দেহ-ধাতুর কম্পাস কাঁটা দিয়ে খুঁড়ে চলেছি পার্থিব মাটির কঙ্কাল, ভেঙ্গে পড়েছিল বন্ধুত্ববোধক কারা যেন।
জাহাজের ডেকে বসে তাড়া করছি সীমান্তবর্তী এক মাঝির নৌকো, হিম সাগরের বায়ু পৌঁছে দিলো এ কোথায়; উপকূল সমবর্তী লাল কাঁকড়ার গর্তে চোখ রাখলাম, আমার উপুড় শোয়া বিজ্ঞ চোখ দেখলো সমুদ্র নিচ থেকে পণ্যবাহী জাহাজের তলদেশ -- এই ভূমির উপর তবে কি বহুদিন হলো ডুবে আছি! আমার পাশেই বসে আছে অকেজো জাহাজ, সূর্য; অথবা আমার পাশে বসে আছে ডুবে যাওয়া প্রাচীন নাবিকের পোষাক, পতাকা। জিভ রাখলাম অগ্নি পাহাড়ের জ্বালা-মুখে-- লাভা পোড়া জিভে লেগে আছে আগুনের স্বাদ, দেহের ভিতর পাক খাচ্ছে গলিত হীরের সুগন্ধ তরল-- নাম রাখলাম দেহহীন। আধ-কাটা গলা দিয়ে বের হচ্ছে হীরে রক্ত- স্রোত। আর আমার জিভটা নেমে গেছে মইয়ের মত পৃথিবীর টগবগে লাল কেন্দ্রে। পৃথিবীর কেন্দ্র উঠে এসে ভর করছে মগজে -- ওজনহীন শূণ্যতা মেধার ওজনে। সাপ গিলে ঘরে ফিরলাম -- বাবা তুমি কই! জিভের প্রতিস্থাপনে চক্চকে কালো ফণা, জিন্সের নিচেই আছে তেলতেলে লেজ; সর্প ফণার উপর দিয়ে গড়িয়ে নামছে খাদ্য স্বাদ। অজান্তেই আমি বমি করবো অনন্ত নীল ফুল অথবা সময় -- বের হচ্ছে লাভা পোড়া জিভ, পাকস্থলি, মগজের পেস্ট, না-হজম জ্যান্ত কাল-সাপ। জীবনের অমল ধবল বক্ উড়ে গেলো নদী কূলে। ভোরবেলা কীর্তণ গাইছে হসপিটালের মূর্খ সুইপার। ঘোরের ভিতর বৃষ্টি হলো খুব।
আর জলের উপর আমার প্রকৃত সত্য ছায়া ইরেজার ঘসে তুলে ফেলে, আমি চাই রক্তপাত হোক ছায়ার বিকল্পে। এই ছায়া মানে প্রতি-আমি -- ওর ভেতরেও জেগে উঠুক সগর্ভ নার্ভ, রক্ত যন্ত্রনার ভ্রম। পাখির পালকে জন্ম নিচ্ছে শ্বেত পালকের ব্যথা। ঘন কুয়াশার ভিতর এক দল সাদা উটের বিহ্বল ডাকের অতলে ভিজে যাচ্ছে হিম নগ্ন দেহ। অপঘাতে মৃত্যর পূর্বেই যাদের অসূর্য লিঙ্গ ভূত হয়ে যায়, তাঁরাই লিখছে পেত্নীযোনির সংকেতময় ভাষা; তুমি কি বুঝবে; কি গাইবে! চামড়ার উপর পড়ছে হাড়ের প্রলেপ। পাদ্রী পোষাকের মত ভোরের জমাট কুয়াশা-দেয়ালে চেয়ার পোড়া কয়লা দিয়ে কে লিখলো -- মানি না রাত্রির উর্বরতা, সৃজনবেদনা।