আমি রাজনিতিবিদের মধ্যে যে কয়েকজন মানুষ কে খুব বেশি পছন্দ করতাম তাদের মধ্যে জুনাইদ আহমেদ পলক একজন। কারণ তার মধ্যে ছিল পরিছন্নতা এবং দায়বদ্ধতা।
কিন্তু যেদিন থেকে দেখেছি গুতানুগতিক নোংরা রজনিতিবিদের মতো দায়িত্বহীন, অযৌক্তিক, মিথ্যা এবং তেল সমৃদ্ধ কথা বলা এবং কাজ শুরু করেছেন তখন থেকে আর ভালো লাগে না। তবুও ভেবেছিলাম দলের চাপের মুখে অনেক কথাই বলতে হয়, এই বলেই নিজেকে সান্তনা দিয়েছিলাম। ধীরে ধীরে অনেক নিচে নামাতে থাকেন তার ব্যক্তিত্ব। এই ব্যাপারটা আমার জন্য যতখানি কষ্টের তার থেকেও বড় বিপদের বাংলাদেশের জন্য। আসলেই বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য।
অনেক দলকানা, বিবেকান্ধ, দালাল, বিক্রিত বিবেক ওয়ালাদের আমার কথাটা খারাপ লাগতে পারে। তাই প্রমাণ সংযুক্ত করলাম।
০৮-০১-২০১৯ তারিখ দুপুর ১ টা ৩৫ মিনিটে "বাইকে চড়ে প্রথম দিন অফিসে..." শিরোনামে দুইটি ছবি প্রকাশ করেন। সেই ছবিতে দেখা যায় তিনি হেলমেট ছাড়া বাইকে বসে আছেন, যা সুস্পষ্ট শাস্তি যোগ্য অপরাধ এবং তিনি একজন আইন ভঙ্গকারী অপরাধি। তিনি জনগনের প্রশংসা কুড়ানোর যে বুদ্ধি করেছিলেন, সেটার বিপরীত ঘটনা ঘটলো। বরং আইন অমান্য করে। এই পর্যন্ত তেমন কিছু বলার নাই। স্বাভাবিক চিত্র এটা বাংলাদেশের, তবে আইন প্রণেতা এবং রক্ষক হয়ে এমন কাজটা কেমন তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
রোষানল থেকে মুক্তি পেতে তিনি দের ঘণ্টা পর ০৮-০১-২০১৯ তারিখ দুপুর ৩ টা ০১ মিনিটে পূর্বের দুইটা ছবির সাথে আরেকটি ছবি যুক্ত করলেন। যেটাতে দেখা যাচ্ছে তিনি হেলমেট পরিহিত অবস্থায়। আমার আপত্তি হল এখানেই। কারণ এডিট করা অথবা অন্য কারো অথবা পূর্বের কোন ছবি হতে পারে, সে তর্কে যাচ্ছিনা। কারণ মূল বিষয় হল, উনি মিথ্যাচার করেছেন।
প্রথম দুটি চালকের প্যান্ট নীল রঙের, পড়ে যুক্ত ছবিতে চালকের প্যান্টের রঙ কালো। এই টুকুনই যথেষ্ট প্রমাণ করার জন্য। পরে তিনি নিজেও ধরা খেয়ে একদিন পর ০৯-০১-২০১৯ তারিখ সকাল ৬ টা ২৬ মিনিটে লিখলেন, "তাড়াহুড়ো করে যাওয়ার জন্য আমি যে বাইকের সাহায্য নিয়েছি, তার কাছে কোনো বাড়তি হেলমেট ছিল না। আর ওটা রাইড শেয়ারিংয়ের বাইকও ছিল না, ব্যক্তিগত বাইক ছিল।"
এখন কথা হচ্ছে তাহলে তৃতীয় ছবিটি কেনো সংযুক্ত করলেন? তিনি পরে যে মন্তব্য করেছেন, সেখানেও অনেক গরমিল আছে, তবে সেদিকে যাচ্ছি না।
অনেকের কাছে ব্যাপারটা নিয়ে এত হৈচৈ করার মতো তেমন কিছু দেখবেন না। তাদের জন্য বলা প্রয়োজন।
এরকম একজন দায়িত্ববান ব্যক্তি কি করে এত বড় মিথ্যাচার করতে পারে। তিনি যদি প্রথমেই লিখতেন তবে সেটা মন্দের ভালোর দিক থেকে শোভনীয় ও গ্রহণযোগ্য হতো। কিন্তু তিনি সেটা না করে, নিজেকে সঠিক প্রমাণ করার জন্য প্রতারনার আশ্রয় নিলেন। সামান্য পরিমাণ বিবেকে বাধে নাই এই জঘন্য কাজ করতে। বিনা নির্বাচনে দুইবার ক্ষমতা গ্রহণ করা একজন মানুষের পক্ষে এটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা।
একজন মানুষ কতটা অনৈতিক হলে এরকম একটা বিষয় নিয়ে এমন করতে পারে। সে যে একজন নোংরা মন মানসিকতার মানুষ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এরকম ব্যক্তির দ্বারা জাতি কি পেতে পারে তা সহেজেই অনুমেয়।
বিগতে বছরে কি কি করেছে তার খতিয়ান দিলে শেষ হবে না। আর যাই হোক এদের দ্বারা দেশের কল্যাণ হতে পারে না।
আসলে পলক সাহেবকে কিছু বলা আমার উদ্দেশ্য নয়। আমার উদ্দেশ্য এই সমস্ত ভণ্ড দুর্নীতিবাজ অভিনেতাদের যারা সমর্থন করেন তাদের নিয়ে। এদের দালালি করে কি পেতে পারেন। এদের দালালি করতে গিয়ে নিজেদেকেই ওদের থেকে বড় ভণ্ড বানিয়ে ফেলছেন। আর ওরা এসব ভন্দামি করতে পারে শুধু মাত্র আপনাদের কারণে। এর সম্পূর্ণ দায়ভার সেই সকল সমর্থনকারী জনগনের।
রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকবে এবং থাকতে হবে। কিন্তু নৈতিক, মানবি্ক এবং অধিকারের জায়গাগুলতে বিবেকবান এবং দাইত্তবান হওয়া অত্যন্ত জরুরী। এর কোন বিকল্প নাই। আর অধিকারের কথা বলতে গেলে কোন ধর্ম, চেতনা বা কোন দলের ট্যাগ দিয়ে কথা বলা ছাড়ুন।
বাংলাদেশকে সুন্দর করা আপনার আমারই দায়িত্ব। অন্য কেউ এসে ঠিক করে দিয়ে যাবে না।
https://web.facebook.com/zapalak/posts/2167884173250128
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:০২