আমি একটি হিন্দু মেয়েকে ভালবাসতাম।আর আমি ছিলাম মুসলিম পরিবারের একজন স্ব-ঘোষিত সংশয়বাদী। তাই আমাদের সম্পর্ক দুই পরিবারের কেউ মেনে নেয়নি।
তবে মেয়েটি তার কথা রেখেছিলো। আমরা বিয়ে করলাম এবং সমাজ থেকে অনেক দূরে চলে আসলাম। বিয়ের দ্বিতীয় বছরে আমি যমজ পুত্রের পিতা হই। আর তার পাঁচ বছর পর আরেকটি কন্যা সন্তান ।
এভাবেই আমাদের বিশটি বছর কেটে যায়। একদিন আমার এক পুত্র ঘোষণা করলো সে ঈশ্বরে বিশ্বাসী না। অর্থাৎ সে নাস্তিক। আমি ও আমার স্ত্রী কেউ এ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছিলাম না। তার কিছুদিন পর আমার কিশোরী কন্যা এসে আমায় বলে, " বাবা - আমার মনে হয় বুদ্ধার কথাই সঠিক।" প্রতিউত্তরে আমি, " তোমার কাছে যা সত্য বলে মনে হয় তাই তুমি গ্রহণ করো। "
সেদিন ছিলো শুক্রবার আমার মনে আছে। ফজরের আযানের সাথে আমার অন্য পুত্র ঘুম থেকে উঠে বললো, "বাবা আমি নামাজে যাই, আল্লাহ ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই।"
আমরা খুব গরীব ছিলাম, তাই আমরা পাঁচজন এক কামরার একটি ঘরে এবং আমাদের সাথে ঈশ্বর, ঈশ্বরহীন, আল্লাহ, বুদ্ধ, আমাদের দেবতা ও ঈশ্বরের খোঁজকারী বাস করতে লাগলো।
আমাদের অন্দরমহলের কথা দূরে সামাজিক মানুষ গুলোর কানে যায়। একদিন রাতের খাবার শেষ করে আমরা নিজেদের মধ্যে কথা বলছি, এমন সময় আমাদের দরোজায় কারা যেনো কড়া নাড়ে। দরোজা খুলতেই দেখি সভ্য সমাজের মানুষরা আমাদের বাড়িতে আসে। উপহার হিসেবে তারা নিয়ে আসে কিছু ধারালো ইস্পাত।
আমাদের সেই এক কামরার রুমে তখন পৃথিবীর সব শান্তি বিরাজ করছে। আমার শেষ নিঃশ্বাস পরার আগে আমি শুনেছি আমার কিশোরী মেয়ে টি আমাকে প্রশ্ন করে, " বাবা - যারা মেরে গেলো ওদের ধর্ম কী? "
দর্শক |`| অক্ষর অনীক
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৬