somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সহিংসতার রাজনীতি বন্ধে সেনা শাসন নতুন প্রজন্মের রাজনৈতিক প্রত্যয়...

১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মোমিন মেহেদী
বাংলাদেশের রাজনীতিতে তৈরি হয়ে আওয়ামী লীগ মাঠে ছিলো সবসময়। কেননা, আওয়ামী লীগ কোন ভয়-ডর মানে না। যে কারনে ইতিহাস সময়ের সাথে সাথে ছিল এই দলটির- পক্ষে। যদিও এই দলটি মানুষের জন্য, দেশের জন্য আহামরি কোন উন্নয়ন বা মঙ্গল বয়ে

আনেনি বলে বিভিন্ন মহলে বিভিন্ন সময় একাধিক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সেই ঝড়কে কোন তোয়াক্কাই করেনি স্বাধীনতার স্বপক্ষের এই রাজনৈতিক দলটি। বরং তারা আরো হিংস্র হয়ে উঠেছে সময়ের সাথে সাথে। শুধু এখানেই শেষ নয়; সর্বস্তরের মানুষের

অংশগ্রহণে স্বাধীনতা যুদ্ধের যে বিজয় বাঙালি অর্জন করেছে; তাকেও নিজেদের রাজনৈতিক কাজে ব্যবহারের জন্য নিজেদের দলীয় অবয়ব দেয়ার চেষ্টা করেছে স্বাধীনতা শব্দটির উপর। সে যাই হোক, এখন নতুন করে তারা ক্ষমতার রাজনীতিতে বনে গেছে শ্বাপদ। যে কারনে দেশের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে সরকারি ও বিরোধী দলের সংলাপ জরুরি হলেও শর্তের ঘেরাটাপে আটকে আছে সে প্রক্রিয়া। ক্ষমতাসীনরা চান নিঃশর্ত সংলাপ। অন্যদিকে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি বলছে আলোচ্যসূচিতে নির্দলীয় সরকারের প্রসঙ্গ থাকলেই সংলাপে বসবে তারা। অন্যদিকে সঙ্কট উত্তরণে দেশের বিশিষ্টজনরা সংলাপকেই প্রধান উপায় হিসেবে বিবেচনা করছেন।

তবে বাংলাদেশের চলমান এই রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে সংলাপের বিকল্প নেই। বাইরের কেউ চাপ দিয়ে কাউকে সংলাপে বসাতে পারবে না। রাজনৈতিক দলগুলোকেই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সংলাপের আয়োজন করতে হবে। দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জাতিসংঘসহ অনেক বন্ধুরাষ্ট্র ও সংস্থা থেকে সমঝোতা ও সংলাপের কথা বলা হচ্ছে। নাগরিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক সেক্টর থেকে শান্তির আবেদন জানানো হচ্ছে। দুই রাজনৈতিক জোটের নেতারাও মনে করছেন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সংলাপ জরুরি। গত ৭ মার্চ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামও সংলাপের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন। কিন্তু সংলাপ প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে এগিয়ে আসছেন না কেউই। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ প্রক্রিয়া আটকে আছে শর্তারোপ নিয়ে। অথচ দেশে সংঘাত-সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ছে। এতে নাগরিক জীবন, সামাজিক শান্তি, অর্থনৈতিক ধারা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মানুষের মনে বাসা বাঁধছে ভয়, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। এই ভীতিকর অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি চায় মানুষ। পরিস্থিতি চলে যাচ্ছে আয়ত্তের বাইরে। শোনা যাচ্ছে উস্কানি আর অস্ত্রের ঝনঝনানি। শোনা যাচ্ছে সংঘাতের পদধ্বনি। ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে সঙ্কট। এ অবস্থায় গণতন্ত্র রক্ষায় ও সহিংসতা বন্ধে প্রধান দুই দলের ঐক্য জরুরি মন্তব্য করে প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক বলেন, দেশে বর্তমানে যে অবস্থা বিরাজ করছে তা থেকে উত্তরণের প্রধান উপায় দেশের প্রধান দু’দলের মধ্যে ইতিবাচক সংলাপ হওয়া। সেটা হলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। অন্যদিকে বিরোধীদল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করলেও এখনো তার রূপরেখা বলেনি। আবার সরকারি দলও অন্তর্র্বতী সরকার সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি। সংলাপে বসলে নির্বাচনসহ অনেক বিষয়েই ঐকমত্যে আসা সম্ভব। সামনে যে ক’মাস রয়েছে এই সময়ের মধ্যেই ফলপ্রসূ আলোচনা করে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেন, রাজনৈতিক জট খোলার আপাতত কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না। এভাবে চলতে থাকলে অতীতে যেমন সংঘর্ষ দেখেছেন, ভবিষ্যতেও সংঘর্ষের মধ্যেই থাকতে হবে। তবে চলমান সঙ্কট নিরসনে সংলাপের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, বাইরের কেউ বলে বলে সংলাপে বসাতে পারবে না। রাজনৈতিক দলগুলোকেই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সংলাপের আয়োজন করতে হবে। আশা করেন তাদের

শুভবুদ্ধির উদয় হবে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের অধিকাংশ নেতাও মনে করেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিদ্যমান অচলাবস্থা নিরসনে সংলাপের বিকল্প নেই। দু’দলের মধ্যম ও শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা সংলাপের দিকেই তাকিয়ে আছেন। কিন্তু দল দুটির শীর্ষ নেত্রীর কাছ থেকে বক্তব্য না আশা পর্যন্ত দেশবাসীকে হতাশায় থাকতে হবে। গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব দল থেকে প্রতিনিধি নিয়ে ছোট মন্ত্রিসভার প্রস্তাব দিলেও বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারপরও নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা কেমন হবে তা নিয়ে প্রধান বিরোধী দলসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে কোনো শর্ত মেনে আলোচনায় তারা বসতে নারাজ। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা মনে করেন আলোচনার টেবিল থেকেই সমাধান আসবে। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে আলোচনা না হওয়ার পেছনে বিরোধী দলের অনিচ্ছা ও অস্পষ্ট অবস্থানকেই দায়ী করছেন সরকারি দলের নেতারা। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম যায়যায়দিনকে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সরকার বাতিল করেনি। উচ্চ আদালত বাতিল করেছে। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ নেই। আগামী নির্বাচন হবে অন্তর্র্বতী সরকারের অধীনে। এ সরকারের কাঠামো নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এজন্য বিএনপিকে আলোচনার প্রস্তাব নিয়ে আসতে হবে। তারা আলোচনা চায় কিনা তাও বলতে হবে। তারা নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারব্যবস্থা চায় নাকি জামায়াতকে বাঁচাতে চায় এটাও স্পষ্ট করেনি। তবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সাম্প্রতিক কালো অধ্যায়ের রাস্তা ধরে রথিমহারথি রাজনীতিকগণও হাঁটতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এর কারন হিসেবে বলা যায়, জামায়াতের নোংরা রাজনীতি-ই দায়ি। তারা ভাড়া করা কিলার-পিকেটার আর আবাল-বৃদ্ধ-বণিতাদেরকেও ধর্মিও সেন্টিমেন্টালের মাধ্যমে সহিংসতার রাজনীতিতে তৈরি করেছে এক একজন হায়েনার মত করে। সেই হায়েনারা নিজেদেরকেই উপস্থিত করেছিলো মৃত্যুর মুখোমুখি। আর সেই দোষ চাপানোর চেষ্টা চলেছিলো সরকারের উপর। এই হলো মূল কথা যে, যে কোন মূল্যে আওয়ামী লীগ চায় ক্ষমতায় থাকতে, বিএনপি চায় ক্ষমতায় আসতে আর জামায়াত চায় ক্ষমতায় আসতে এবং যুদ্ধাপরাধীদেরকেও বাঁচাতে। এক্ষেত্রে একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে যে, জামায়াতের চাওয়াটা সবার চেয়ে বেশি এবং রিস্কি। তারপরও তারা মাঠে আছে। এই পরিস্থিতিতে যদিও নির্বাচন হবে হবে বলে ইসি মুখে ফেনা তুলে ফেলছে; কিন্তু বাস্বতা বড়ই নির্মম। বিশেষ করে রাজনৈতিক অঙ্গণটা বড়ই অস্থিতিশীল। এখন নতুন প্রজন্মের রাজনীতিক হিসেবে আমার কাছে কেবলই মনে হচ্ছে যে, নির্বাচন নাও হতে পারে। আমার জানা মতে, শকুনি নজর রাখছে সেনাবাহিনী। তারা কেবলই পর্যবেক্ষণ করছে।

একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে যে, বাংলাদেশে যখন অনেক হিন্দু গ্রামে জামায়াত-শিবির আক্রমণ করছে, পুড়িয়ে দিচ্ছে তখন অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল রাখাইন বৌদ্ধরা ওই রকম কোন হুমকিতে নেই। স্বাধীনতা যুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের জন্য জামায়াতের নেতাদের বিচার হচ্ছে। এতে হিন্দুরা সাক্ষ্য দেয়ায় তাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। বাংলাদেশে যে কোন বিপ্লবী পরিবর্তনের সফলতা ও তার স্থায়িত্ব নির্ভর করে কিভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সমপ্রদায় তাতে অংশ নিচ্ছে ও জড়িত হচ্ছে তার ওপর। কেননা, সংখ্যালঘুদের রাজনৈতিক রায়-ই বলে দেয় আমাদেরকে কখন কি করতে হবে। স্বাধীনতা যুদ্ধ-ই যার উৎকৃষ্ট প্রমাণ। সংখ্যালঘুরা এখন এই সরকারের সময় ভালো নেই। আওয়ামী লীগের মত একটি তথাকথিত অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল কেবলমাত্র সংখ্যালঘুদের রাজনৈতিক রায় নিয়েছে; বিনিময়ে দিয়েছে কেবল কষ্ট আর বেদনার নীল। এই বর্তমানের রাজনীতিকে কখনোই সহজে মেনে নেবে না বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনাগ্রহী আপামর জনসাধারণ। আর তাদের কথা ভেবে হলেও আওয়ামী লীগ-বিএনপিকে সংশোধন হতে হবে। নিষিদ্ধ করতে হবে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে যুদ্ধাপরাদী জামায়াত ইসলাম-ছাত্র শিবিরসহ সকল ধর্ম ব্যবসায়ী রাজনৈতিক দলগুলোকে। যাতে করে আর আমাদের পোহাতে না হয় যুদ্ধাপরাধীদের রাজনৈতিক অরাজকতার ভোগান্তি। যদি তা না হয়; তাহলে বাধ্য হবো বলতে- স্বাগতম সেনা শাসন। কারন, সেনা শাসন আর কিছু করতে পারুক আর না পারুক বন্ধ করতে পারে রাজনীতিতে সহিংসতা…

লেখক: মোমিন মেহেদী, কলামিস্ট ও আহবায়ক, নতুনধারা বাংলাদেশ(এনডিবি)

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মত প্রকাশ মানে সহমত।

লিখেছেন অনুপম বলছি, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।

এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প বলেছে, বাংলাদেশ পুরোপুরি এনার্খীতে, তারা মাইনোরিটির উপর অত্যাচার করছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৬



৩ দিন পরে আমেকিকার ভোট, সাড়ে ৬ কোটী মানুষ ভোট দিয়ে ফেলেছে ইতিমধ্যে; ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ৫১ ভাগ। এই অবস্হায় সনাতনীদের দেওয়ালী উপক্ষে ট্রাম্প টুউট করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

×