ভাবছিলাম এইবারের ইদটা সেইরকম হইব।এই রোজার মাসে আবার আমার ