হঠাত শূন্যতা ঘিরে ধরা বিকেলে কিংবা হরদম যখন “চাওয়া গুলো না পাওয়ায় পরিনত হওয়া” দিনগুলোতে অনেকেই জেগে থাকে । তোমার আমার মত ঝিমায় না , সত্যি জেগে থাকে । দৃপ্ত পায়ে না হোক নড়বড়ে পায়ে হলেও সামনে এগিয়ে যাওয়া টা চালু রাখে । কেন জানি মনে হয় বাংলাদেশের লেখালেখি গুলো খুব বেশী অনুপ্রেরণা বা জাতীয়তা বোধের সচেতনতা বিহীন । উদাসীনতা গ্রাস করে অনেক লেখাতেই । চিরসুখীজন নিয়ে যে কল্পনার জগত তৈরী করে রেখেছে অনেকে, বাস্তবতার সাথে তার অনেক দুরত্ব ।
এড়িয়ে যাই আমরা । আজকের এই সময়ের তরুন যুবকরা অনেক কিছুই এড়িয়ে যান । জানতে চান না , জানাতেও চান না । ইতিহাস - ঐতিহ্য, মনুমেন্ট - মুভমেন্ট সমন্ধ্যে তাদের যত বিতৃষ্ণা । কেন হাজার বছরের ইতিহাস বলা হয় আমাদের । হাজার বছর বাদদেন আমাদের বিগত ৭০বছর কে কে জানেন হাত তুলেন । এতো কম হাত কেন ??? বার ভুঁইয়া চিতা বাঘ ছিলো জানেন আপনি । মীরজাফর বিশ্বাস ঘাতক ছিলো কিন্তু পলাশীর প্রান্তরে চেয়ে থাকা দর্শক কম ছিলো না সেদিন । এই ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া দর্শক গুলো ২০০ বছর ইংরেজদের গোলামী করেছে ও কিছু জটিল জিনিস শিখেছে । সেদিন একটি করে নুড়ি পাথর ইংরেজ সৈন্যদের ছুড়ে মারলেও এই ২০০টা বছর বেঁচে যেত হয়তো । কিছু অপ্রয়োজনীয় কালচার আর তাদের শেপে সভ্য হওয়ার কসরত দিয়ে গেছে ইংরেজ বাবুরা । আমলাতন্ত্র একটা তাদের বেস্ট উপহার । এই আধুনিক যুগেও আমার দেশ নোটাংশ আর পত্রাংশ থেকে বেরুতে পারে নি । পারবে কিনা তা ঠিক করবে আগামী প্রজন্ম ?? গোলামী চায় নাকি নিজেদের মত কিছু করতে চায় মালয়েশিয়া তাদের সফলতার কারণ ঘেটে আমার যা মনে হয়েছে তাঁরা আমলাতন্ত্রটা পরিবর্তন করে বেস্ট প্লানিং ও ভিশন ঠিক করতে পেরেছে জাতিগত ভাবে । ভিয়েতনাম পরিশ্রম ও সমাজতন্ত্রের নতুন ধারনায় এগিয়ে যাছে বিগত ১০বছর ধরে । কারণ আমরা লক্ষ্যটাই খুঁজে পাচ্ছি না হয়তো ।
বিটিভির খবরের আগে আমাদের স্বাধীকার আন্দোলনের যে মনুমেন্ট স্মৃতিসৌধ সেটা নিয়ে কিছু বলি । আমাদের জাতীয় স্মৃতি সৌধ এর সাত জোড়া ত্রিভুজাকার দেয়াল দিয়ে তৈরী । জানেন এই সাতটা দেয়াল কিসের নির্দেশক । কি বললেন??
সাত জন বীরশ্রেষ্ঠ জন্য ???
ভুল জানেন আপনি । সৌধটি সাত জোড়া ত্রিভুজাকৃতির দেয়াল নিয়ে গঠিত। দেয়ালগুলো ছোট থেকে ক্রমশঃ বড়ক্রমে সাজানো হয়েছে। এই সাত জোড়া দেয়াল বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সাতটি ধারাবাহিক পর্যায়কে নির্দেশ করে। শুনুন তবে । ১৯৫২-র ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৬ শাসনতন্ত্র আন্দোলন, ১৯৬২ শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ এর গণ-অভ্যূত্থান, ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ - এই সাতটি ঘটনাকে স্বাধীনতা আন্দোলনের পরিক্রমা হিসাবে বিবেচনা করে সৌধটি নির্মিত হয়েছে। এই সাতটি আন্দোলনতো জানা উচিৎ তাহলে আপনার আমার মধ্য থেকে ব্যক্তিপূজা কর্পূরের মত উড়ে যাবে রয়ে যাবে দেশপ্রেম , এবং জাতীয়তাবোধ ।
আজ একটু বলি ।
১৯৫২
বাংলা ভাষাভাষী গোষ্ঠির প্রথম এই অধিকার সচেতনতা এক অনন্য সাধারণ ঘটনা । বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে আপনার জানা উচিত । বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) সংঘটিত একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন। মৌলিক অধিকার রক্ষাকল্পে বাংলা ভাষাকে ঘিরে সৃষ্ট এ আন্দোলনের মাধ্যমে তৎকালীন পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণ দাবীর বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ ধারণ করলেও বস্তুত এর বীজ বপিত হয়েছিল বহু আগে, অন্যদিকে এর প্রতিক্রিয়া এবং ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী।
“১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তানের উদ্ভব হয়। কিন্তু পাকিস্তানের দু’টি অংশ - পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক ও ভাষাগত দিক থেকে অনেক মৌলিক পার্থক্য বিরাজ করছিল। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান সরকার ঘোষণা করে যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। “ কিন্তু মেনে নেইনি তখন কার তরুন যুবা ছাত্রসমাজ । এখন কার মত তখন যুবকরা এতো দলীয় তল্পী বাহক ছিলেন না ।
“১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি (৮ ফাল্গুন ১৩৫৮) এ আদেশ অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু সংখ্যক ছাত্র ও প্রগতিশীল কিছু রাজনৈতিক কর্মী মিলে মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের কাছাকাছি এলে পুলিশ ১৪৪ ধারা অবমাননার অজুহাতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। গুলিতে নিহত হন রফিক, সালাম, বরকত-সহ আরও অনেকে। শহীদদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়ে ওঠে। শোকাবহ এ ঘটনার অভিঘাতে সমগ্র পূর্ব পাকিস্
তানে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।“ বাংলা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পায় ।
আমরা বেঁচে যাই আর প্রথম পদক্ষেপ রচিত হয় স্বাধীনতা অর্জনের পথে । ইন্টারনেটেই পড়তে পারেন উইকি , গুগুল কিয়ের লাই আছে । গুগুল শেখাক কারণ বই পড়ার সময় তো আপনার নেই ...
কাল বলবো ১৯৫৪ এর কথা ।। আপনিও জানাতে পারেন অন্যদের ...
আগামী প্রজন্ম হোক ইতিহাস - ঐতিহ্য সচেতন ।