সিলেটবাসীর কাছে সাতকরা একটি অতি পরিচিত ও টকজাতীয় ফল। সাতকরার ঘ্রাণই সাতকরার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। অনেকটা কমলালেবুর মতো গোলাকার এই সাতকরা সিলেট অঞ্চলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। আগে সিলেট ছাড়া বাংলাদেশের অন্য কোথাও এই সাতকরা দেখা না গেলেও বর্তমানে সিলেট অঞ্চল ছাড়িয়ে দেশ বিদেশের জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। প্রবাসে বসবাসকারী সিলেটবাসীর কাছে এর চাহিদা ব্যাপক।
আর একটি কথা না বললেই নয়, এটি ভারতের আসামের পাহাড়ি এলাকার আদি ফল। সিলেটের জৈন্তাপুর, গোয়াইন ঘাট, জাফলং ছাড়াও এখানকার পাহাড়ি টিলায় সাতকরার চাষ হয়। লেবু গাছের মতো সাতকরা কাটা ভরা গাছ যার উচ্চতা প্রায় ২০ থেকে ২৫ ফুট পর্যন্ত দেখা গেছে। ফাগুন মাসে ফুল আসে ও জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ়ে ফল হয়। সিলেটে এর প্রচুর চাহিদার কারণে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের আসাম ও মেঘালয় থেকেও আমদানি হয়। সাতকরা একটি ভিটামিন সমৃদ্ধ ফল এতে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস আছে। এমন কি ঔষধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। উল্লেখ্য যে সাতকরার আচার সিলেটের মনিপুরী বাসীদের হাতে বানানো বিখ্যাত আচার।
গরুর মাংসের সাথে সাতকরা একটি বিশেষ মজাদার ও জনপ্রিয় মুখরোচক খাবার। এই সাতকরা গরুর মাংসের সাথে রান্নায় মাংসের স্বাদ দ্বিগুণ ও অতুলনীয়। আমার ধারণা যে একবার এই সাতকরা সহ গরুর মাংসের স্বাদ পাবেন তিনি বারবার খেতে চাইবেন। স্বাভাবিক নিয়মে আমরা যেভাবে গরুর মাংস রান্না করি, সেখানে শুধু এক কেজি গরুর মাংসে অর্ধেকটা সাতকরা (লেবুর মাঝের অংশটুকু যেভাবে কেটে বাদ দিয়ে থাকি) এবং গরম মসলার পরিবর্তে এক চা চামচ পাঁচফোড়ন গুঁড়ো দিতে হবে। প্রেসার কুকারে রান্না করলে মাংসের সাথে একেবারে দিয়ে দিতে হবে আর সাধারণ চুলায় রান্না করলে মাংসটা যখন অর্ধেক সিদ্ধ হয়ে আসবে তখন সাতকরা দিয়ে দিলেই হবে ।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:২৮