জানিনা আমার এই লেখাটি কেউ পড়বে কি না?
আমি সামান্য একজন মানুষ। খুবই সাধারন। একটা ব্যাংকে পেটের দায়ে চাকুরি করি। পোস্টিং সিলেট। আমার বন্ধু এবং শুভাকাঙ্খীদের মাঝে অনেকেই সাংবাদিক বা সংবাদ কর্মী। আর আমার যে বন্ধুরা সংবাদকর্মী কিংবা সাংবাদিক তাদের সাথেই আমার হৃদতা বেশি, যদিও কাজের কিংবা পেটের তাগিদে এখন দূরে বাস করছি। আজ ৩০/০৭/১২ তারিখে আমার একটা অভিজ্ঞতা হল সাংবাদিক বিষয়ে। ঘটনাটা আমি বলতে চাই।বর্ণনাটি পড়তে হয়তো সুখকর হবে না ভাষাগত কারনে। তবু আশা রাখি কষ্ট করে পড়বেন…
গত এক সপ্তাহ ধরে আমার ব্যাংকের শাখার ব্যবস্থাপকের প্রমোশনের কারনে ব্যবস্থাপক পদটি শূণ্য আছে। আগামী ১ তারিখ নতুন ব্যবস্থাপক যোগ দিবেন। শূণ্য অবস্থায় থাকার কারনে ব্যবস্থাপকের চেম্বারটি দরজা চাপানো অবস্থায় থাকে। আজ বেলা ১১টার দিকে একজন ব্যস্ততার মধ্যে ঢুকে ব্যবস্থাপকের রুমের চাপানো দরজা ঠেলে তার টেবিলের সামনে বসে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফরম পুরন করতে থাকেন (উল্লেখ্য যে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি হিসাব এ ব্যাংকের শাখায় চালু আছে, ভর্তির সময় শিক্ষার্থীরা এখানে টাকা জমা দেয়)। এসময় উক্ত ব্যাক্তিকে ব্যবস্থাপকের চেম্বার থেকে বের হয়ে বাইরে অফিসারের সামনে চেয়ারে বসে লিখতে বলা হয় কেননা চেম্বারটি খালি এবং দরজা চাপানো অবস্থায় সে টেবিলে ব্যাংকের কিছু গুরুত্বপূর্ন ডকুমেন্ট ছিল। সেই সাথে তিনি কারো কাছে অনুমতি না নিয়ে বন্ধ চেম্বারে ঢুকেননি। চেম্বার থেকে বেরিয়ে উনি রাগত স্বরে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন (কার্ড সহ)। পরিচয় পাওয়ার পর তাকে চেম্বারের বাইরে একটি চেয়ার দেখিয়ে সেখানে বসে লিখতে বলা হয়। তিনি পুরোপুরি রেগে যান-বলেন চেম্বার থেকে বের করে আমাকে অপমান করা হয়েছে। চেম্বারে বসলে কি মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে।
এই ভাবে কথায় কথায় একটু তর্ক হয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সাথে।পরবর্তিতে উনি বেরিয়ে যান। আমরা স্বাভাবিক ঘটনার মতো আমাদের কাজ করতে থাকি। কেননা একজন কাস্টমারের সাথে মাঝে মাঝে একটু তর্কাতর্কি প্রায় সব অফিসেই স্বাভাবিক বিষয়।
এর একঘন্টা পরে আমরা বুঝতে পারি তিনি ব্যাংকের নিচে অপেক্ষা করে মোবাইলর মাধ্যমে সিলেটের প্রায় ৩০/৪০ জনের মতো সাংবাদিক এবং ফটো সাংবাদিক জড়ো করেন, সাথে স্থানীয় বেশ কিছু যুবক। সেই সাংবাদিক সকল বাইরে থেকে আমাদের গেইট বন্ধ করে দেন। আমরা আশেপাশের স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাই। আর কিছু সংখ্যক ফটো সাংবাদিক অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে ব্যাংকে ঢুকে ফটো তুলতে থাকে।
এভাবে চলতে থাকলে একতরফা ভাবে আমাদের কোন কথা না শোনে বিভাগীয় কার্যালয় আমাদের থেকে ডিজিএম এসে ক্ষমা চাওয়ার পর ঘটনার আপাতত শেষ হয়। আপাতত বলছি এই কারনে যে, হয়তো এর রেশ আরো থেকে যাবে এই আশংকা করছি।
আর একজন লোককে একটা অফিসের কর্তৃপক্ষ খালি চেম্বার থেকে বেরিয়ে অন্য একটা টেবিলের সামনে বসে লিখতে বলার মতো সামান্য একটা ঘটনায় যদি একজন সাংবাদিক তার দলবল নিয়ে এই করতে পারে তাহলে সাধারন মানুষ হিসেবে আমাদের আসলেই বলার কিছু থাকে না।
শুধু ভবিষ্যতের জন্য সাবধান হতে হবে। পুলিশের মতো সাংবাদিকদের সাথেও যথা সম্ভব দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কেননা কেউই তো আর স্বাভাবিক মানুষ নয়।