তোমার জন্য কিছু একটা করবো বলেই তো আমার এই সৈনিকজীবন
কাঁধে বন্দুক, ভারিবুট, মোটা-উর্দি- সারাক্ষণ কুইক-মার্চ, এটেশন থাকা
যারা এই ভর দুপুরে স্ত্রীর দেয়া কফি খাচ্ছে, তারা ঠিক বুঝতেই পারবে না
যদিও বাঙ্কারগুলো খালি পড়ে আছে, রোদ কিংবা বৃষ্টিতে ভিজে সহযোদ্ধারা
করছে পর্বতে ক্রলিং; এমনিতেই আমরা যারা সমতলে বেড়ে উঠেছিলাম
কখনো সইতে হয়নি উর্ধ্বমুখী চাপ; শরীরের সঙ্গে অতিরিক্ত চল্লিশ কেজি
ওজন নিয়ে বন্ধুর খাড়াপথ বেয়ে উঠে যাচ্ছি, আবার নেমে আসছি
কল্পিত শত্রুদের করছি মণ্ডুপাত; জানি তোমার অখণ্ডতার রয়েছে ভয়
আমারও তো দিন কাটতে পারত কেবল তোমার প্রসংশায়, আমিও
তোমার ফুল ও পাখি দেখে, খোঁপায় জড়িয়ে দিতে পারতাম করবী
গরম সুপের সঙ্গে অন্থন খেয়ে তোমাকে নিয়ে যেতে পারতাম বিছানায়
বছর বছর, ডায়াপার পাল্টানো, শিশুদের স্কুলে নেয়া; বিবাহবার্ষিকীতে
একটি হিরার নেকলেস, কে আর জানতো তোমার আনন্দের পরিমাপ
সকল কিছুর মধ্যেই তো আনুগত্য ও প্রাপ্তির আকাক্সক্ষা রয়েছে লুকিয়ে
অথচ আমি, এই অন্ধকারে রোদ কিংবা বৃষ্টিতে ভিজে, মশার কামড়ে
পাহারায় রয়েছি তোমার অরক্ষিত অঞ্চল; নিকষকালো অন্ধকার
তুমি দেখতে পাচ্ছ না; ভাবছ, লোকটির মনোযোগ রয়েছে অন্য কোথাও
বন্ধুদের কাছে হেসে হেসে গল্প করছ, সৈনিকের বুদ্ধি বুট ও হাঁটুতে
অবশ্য তুমি জানতেও পারবে না, এই বিনিদ্র বন্দুকের গর্জন ছাড়া
একটি উড়ন্ত বাজপাখির নখরে ঝুলে থাকতো কোমল মেষশাবক
তুমি ভাষা ও ভূগোলবিহীন পরিণত হতে লেপামোছা যৌনদাসীত্বে
যদিও ইতিহাসে লেখা আছে পুরুষের রক্তপাতের কাহিনী; তবু কেউ
বলেনি, পুত্র ও প্রিয়জনের মৃত্যুর পর অন্য কোনো সেনাপতির দখলে
তুমি ঘুমাও, তুমি জেগে থাকো মানসী আমার, যাকে ইচ্ছে মাল্য দাও
তোমার নিরাপদ ঘরে ফেরা, ধূলা থেকে কুড়িয়ে নিচ্ছি অরক্ষিত অঞ্চল
তোমায় পুরোটা পাবাে বলেই তো ঘর নয়, সীমান্তে জাগ্রত রয়েছি।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:১৭