৬০ পরবর্তী বাংলাদেশ কেমন ছিল এটা আমি দেখিনি,যা জানি তা আমার মুরব্বিদের কাছ থেকে শুনে ও কিছু বই পড়ে। আমার দাদা বি এ পাশ ছিলেন। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে আমাদের তৎকালীন পরিবারে অনেক অভাব ছিল।দাদা একদিন ঢাকায় শেখ সাহেবের সাথে উনার বাসায় কথা বলার সুযোগ পান,নিজের অভাব অভিযোগের কথা বলে উনি আবদার করে বসেছিলেন উনাকে একটা চাকরি দেয়ার জন্য। শেখ সাহেব উনাকে বললেন দেখ আমি প্রধানমন্ত্রী হলেও সরাসরি চাকরি দেয়ার এখতিয়ার রাখিনা,তুমি সার্কুলার দেখে আবেদন কর।কিন্তু দাদা কে তিনি খালি হাতে ফিরিয়ে দেননি, আসার সময় নগদ ৫০০ টাকা দিয়েছিলেন। এই ৫০০ টাকা দাদার জীবনকে বদলে দিয়েছিল। এই টাকাকে পুঁজি করে তিনি এতো উপকৃত হয়েছেন তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।শেখ সাহেবের জীবন হরন করে এদেশে কিছু মানুষ উল্লাশ করেছিল,উনার মৃত্যুর খবর শুনার পর দাদা দু দিন কিছু খাননি, ঘরে দরজা লাগিয়ে দিয়ে শুধু কান্না করেছিলেন। তখন মানুষ প্রবাদের মতো বলতো " শেখ সাহেবের ভাসন"।কিন্তু এমন দরাজ কণ্ঠের একজন মানুষের মনটা কতটুকু দয়ায় পরিপূর্ণ ছিল সেটা এদেশের অনেকের অজানা রয়ে গেছে।তখনকার মানুষরা শেখ সাহেব কে কতটুকু ভালোবাসতো এটা আমি তাদের মুখে শেখ সাহেবের নামের উচ্চারণ করার ভঙ্গিমায় বুঝতাম। রাজাকার জামাতিরা এদেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়ে উনার বংশ পরিচয় নিয়ে অনেক ভুয়া গল্প রচনা করেছে, উনার পূর্ব পুরুষদের হিন্দু, জারজ এবং উনি ঘটনা চক্রে মুসলমান এমন অনেক কথা বলেছে এবং আজো শিবিরের সমাবেশ গুলতে বলা হয়। কিন্তু কোন বঙ্গবন্ধু প্রেমিক এ ব্যাপারে কোন মামলা করেছে বলে জানিনা। এটাও ঠিক আজ ওনার নাম কে পুঁজি করে অনেক ধান্দাবাজ চাঁদাবাজি করবে এটাও জানি, হয়তো আজকের কোন চা দোকানদার কাঙ্গালি ভোজের চাঁদা দিতে গিয়ে উনাকে কে গালাগাল দিবে। কিন্তু দোষ টা তো উনার কিছু ছিলোনা। উনার মতো বাংলাদেশ প্রেমিক জাতী আর কোনদিন পাবে এটা নিশ্চিত করে বলা যায়না।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:১৮