খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠলাম। আমি সাধারণত ভোরেই উঠি। যাই হোক, বিছানা থেকে নেমে বাইরে তাকালাম। বেশ চিৎকার চেঁচামেচি হচ্ছে বাইরে। আমাদের এলাকায় আজ ভ্যাটমন্ত্রী এসেছেন। আমাদের ভ্যাটমন্ত্রী আবুল মাল ট্যাক্সুল মুহিত একজন সৎ মানুষ। তার দৈনিক খরচ ১০০০ টাকা। তিনি তার উপর ৭.৫% হারে প্রতিদিন সরকারকে ৭৫০ টাকা ভ্যাট দেন। আমি বেশ কিছুক্ষণ মুগ্ধ হয়ে জননেতা ট্যাক্সুল মুহিতের ভাষণ শুনলাম। তিনি বলছেন, প্রতি মিনিট সময় অপচয়ের জন্য আগামি মাস থেকে ভ্যাট দিতে হবে। নাহ। তাহলে আর দেরি করা উচিত হচ্ছে না।
বিছানা থেকে নেমে টয়লেটে গেলাম। টয়লেটের কমোডে বসে প্রাকৃতিক কর্ম সম্পাদন করতে করতে দাঁত মাজতে থাকলাম। টয়লেটে যত কম সময় থাকা যায় ততই ভালো। ৭.৫ মিনিটের বেশি টয়লেটে থাকলেই তো ভ্যাট দিতে হবে। তাছাড়া দেরি হয়ে যাচ্ছে। ঠিক টাইমে না পৌঁছলে আবার ভ্যাট দিতে হবে। দরকার কি বাপু?
একসময় নাকি এদেশে শুধু পন্যের উপর ভ্যাট দিতে হত। আজকাল অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা, বাসস্থান, শিক্ষা সব কিছুর উপরই ভ্যাট দিতে হয়। কে জানে, হয়ত এগুলোও পন্য! আমি মুখ্যু সুখ্যু মানুষ। বুঝিনা অত শত।
তাড়াতাড়ি নাকে মুখে কিছু দিয়েই গার্মেন্টসের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। ২০৭৫ সালে ইন্টারমিডিয়েটের পরে যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স না পায় তারা পড়ালেখা শেষ করে আমার মত গার্মেন্টসে বা কারখানায় চাকুরি করে। কয়জনের আর ৭.৫% ভ্যাট দিয়ে প্রাইভেটে পড়ার সামর্থ্য আছে বলুন?
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ২:১৫