আমার নানা প্রায় দেড় বছরের মতন বিছানায় পরে থেকে অনেক কষ্ট করে মারা গেছেন। পায়খানা প্রসাব সব বিছানায় করতেন। টের না পাওয়া পর্যন্ত সেই অবস্থায় থাকতে হত। সবাই এসব কাজ করতে চায় না। আমার ছোট খালামনি অনেক খেটেছেন। তবুও তো একটা মানুষের জন্য সবাই ২৪ ঘণ্টা সময় দিতে পারেনা।
২০০৪-০৫ এর দিকে রংপুরে একদিন এমন একজন রিক্সাচালক পেয়েছিলাম যিনি মুক্তিযোদ্ধা। তিনিও একদিন অসুস্থ হবেন। টাকা অভাবে চিকিৎসা করাতে পারবেন না। তার পাশে থাকার সময়টাও হয়ত তার পরিবারের হবে না। কারন কাজে না গেলে না খেয়েই থাকতে হবে। বিছানায় কষ্ট করে পরে মরবেন। যদি তার একখানা মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট থাকে এবং মরার পর সময় মত কেউ খবর দেন থানায় তবে হয়ত একজন ম্যাজিস্ট্রেট তার দল নিয়ে এসে গার্ড অব অনার দিয়ে চলে যাবেন। আর যদি কেউ না জানান তবে অন্য দশজনের মতই কবরে যাবেন। কাফন এর টাকাটাও হয়ত অন্যের সাহায্যে কিনতে হবে।
গোলাম আযাম সাহেব..... সত্যিকারের সফল বলতে যা বুঝায় তিনি তাই। জীবনটা তার রাজ করেতেই গেল। পূর্ব পাকিস্থান এবং বাংলাদেশ দুই সময়ই দাপটে কাটালেন। ২০০০ সালে তিনি অবসরে গেলেন। যখন তার বয়স ৯০, আর কিছু দিন পরই শয্যাশায়ী হবেন তারপর চলে যাবেন পরপারে। এত তার পরিবারের কিছু টাকা হলেও ব্যয় হত, কিছু মানুষের হলেও পরিশ্রম হত। কিন্তু আমরা বরাবরই সেবাপরায়ন জাতি। তাই এই মহান মানুষটির সকল দায়িত্ব রাষ্ট্র নিয়ে নিল। উনি হুইল চেয়ারে বসে থাকবেন, ৪ জন সেই হুইল চেয়ার তুলে ওনাকে নিয়ে যাবেন। সামনে পিছনে ডানে বামে থাকবে পুলিশ, তাকে পাহারা দেবার জন্য, কেউ যেন তার ক্ষতি করতে না পারেন। হাসপাতালে রাজকীয় হালে রাখা হবে। ২৪ ঘণ্টা সেবার জন্য প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সেবিকা। ওষুধপত্র যা লাগে সব সরকারি খরচে চলবে। আমাদের জন্য সব থেকে বড় পাওয়া হল অনার হাগুমুতু পরিষ্কারও রাষ্ট্রীয় ভাবে করা হবে। আমার নানার মত তাকে ১০-১৫ মিনিট এর জন্যেও হাগুমুতু নিয়ে থাকতে হবে না।
স্যালুট তোমায় গোলাম আজম। আসলেই আমরা বাংলাদেশীরা তোমার হাগুমুতু পরিষ্কারেরই যোগ্য . . . . . . . . .