রূপক :
কেন এতো মায়া বাড়াবে?
আমার মাথা আমার মতো ব্যাথা করবে?
তুমি কে?
তুই কেন আমার মাথায় হাত বুলালি?
তুই কেন আমার কপালে চুমু খেলি?
নারী কি বোঝে না কোলে শুয়ে থাকা
পুরষের কপালে চুমু খেলে বুক এসে মুখে লাগে
শিমু কি জানে না নারীর বুকের শব্দ আর ঘ্রাণ এড়ানোর মতো পুরষ
আজকের দুনিয়াতে আর জীবিত নেই?
শিমু :
পুরুষরা এমন হয় না তো!
পুরুষরা বুক দেখে, ঠোঁট দেখে
শরীর মাপে,
চল্লিশ পেরোনো পুরুষের চোখে খালি খিদা থাকে
রূপকটা কমপ্লিট অপদার্থ
এখনও মন ছুঁতে চায়
মাইগ্রেনে মাথা ছিঁড়ে যায়
বমি শুরু হয়,
আলো নিভিয়ে দেয়
অফিসের সোফায় আঁধ শোয়া হয়ে
ডাঙায় তোলা মাছের মতো নিঃশ্বাস নিতে থাকে
তবু বলে, ইটস ওকে, আই উল বি অল রাইট
‘আপনার কি খুব বেশি খারাপ লাগছে
আমি কি মাথাটা টিপে দিবো,
আমি খুব ভালো মাথা বানাতে পারি,
দেই।’
‘না, ঠিক আছে।’
কোথায় কি ঠিক আছে!
¯েœহাশীষ আমার দিকে ফিরেও তাকায় না
সময় নেই
ব্যস্ত ডাক্তার
ছাত্রী, নার্স, কখনোবা মহা কৃতজ্ঞ সুন্দরী রুগিনী
সেমিনার, ক্যারিয়ার কতো কাজ তার
দূরে দূরে থাকে -
আমি একা।
সেই যে পেটে লাথি দিয়েছিলো
সেই যে নিজের মধ্যে আরেকটা মানুষ ধরার ক্ষমতা হারিয়েছি
সেই থেকে আমি একা
নয় বছর কেউ আর এই হাতে হাত রাখে না
পুরুষরা উরুতে হাত রাখতে চায়
বুকে তাকিয়ে থাকতে চায়
এই চোখের অন্তরে তাকায় না
রূপক তুমি কোন হন্তারক নও
পুরুষের অহংকারে প্রজ্বলিত মোমবাতি নও
এতো ব্যথা নিয়ে মুখ বুজে কেন থাকো
শুধু কি মাইগ্রেনের ব্যথা
বউ ছেড়ে গেছে তারকা হওয়ার লোভে
দুটো ব্লাব নষ্ট নিয়ে জন্ম নেয়া সন্তান
কয়েকদিন পৃথিবীতে থেকে চলে গেলো
নিজেও বাঁচলো তোমাদেরও বাঁচালো
কিন্তু রূপক আমি কেন পর?
কাগজ-পত্র সই করিনি
স্বাক্ষী কলিমা নেই
দেনমোহর ধার্য করিনি
অবহেলায় ফিরিয়ে দিয়েছিলাম তরুন তোমাকে
আজ কি কোলে মাথা রাখতে নেই?
আজ কি মাইগ্রেনের বাইরে আর কোন ব্যথা নেই?
আজ কি মাথা টিপতে গিয়ে
কপালে একটু চুমু খেলে আমি অসতী হয়ে যাবো?
আজ কি তোমার ঠোঁট ফুলিয়ে দিলে পরকীয়া হয়ে যাবে?
কেন আমাকে ক্ষমা করতে পারো না রূপক?
রূপক :
যা আমার নয়
তা আমি কী করে নেই?
যা আমার কাছে ছুটে আসে
তাকে কি করে ফেলে দেই?
শিমু তুমি এখনও শিশু
বিরাট একটা শিশু
পাগলামীর বয়সটা তো আমাদের নেই
দূরবীক্ষণ অনুবীক্ষণ লাগে না
এই তো দেখো
বয়সের ভার পড়েছে শরীরে
চোখের নীচে কালি
চুলে পাক, উঁকি দিচ্ছে টাক
এখন কি চাইলে কাঁধে মাথা রাখতে পারি
এখন কি টেনে নিলেই বুকে মুখ লুকাতে পারি?
