে যায় আপন মানুষ। কেউ একান্ত। আবার কারো প্রিয় তালিকাতেও সেট হয়ে যায় নিজের নাম।
ভুল মানুষেরই হয়। কিছু ভুল ইচ্ছায়, আর কিছু ভুল মানুষ নিজের অজান্তেই করে থাকে। বর্তমানে ভুলের গুরুত্বও মানুষ টাকার উপরই করে। টাকাওয়ালা মানুষের কোন ভুলই ভুলের মধ্যে পড়ে না। আর গরীবলোকের সামান্য ভুলটুকুই হিমালয়সম হয়ে উঠে সমাজে। তাই হয়তো সবাই টাকার পিছনে ছুটে। ছুটতে ছুটতে নিজের বিবেক আর মানবিকতাও হারিয়ে ফেলে কোন এক সময়।
যেকোনো মূল্যে টাকা চাই, বাড়ি চাই, গাড়ি চাই, সুন্দরী নারী চাই। মানুষকে ভাগ করে ফেলি খুব সহজেই। মানুষকে দিন দিন অন্য কিছু ভাবতে শুরুকরে দেই। কাউকে ক্ষমতাধর হাতী- কাউকে হিংস্র বাঘ-হাঁয়েনা, ছাগল, ভেড়া, কুত্তা, বিলাই কোন কিছুই আর বাদ রাখি না। কখনো কখনো শুধু টাকার জন্যই মানুষকে আল্লাহ বা ভগবানের সাথেও তুলনা করে ফেলে কেউ কেউ!
সব কিছুর মূলে টাকা। এর জন্যই মনে হয় কবিরা টাকাকে অনর্থের মূল বলেছেন। কিন্তু বর্তমান সমাজে টাকাই সব। যার টাকা আছে- তার কাছে পৃথিবী ছোট্ট একটা গ্রহ মাত্র। আর যার কাছে টাকা থাকেনা- তার কাছে যেন নিজের গ্রামটাকেইে মনে হয় সমগ্র পৃথিবী।
যতো কথাই বলি আর যতই অনর্থ বানাই টাকাকে, আসলে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে টাকা ছাড়া জীবনটাই অচল। সচল থাকেনা যেন কিছুই- প্রিয়ার ভালোবাসা, সন্তানের শ্রদ্ধা, বউয়ের আদর আর সমাজে মূল্যায়ন সবই শেষ। সব কিছুতেই নিজেকে মূল্যহীন করে তুলে, টাকাহীন মানুষের মূল্য খুঁজে পাওয়া যায় না। আমাদের সমাজ কারো গুণ দেখে মূল্যায়ন করতে জানেনা। যার যতো টাকা আছে তার ততো মূল্য-গুরুত্বপূর্ণ মানুষ তারাই সমাজের।
টাকার প্রয়োজন অবশ্যই আছে, থাকবে এবং অপরিসীম। তাই বলে কি টাকায় ব্যক্তির মূল্যায়ন করা ঠিক...? টাকায় মানুষকে ভাগ করা কতোটা যৌক্তিক...? সমাজ থেকে বৈষম্য কি দূর হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে...? মানুষ কি কখনো শুধু মানুষ হিসেবে পরিচিতি পাবে...? দূর হবে কি সমাজ থেকে মানুষের এই বিভাজন...?
আমি গরীব বলেই হয়তো এসব ভাবছি। যদি আমারও অঢেল টাকা থাকতো, তাহলে হয়তো আমিও তখন এগুলো ভাবতাম না। মনেই হতো না এগুলো। কারো মুখে এসব শোনে উল্টো বলতাম- শালা আঁদার ব্যাপারী হয়ে জাহাজের খবর খুইল্যা বইছে;!
গরিবি আমার অহংকার হয়েই থাকুক....
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:২৮