মনির হাসানের পোস্ট -
Click This Link
খুবই যুক্তিপুর্ন লেখা, ভাববার বিষয়। উপস্থাপনার ভংগি ভালো লেগেছে। এইবার আমার টা পড়ুন -
ঘটনা প্রবাহ:
(১)
বছর আষ্টেক আগে এক ক্রিকেট ম্যাচের শেষ দুই বলে জয়ের জন্য ৬ রান দরকার ছিলো। স্ট্রাইকিং পজিশেন আমি ছিলাম। মনে জপছিলাম, 'আমি পারছি, আমি পারবো', 'আমি পারছি, আমি পারবো', 'আমি পারছি, আমি পারবো'। বল আসলো, চোখ বুজে বল মারলাম, লেগ সাইডে মিড-অন দিয়ে সুবিশাল ছক্কা হয়ে গেল। আমি খুব কমই লেগ সাইডে ছক্কা মারতে পেরেছি। জাভেদ মিয়াদাদ-দের দ্বারা সম্ভব হতে পারে কিন্তু আমি পারলাম কিভাবে, এটা আজো একটা প্রশ্ন।
(২)
আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট কিশোর বয়সে বিশ্ব জয়ে বের হয়ে দুনিয়া দখল করে নিলেন! সত্যি অবাক হতে হয়!!! এটা সম্ভব কিভাবে???!!!! বুশ এতো যুদ্ধাস্ত্র নিয়েও তো আফগানস্তান, ইরাকে নিরুংকুশ প্রাধান্য বিস্তার করে যেতে পারেন নি। হিটলার তো চেষ্টা করেও ফেইল মারলো, জয়তু চেষ্টা।
(৩)
আইনস্টাইনের মাথা একটা, মগজ-মস্তিস্ক একটা, তিনি পদার্থ্য বিদ্যায় তো রীতিমত অঘটন ঘটিয়ে দিলেন!!! এটা সম্ভব কিভাবে???!!!! এখনতো হাজার হাজার বিজ্ঞানীর একত্রিত চিন্তাও তো ম্যাসিভ বিপ্লব ঘটাতে পারছে না!!!!!!! কারন রহস্যজনক!!!!! এখানেও মনে হচ্ছে ষড়যন্ত্র আছে!!!!
(৪)
নজরুল নাকি দুইহাতে লিখতে পারতেন, একই আসরে কবিতা, গজল, গান লিখতে পারতেন। আর মাইকেল মধুসুদন দত্তের বাংলা ছনেট তো অনিবেদ্য!!!! আর রবীন্দ্রনাথ তো নোবেল পেয়ে বসলেন!!!!!
নজরুল বাস্তব, আলেকজান্ডার, আইনস্টাইনেরাও বাস্তব, কেন?? তাদের উপস্তিতি আছে।
পাগলের মন্তব্য:
আমি আলেকআইন {আলেকজান্ডার+আইনস্টাইন+নজরুল} হইতে চাই!!!!!!!!!
আপেক্ষিক বিশ্লেষন:
(১)
কেউ ক্রিকেট প্র্যাকটিস করলে হরহামেশা ছক্কা পেটাতে পারবে। অন্তত প্রতি একশো জনে একজন এইরকম শেষ বলে ছক্কা পেটাতে পারবে। তাই না দেখেও এই যোগ্যতা সম্পর্কে সহজেই বিশ্বাস হয়।
(২)
আলেকজান্ডারের মতো বীর সহস্রাব্দেও জনমায় না, তাই মিথের মতো মনে হয়, কিন্তু মিথ না। হিটলার-মুসোলিনিও একই পথে হাটতে যেয়ে পিছলে পড়েছে। আমি এই উদাহরনে এথিক, মরালিটি বা ভিষন নিয়ে তুলনা টানি নাই। কিন্তু আলেকজান্ডারেরা আসেন, আসবেন।
(৩)
আইনস্টাইন ঘরে ঘরে জন্মায় না। আইনস্টাইনেরা সময়ের সন্ধিক্ষনে জন্মায়। আমার বিশ্বাস আবার আইনস্টানের মতো টাইমস্টোনের জন্ম হবে। স্টিফেন হকিংয়ের কথা অনেকে বলবেন, কিন্তু তিনি কগনিটিভ সাইন্টিস্ট। তার ক্ষেত্র একটু ভিন্ন আইনস্টানের তুলনায়।
(৪)
রবি-নজরুল-মধুরা জীবানন্দদাশের 'আবার আসিব ফিরে ধানসিড়িটির তীরে'র মতো জাগরনী শক্তি। তাদের মতো যুগপুরুষের পদধ্বনি সময়ে শোনা যাবেই মানব ইতিহাসে।
ব্যতিক্রম কিন্তু সাধারন নয়, তাই সেটা ব্যতিক্রম:
নবী-রাসুল (আল্লাহ্র প্রেরিত পুরুষ) কিন্তু সাধারনের চেয়ে ভিন্ন কিছু। তাদের গুনাবলী সাধারন নয়, যে আপনি যদু-মদুদের চারিত্রিক গুনাবলীর সাথে কমপ্যায়ার করবেন। আপনার বর্ননাতে খ্রিস্টানদের সান্টাক্লজের (কাহীনি) কিন্তু মুল ধর্মের ভিত্তির বাইরে। এটা পরবর্তীতে সৃষ্ট মানুষের দ্বারা!!!! যেমন তথাকথিত আজকের দিনের ইসলাম-বিদ্বেষীদের সৃষ্ট গওহর শাহী (http://www.theallfaith.com/miracles.htm)। এখন যদি আপনি তাকে ইসলামের আইকন বা আল্লাহর নির্দেশনা মনে করেন, তবে নিতান্তই অর্বাচীন হবে!!!!
