আমরা যে সময়টাতে বড় হয়েছি তখন মোবাইলের মালিকানা ছিল কেবলমাত্র বড়লোকের হাতে | লাখ টাকার সিটিসেলের সেট কিনে মানুষ হাতে রাখত | বাসে করে কলেজে যাবার সময় পাশের কার বা পাজেরোতে বসা কারো হাতে মোবাইল দেখলে উকি ঝুকি মারতাম | কল্পনা করতাম কত টাকা থাকলে একটা মোবাইল কেনা যায় | ( বিশ্বাস করেন , তখন কয়েকটা মোবাইল ফোনের দাম দিয়ে রিকন্ডিশঅন্ড টয়োটা করলা কেনা যেত | )
সে সময় আমাদের লক্ষ্য থাকত ঢাকার কত এলাকায় বন্ধু বানানো যায় | যার যত এলাকায় বন্ধু , বন্ধু সার্কেলে তার প্রভাব ছিল তত বেশি | এই বিভিন্ন এলাকার বন্ধুরা কাজে আসত যদি ঐসব এলাকার আসে পাশে কোনো বিপদ আপদে জড়িয়ে পড়তাম | ঐসব বন্ধুদের বেশিরভাগের সাথে কলেজ জীবনের পর আর যোগাযোগ থাকেনি | এই নানা রকম বন্ধুর মাঝে ভালো ছেলে বলতে কেউ ছিল না বললেই চলে | কারণ ভালো ছেলেরা বিপদে আপদে কোনো কাজে আসত না | নানা রকম বখাটে, মাদকসেবী , সন্ত্রাসী, অস্রধারী ছেলেপিলেই ছিল বেশি | এদের মাঝে আবার অস্রধারীদের মূল্যায়ন ছিল সবচেয়ে বেশি | ওই সময় রাজনৈতিক পোস্ট পজিশনের চেয়ে এলাকাভিত্তিক প্রভাবের দাপট বেশি ছিল |
ওই তথাকথিত বন্ধুদের মাঝে কেউ কেউ ছিল নিচু শ্রেনীর লম্পট | এদের প্রধান কাজ ছিল এলাকায় নতুন কোন মেয়ে এসেছে তার খবর রাখা, ঐসব মেয়েদের ফিগার কতটুকু আকর্ষনীয় তার ব্যাপারে গুলতানি মারা , বিয়েবাড়িতে গেলে মেয়েদের সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা ( এই অংশটা কেমন যেন চাপাবাজি মনে হত ) এবং মার্কেটে ভিড়ের মাঝে মেয়েদের গায়ে হাত দেয়া |
স্বাভাবিক ভাবেই চোরের দশদিন আর গৃহস্তের একদিন , এই নিয়মে মাঝে মাঝে অপকর্ম করতে গিয়ে তারা ধরা খেত | আর নারীঘটিত বিষয়ে ধরা খেলে ওই সময় কেউ সাহায্যে এগিয়ে আসতনা | অবধারিতভাবেই চড় চাপড় থেকে নিয়ে কানধরে উঠবস , জুতাপেটা সবই তাদের ভাগে জুটত |
নির্লজ্জ বেহায়াগুলো বিকেলবেলা বিড়ি খেতে খেতে যখন সদর্পে ওই সব অপমানের কাহিনী বর্ণনা করত তখন বয়সের কারণে মজা পেতাম | তার পরেও মাঝে মাঝে জিজ্ঞাস করতাম - কিরে ফাউল তোর শরম করেনা এইসব আমাদের সামনে বলতে | হাসতে হাসতে বেহায়াগুলো উত্তর দিত - তারা ডোন্ট মাইন্ড ফ্যামিলির ছেলে | দুই একশ জুতার বাড়ি তারা শার্টের কলার ঝাড়া দিলেই পড়ে যায় |
তখন বুঝতে পারিনি ঐসব ডোন্ট মাইন্ড ফ্যামিলির ছেলেপেলেদের পরবর্তী প্রজন্ম ব্লগের মুক্তমনা নামধারীরা | দুই একশ জুতার বাড়ি তারা কয়েকদিন পোস্ট কমেন্ট না করলেই ভুলে যায় | দুই পায়ের চিপায় লেজ ঢুকিয়ে দৌড়ে পালানো প্রাণীটি কয়েকদিন পর চাঁদ তারা খচিত লেজ নাড়তে নাড়তে ফিরে আসে |
বি.দ্র. - এক হাম্বার সাথে ক্যাচাল করে দুই সপ্তাহের জন্য কমেন্ট ব্যান খাইছি | নইলে আইজকা ওই ছাগলটারে জন্মের চোদন দিতাম |