শিমু, তুই এখন আর কলেজে পড়িস না
জিদ করে মাথার সব চুল ফেলে দিতে পারিস না
আমি বেশ আছি
আমাকে থাকতে দে আমার বৃত্তের ভেতরে
আমি ছিটকে পড়লে আর টিকতে পারবো না
অফিস টফিজ মফিজ নিয়ে বেশ আছি আমি
গুছিয়ে নিয়েছি একলা জীবন
তুই কেন মায়া দেখাস?
নাকি প্রেম?
সে তো এক তরফা ছিলো
যখন সাড়া দেয়ার তখন তো দূরে ঠেলেছিলি আলগোছে
আজ কেন ডাকিস পিছে ফিরে যেতে
রং রুটে গাড়ি চালাই না আমি।
শিমু :
তুই কোন গ্রহের মাল
বাল
এই দেশে তুই নীতি মারাস
বাংলাদেশে এখন ফুটপাথে চায়ের দোকান বসে
মানুষও হাগে
বাংলাদেশে এখন গণজাগরণ আছে
গণ ধর্ষণও আছে
তুই খালি নীতি বাগিশ হয়ে থাকবি?
পলাতক
কাপুরুষ
আস্ত একটা উজবুক তুই...
কই সাহস ছিলো না তো
টান দিয়ে ওড়না ফেলে দিতে
ঘরের কোণে জাপটে ধরে চুমু খেতি
একবার বলতি
খবরদার আর কাউকে বিয়ে করলে লাশ হয়ে যাবি
কিংবা লাশ হয়ে যাবো
বলিসনি তো একবারও
ভদ্রলোক?
ন্যাকা
যত্তোসব!
জেনে রাখ
ঘৃণা করি আমি
এক কেজি ভালবাসার সাথে
দেড়কেজি ঘৃণা করি তোকে আমি
¯েœহাশীষ আমাকে ছেড়ে যায়
ছুটে যায় ছুঁতে যায়
যতো সব রঙচঙা কার্নিশ
আর ত্ইু আকামের ঢেকি
ঘরে বসে বসে
অহেতুক মাকড়শার জাল বুনিস
ভালবাসি তোকে আমি
আমার গোপন লজ্জা আর
বেহায়াপানাসহ ভালবাসি তোকে
আমার ইচ্ছা তোকে ফিরিয়ে দিয়েছি আমি
আমার ইচ্ছা তোকে টেনে নেবো আমি
তুই আমার খেলনা অথবা ফেলনা
যা খুশি
তুই আমার
এক্ষণ এইখানে নতজানু হয়ে পায়ে চুমু খা
বল, তোমার পায়ের নীচে
আমার হীরার খনি
বল...
সাহস থাকে তো বল
আমি ভালবাসি।
রূপক :
এইভাবে হয় না রে...
গলার জোরে গান হয় না রে
গায়ের জোরে যদি টেনে নেই তোকে
হেচকা টানে যদি ভালবাসা পাড়তে চাই আকশিতে
যেন পঙ্গু আর অকম্মাই হয়ে পড়ে থাকি এইখানে
ভাল
আমার মাকড়শার জাল ভাল
আমার নীরব গোপন ভালবাসা ভালো
আমার অন্ধকারে ছুঁয়ে ছুয়েঁ দেখা কাল্পনিক মুখ ভালো
তোর ছুঁড়ে দেয়া রাগ অভিমান ঘৃণা
আমি বয়ামে বয়ামে সাজিয়ে রাখি
গোপন সিন্দুকে
আমি তো জানি
ভালবাসবি বলেই আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলি তুই
হয়তো প্রেমের গল্প নেই আমাদের
হয়তো মিলনও নেই, বিরহ নেই
হয়তো ছোটগল্পের মতো শেষ হওয়ার আগেই শেষ হয়ে গেছে প্রেম
তবু তোর বুকের কস্তৃরি ঘ্রাণ
আমার বালিশের কাভারে ঢাকা আছে।
শিমু, তুই বাড়ি যা
এ শহরে অনেক ট্রাফিক
গাড়ি পেতে কষ্ট হবে তোর
আমার কিচ্ছু হবে না
অন্ধকারে একটু শুয়ে থাকলে ব্যথা সেরে যাবে
কিছু ব্যথা অন্ধকারেই সারে।
শিমু :
এরপর ডাকলেও আসবো না কোনদিন।
রূপক :
জানি।
কারো ডাকা না-ডাকায় তুই আসিস না।
এই জন্যই তো তোকেই আমি প্রেম বলি।
প্রেম
তুই তোর ইচ্ছায় আসিস
আর তোর ইচ্ছাতেই যাস।
তুই তো আর কারো চাকরী করিস না
তুই কেবল অকস্মাৎ বৃষ্টি ও বজ্রপাত।
যা
ভাল থাকিস।