কবিতা ১-
আমি কিছুতো চাইনি তোমার কাছে,
আলতা ফিতে প্রসাধনী চুড়ি,
সে যে আমি নিজেই কিনতে পারি।
অথবা বাজারের ঝলমলে শাড়ি
সে আমার না হলেও চলে,
অথবা মাসের খরচা,
আমার নিজেরই তো কিছুটা জমেছে
তবুও তো কিছু চেয়েছিলাম আমি, দিনের সবকটি ঘণ্টায় তুমি যেন পাশে থাকো।
একদম গায়ে গায়ে থাকবার দরকার নেই।
তোমার কাজ নির্বিঘ্নেই তুমি কর।
তবু যেন আমি জানি এই তুমি ঘুমোলে, এই উঠলে,
আর আমাকে বললে জলের গেলাসটা কই?
এটুকুই?
আমি শুধু এটুকুই চেয়েছি।
এখন তো কত দূরে যাবে, সব গুছিয়ে রেখেছি, কাগজে লিখে দিয়েছি
কত গল্প জমবে এখন, সেসবই হয়ত এসে বলবে,
রোজকার মত জলের গেলাসটা কই? মোজা জোড়া কই আর বলবে না,
সেসব কোথায় এখন তুমি তো জানই, নিশ্চয়ই অভ্যেস হয়ে যাবে এতদিনে।
আমিও থাকবো ভালই, অসুখ করলে ঠিক ঠিক ওষুধ চিনে খেয়ে নেব,
জানি শীতল পাটিটা থাকবে না, তোমার বুকটা।
সে ছাড়াই সারা রাত্তির দিব্যি ঘুমিয়ে কাটাবো, একটুও ভয় করবে না আমার।
দুঃখ পেলে একটুও ভয় করে না যে আমার,
কেবল দুঃখ পেলেই, বহুদুর আমি একাই যেতে পারি।
কবিতা ২-
যৌবনেই তোমাকে চাই আমি,
ঠিক যতটা আমার প্রাপ্য।
বুড়ীয়ে গেলে; তোমার সঙ্গী? সে হব।
কিন্তু হৃদয়ের ক্রীড়া?
বড় জোর ইনসুলিন দেব সময়মত।
চশমাটার খোঁজ দেব ঠিকঠাক।
প্রেমিকা কি আর হব?
তবুও কি ভীষণ নির্দ্বিধায় বললে,
আজই যাবে চলে,
কালকের জন্য কিছু গোছাতে।
তবে আজ যদি মরি?
আগামীকে ভীষণ ঘৃণা এখন,
সময়গুলো ফুরিয়ে যাচ্ছে যে ভীষণ।
কবিতা ৩-
বললাম আর কটা দিন থাকো, খুব কি যাবার তাড়া?
তুমি বললে, বাঁচবার লড়াইয়ে আজই নামতে হবে,
পৃথিবীটা আলস্যের নয়, স্বর্গে সে অনেক করা যাবে।
আমি জানতাম এইসব লড়াইয়ে হৃদয়গুলো হবে ভীষণ দগদগে আর জ্বলন্ত লাল,
তবু মানলাম, বললাম ভাল থেকো, ভেবনা।
দরজা খুব ভাল করে লাগিয়ে তবেই ঘুমোবো।
আচ্ছা বলত, বাঁচবার জন্য লড়াই নাকি লড়াইয়ের জন্য বাঁচা?
এইসব হিসেবে মাঝেই মাঝেই ভীষণ ক্লান্ত হই আমি,
ভীষণ পশু হতে ইচ্ছে করে আমার।
পশুদের তো মনের উপর এত ধকল নেই, বিচ্ছেদের জ্বালা নেই।
দু গাঁদি খড় হলেই ওদের বেশ চলে।
কবিতা ৪-
একটা টিনের মলাটে লিখছি তারিখটা,
একদিন ঠিক বলব এই দিন দাগা দিয়েছিলে।
সেইদিন হৃদয়ের খোঁজ কর।
চিনতে পারবে না, মরচের স্তুপ কান্নার নোনা দাগ,
কি দিয়ে সে জলরঙ মুছবে?
তোমার ঝলমলে ঝালর ভরা ভবিষ্যৎ এ
এ দাগ সেদিন মুছবে না।
আর সহজলভ্য হব না আমি,
আর ডাকলেই ১৫০০ মাইল পাড়ি দেব না আমি।
কবিতা ৫-
তুমি বললে,
আমি তো আছিই, থাকবো তো দুদিন।
হিসাব কষলুম আমি, পাঁচ দিনই তো তুমি নেই।
একবার বলেছিলে তুমি হিসাবে কাঁচা,
আজ বোঝালে,
তারপর বিষাদের পেয়ালা বিষে বিষে ভরালে।
কবিতা ৬-
দুজনেই একসাথে মরব,
জানি এ শতভাগ নিশ্চিত নয়।
তবুও তো চেয়েছিলাম এক সাথে থাকা,
ঠিক যতটা পারা যায়।
যেমন পথের হাস্নাহেনার গন্ধ যতটা নেওয়া যায়।
চেয়েছি অনেক অলস দুপুর একসাথে কাটুক,
বলিনি একভাবেই কাটু্ক,
তবুও তো পাশাপাশি থাকা,
ঠিক যতটা পারা যায়।
বলিনি সবকটি তারা গুনে আজকেই সংখ্যাটি বল,
তবুও তো একসাথে গোনা,
ঠিক যতটা পারা যায়।
যেমন পথের হাস্নাহেনার গন্ধ যতটা নেওয়া যায়।
কবিতা ৭-
আমার দুঃখের ভার আমি একাই বইব জানি,
সুখ হলেই তোমরা আসবে ছুটে,
আর অসুখ করলে বড়োজোর দুরের টেলিফোন,
কিরে কি হয়েছিল তোর?
*** মন বিক্ষিপ্ত, কিছু এলোমেলো কথা মনে এল, তাই লিখে ফেলা।