পেঁয়াজ একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল। মসলা ও সবজি হিসেবে এর ব্যাপক ব্যবহার। বর্তমানে দেশে মাত্র ২৮৫.৬৬ হাজার একর জমিতে প্রতি বছর প্রায় ৭ লক্ষ ৬৯ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উত্পাদন হয়। পেঁয়াজের চাষ শুধু শীতকালেই নয় এখন সব ঋতুতেই চাষ হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে পেঁয়াজের দু’টি ধরন রয়েছে। লাইলা এবং ছেঁচা। পেঁয়াজ থেকে পেঁয়াজ উত্পাদন হলে তাকে স্থানীয়ভাবে লাইলা বলে এবং বীজ থেকে পেঁয়াজ উত্পাদন হলে তাকে স্থানীয়ভাবে ছেঁচা বলে। ‘লাইলা’ থেকে ‘ছেঁচা’ পেঁয়াজের খরচ প্রায় ৫ গুণ বেশি হবে। কিন্তু বর্তমানে কৃষকদের মাঝে উত্সাহ জাগিয়ে চাষ হচ্ছে উচ্চ ফলনশীল জাতের পেঁয়াজ। উত্তরাঞ্চলের মাটি পেঁয়াজ চাষের জন্য উপযোগী। এ অঞ্চলের কৃষকরা সাধারনত ভারতীয় সুখসাগর ও হুকো, বোম্বাই ও সোনালি জাতের হাইব্রিড পেঁয়াজ আবাদ করছেন। চারদিকে তাকালে দেখা যায় মাঠের পর মাঠ শুধু পেঁয়াজের ক্ষেত। ইতোমধ্যে চাষিরা পেঁয়াজ তুলতে শুরু করেছেন।
স্থানীয় বাজার ও দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহর থেকে আসা মহাজনদের কাছে পাইকারি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। বিঘাপ্রতি ২৭০ থেকে ৩০০ মণ পেঁয়াজ উত্পাদন হচ্ছে। যার প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ৮শ’ থেকে ৯শ’ টাকা দরে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পারের ফলনের পাশাপাশি দাম বেশি পাওয়ায় পেঁয়াজ চাষিরা এবার খুশি। কৃষকরা জানান, ভারতীয় এলসির পেঁয়াজ বাজারে আসার কারণে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বাইরে থেকে পেঁয়াজ আমদানি না করলে কৃষকরা উচ্চ ফলনশীল পেঁয়াজ চাষের উদ্বুদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি এ জাতের পেঁয়াজের চাষ সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। চাষিরা শ্রম দিয়ে পেঁয়াজ চাষ করলেও বিনা শ্রমে মহাজন, জোতদার, আড়তদার আর ফড়িয়ারা সিংহভাগ লাভ ঘরে তুলছে। ঠকছে কৃষকরা। সরকারিভাবে সহযোগিতা ও উন্নত প্রশিক্ষণ পেলে পেঁয়াজ চাষের উপযুক্ত উত্তরবঙ্গের মাটিতে ব্যাপক পেঁয়াজ চাষ হবে। বিষয়টি কৃষি বিভাগের নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন কৃষকরা।