মর্মনদের সম্পর্কে কিছু বলতে ইচ্ছা করছে না, আমার যদি ভুল না হয়ে থাকে, ম্যাডোনা (গায়িকা) হলো মর্মনদুত। এইবার এইধর্মের নৈতিকতার ধারনা বুঝে নিন। হালে ব্রিটনী স্পিয়ার্স যোগ দিয়েছেন। কাব্বালাহ সম্পর্কে একটু গুগলিং করুন, পেয়ে যাবেন।
আর নুডিজ্যম নিয়ে আমার বলার ইচ্ছা নাই।
আর নবীদের নেতা, পৃথিবীর সেরা, আমাদের জন্য রহমতস্বরুপ প্রেরিত রাসুল(সা এর সাথে যদি অন্যকিছু দিয়ে কমপ্যায়ার করতে যান তাহলে গুলে ফেলবেন। উনি মাত্র ১৪০০ বছর আগে এসেছেন। তার সমস্ত কিছু ডকুমেন্টেড, তাই আপনার তথ্য পেতে সমস্যা হবে না (অবশ্যই অথেনটিকেটেড সোর্স থেকে পড়বেন)।
আমরা অনেক কিছু বুঝি কিন্তু বাহ্যত স্বীকার করি না। আপনি মিরাজ সম্পর্কে বলতে চেয়েছেন। আর প্রত্যেক মুসলমানের জন্য নামাজ হচ্ছে মিরাজ স্বরুপ। আর আল্লাহ্র প্রিয় বান্দাকে বোরাকে চড়িয়েছেন, বিশ্ব-ব্রক্ষান্ড ভ্রমন করিয়েছেন। তিনি একমাত্র ব্যক্তি, কারন তিনি সৃষ্টি সেরা। আপনার বিশ্বাসের জন্য আল্লাহ বার বার এইরকম সুযোগ অন্য কাউকে দেবেন না। এইখানে এসেই আপনার দ্বিমত সন্দেহ শুরু হবে, উপরের ব্যক্তিদের পর্যালোচনা আবার পড়ুন। আশা করি স্বচ্ছতা আসতে শুরু করবে।
আপনি ঠাকুরমার ঝুলির সাথে গুরুগম্ভীর একটা বিষয়কে তুলনা করে ভুল পথে চলেছেন। আপনি আল্লাহকে অস্বীকার করতে পারেন, কারন আল্লাহ আপনাকে জ্ঞান দিয়াছে। তাই উত্তম হয় যদি গবেষনা করে ভাবগম্ভীর বাস্তব যুক্তিপুর্ন একটা লেখা দেন। স্ট্যান্টবাজীর লেখা পড়তে আমোদ লাগে, কিন্তু মনে থাকে না।
আপনাকে একটা প্রশ্ন ছুড়ে দেই, বলুন তো আপনি আপনার আত্মা কে ছুতে পারেন না কেন? এটাতো আপনারই। দেখেন না কিন্তু অনুভব করেন কেন?? আমার প্রশ্নে কনফিউজড হয়ে ভাবতে পারেন আমি মস্তিকের কথা বলছি। আমি কিন্তু মস্তিকের কথা বলি নাই। আর মস্তিকের কথা বললে বলবেন এটা ইলেকট্রিক সিগন্যালে কাজ করে। গুড, কথা সত্য। এখানেও বাহ্যত অদৃশ্যমান একটি পৃক্রিয়ার কথা এসে যাচ্ছে, যা সাধারনভাবে চোখে দেখা যায় না। আত্মাকে ধরতে পারি না, মস্তিকের কাজ চোখে দেখি না, তবু এইগুলি আমারই অংশ। আর আল্লাহ কতো মহান!!! তাকে আপনি চাইলেন আর চর্মচক্ষু দিয়ে দেখে ফেলবেন???? আপনাকে আপনি অনুভব করুন আমি নিশ্চিত আপনি আল্লাহকে পেয়ে যাবেন, অন্য কোথাও খুজতে যাওয়ার দরকার নাই। অনেকেই বলেছেন, 'বিশ্বাসেই মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদুর', আমি মানতে নারাজ। কারন ইসলাম এমন একটি ধর্ম যেখানে আপনাকে চিন্তা করতে বলা হয়েছে, শুধু বিশ্বাস করতে বলে নাই।
আপনার পন্চ ভুত (এখানে ভুত আসলে ভুত নয়, ইন্দ্রিয়) আপনারই। দেখা যায়, ধরা যায়, ছোয়া যায়। কিন্তু ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়????
আশা করছি, আপনি প্রচুর পড়াশুনা করেন। নেগেটিভ চার্জ নিয়া পড়তেছেন শুধু। পজিটিভ চার্জ নিয়াও পড়াশুনা করেন, তাতে করে আপনার সাইকেল পুরন হবে, আর নয়তো তরংগের নেগেটিভ অংশেই বিচরন করতে থাকবেন আজীবন। আর মনে হবে সব জেনে গেছি, আসলে সবই অপুর্নাংগ।
নাই বলা যত সহজ, প্রমান করা তার চেয়ে অনেক অনেক অনেক গুন কঠিন। আর মিথ-গল্পকে সত্য মাপার মাপকাঠি বলে ধরে নেয়া ভুল আর নয়তো সস্তা জনপ্রিয়তা পাবার চরম বাজে স্টান্টবাজী।