স্বাধীনতার প্রায় ৪৮ বছর পরও আমাদের এসব দেখতে হচ্ছে !! এর জন্যই কি তাঁরা যুদ্ধে নেমেছিলেন?
ব্যপারটা খুবই আশঙ্কাজনক। মতের মিল না হলেই একপক্ষ আরেক পক্ষকে কিছু বিশেষ বিশেষায়িত করে দিচ্ছ। এতই কি সোজা !!
কোন কিছুই কারো জন্য ফিক্সড নয়। মানুষের মনও ফিক্সড কিছু। উদ্যাম প্রেমে মত্য প্রেমিক যুগলেও ফাঁটল ধরে। সারাজীবন একসাথে থাকার সংকল্পও ভেঙে যায়, দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এককালে তোমায় ভালোবেসেছিল বলেই যে একালেও তোমায় ভালোবাসবে- তা কিন্তু নয়।
তেমনি একজন দেশপ্রেমিক, সর্বোচ্চ ত্যাগীর বংশধরও তারমত বীর হবে, তার মত শৌর্য্যের অধিকারী হবে, তা কিন্তু নয়। বংশের নিচে জেনেটিক পরিবর্তন আসে। দেশপ্রেমিকের রক্তে দেশদ্রোহীর বীজ উপ্ত হতেই পারে। তার দ্বারা দেশের উন্নতি-ই হবে, এ কথা কিন্তু বলা যায় না।
আমার জানামতে, মুক্তিযোদ্ধারা একটা পরিমাণ সম্মানী পান। একজন মুক্তিযোদ্ধা শুধুমাত্র তাঁর সন্তানের উপর নির্ভর করবেন, এটা হতে পারে না। তার জন্য যথাযথ সম্মানী ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হোক। সন্তান তার পিতা-মাতাকে দেখবে, এটাই আমাদের কালচার। ৯৯.৯৯% ক্ষেত্রে দেখে থাকে। সুতরাং সন্তান পিতার সুবিধা পাবে, মেনে নেয়াই যায়। কিন্তু তাই বলে নাতী!!! এটা কি করে সম্ভব!!! কোনো দাদা-দাদী তাঁর নাতীর উপরে নির্ভর করবেন!! হয়তো ০০.৯৯% হতে পারে। সরকারের উচিৎ তার লোকবল নিয়ে এদের একটা ব্যবস্থা করা।
আর দেশটা শুধু একটা বিশেষ গোষ্ঠীর নয়। দেশটা সবার। আর পাব্লিক সেন্টিমেন্ট ম্যাটারস। সংস্কার প্রয়োজন। প্রায় অর্ধশত বছর আগের চিন্তা-চেতনা এই যুগে চলে না। ৭১ এ এখনকার প্রযুক্তি ছিল না। কিন্তু দেশের প্রতি তাঁদের টান অতুলনীয় ছিল। তাঁরা যেভাবে ভেবেছেন, আজকের আমরা কি সেভাবে ভাবতে পারছি? কিংবা আমরা যে দেশ চাচ্ছি, তাঁরা কি সেটা রেখে যেতে পেরেছেন।
কোটা থাক, যার দরকার সে পাক। কিন্তু একজন স্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধার বংশধরের জন্য সুবিধার ব্যবস্থা করে, আরেকজন অসহায় পরিবারের প্রতি দৃষ্টিপাত না করার জন্যই কি সেদিন ডাক এসেছিল?
এখানে দু'পক্ষ হবে কেন? এখানে কাঁদা ছোঁড়াছুড়ি হবে কেন? সবাই বাংলাদেশি। যার প্রয়োজন সে পাবে, যার প্রয়োজন নেই, সে কেন পাবে? দেশের প্রতিটা নাগরিক সমান, সংবিধান তা-ই বলে। এখানে কোন বিভাজন চলবে না। যদি তাই হয়, তবে সংবিধান পরিবর্তন করে তাঁদের এলিট ঘোষণা করে বাকি সবাইকে দ্বিতীয় শ্রেণি করা হোক। এলিটের পরিবার বংশ পরম্পরায় সব খাবে, আর দ্বিতীয় শ্রেণি-
দাসের মত তাদের সেবা করে যাবে। প্রাগৈতিহাসিক হয়ে যাক বাংলাদেশ।
দেশটা আমার। দেশটা প্রতিটা বাঙালির। এখানে কেন গুলি খেয়ে রাস্তায় পড়ে থাকতে হবে? এদেশ কি তবে আমার নয়????
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:৩৭