যারা বলেন কবিতার ভবিষ্যৎ কি?আমি তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বলি আগে ঠিক হোক মানব জাতীর ভবিষ্যৎ কি!
যদি এই গ্রহে মানুষ বেঁচে থাকে তাহলে কবিতার ভবিষ্যৎ একই রকম।যে জাতের মানুষই হোক কালো-সাদা-বাদামী, যে বর্নই ধারন করুক মানুষ বাঁচলে কবিতা রচনা না করে তার গত্যন্তর নেই।আর যদি তেমন কিছু ঘটে যায় কবিতা ছাড়াই যদি মানুষ বেঁচে থাকতে পারে তাহলে সেটা হবে স্বপ্ন ছাড়াই বেঁচে থাকার মত।
কবিতা হল তর্কাতীত ব্যাপার।এক সময় আমি কবিতাকে স্বপ্ন বলতাম কিন্তু কবিতা তো স্বপ্নও নয়।কারন কবিতা কোন কবি তো ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে লিখতে পারেন না।সজাগ-সক্রিয় সতর্ক ইন্দ্রিয় না হলে মানুষ কবিতা লিখতে পারেনা।এই নিয়ে জগদ্ব্যাপী তর্কের শেষ নেই।কিন্তু কবিতা তো তর্কও নয়।যুক্তি গ্রাহ্য বিষয় নয়।
কবিতা লিখতে হলে জন্মগত ভাবে মানবিক উদ্ভবের নিয়মের বশবর্তী থাকতে হবে।
কবিতা কি?প্রায় সব কবিই একটা জবাব দিতে চেয়েছেন।জবাব এত বেশি জমে গেছে যে এখন প্রশ্নটা কি ছিল তা আড়ালে চলে গেছে।এতেই প্রমানিত হয় কবিতাকে প্রশ্ন করা যাবেনা।কবিতার বিব্রত মুখ মানব জাতির জন্য সহনীয় নয়।কবিতাকে কাঁদালে জগৎ কেঁদে ওঠে।যদি কবিতাহীন বিশ্ব রচনার তাগিদ থাকে তাহলে মানব শিশুর বদলে নারীর উদর থেকে জন্ম নেবে রোবট।ছোট ছোট যন্ত্রে ভরে যাবে পৃথিবী।
কবিতা সত্যর সিদ্ধান্তে পৌছানোর মানবিক যুক্তি মানে না।অন্য দিকে মিথ্যা বলার দায় দায়িত্বও কোন কবিই স্বীকার করেন না।কবিতা মিথ্যাও নয়-সত্যও নয়-স্বপ্নও নয়-বাস্তবতাও নয়।কবিতা কবিতাই।কবিতা কোন অন্য নাম অন্য পোশাক পরতে চাই না।আবার সে নগ্নতাও অপছন্দ করে।
কুয়াশাছন্ন একটি অফুরন্ত সকাল কবিতাকে আবৃত্ত করে রাখে।কোন কবি যখন একটা কবিতা সমাপ্ত করেন তখন তার মনে কেবল আনন্দের ঢেউই খেলে না কান্নাও তার চোঁখ ভিজিয়ে দেয়।এই অনুভুতিকে কোন নামেই অভিহিত করা যায়নি।
এর কোন নাম না দিতে পেরে মানব জাতী কেবল এটুকুই বলতে পেরেছে " আরে এই তো কবিতা" এই জগতে এমন কঠিন দায়িত্ব নিয়ে কবিরা কেন আসেন এটা একটা কৌতুহলের ব্যাপার বটে।কিন্তু তারা না এলে মানব জাতি একই সাথে হাসি ও কান্না সম্ভবত ভুলে যেত।
মানুষ হাসে সে কবি বলে,মানুষ কাঁদে কারন তার মধ্যে কবিত্ব শক্তি জাগ্রত।জগৎ সংসারের আয়োজনটাই এরকম।সেখানে পৌরহিত্য করার জন্য একজন আদরকারী কিন্তু অপরিহার্য মানুষকে ডেকে আনতে হয়।কারন মন্ত্র উচ্চারনের শক্তি কেবল ওই মানুষটারই আছে।আমরা তাকে একটি মাত্র ক্ষুদ্র নামে অভিহিত করি।সে নামটি হল কবি।এর আর কোন লিঙ্গান্তর হয়না।
*** এই লেখাটি মনে হয় দশ বছর আগে কোন এক পত্রিকায় পড়েছিলাম।লেখাটি এতই ভাল লেগেছিল যে আমার ডায়েরীতে লিখে রেখেছিলাম।অনেক দিন পরে পুরানো ডায়েরীটা দেখতে গিয়ে লেখাটি চোঁখে পড়ল।ভাবলাম ব্লগ বন্ধুদের সাথে লেখাটি শেয়ার করি।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১১:৩৩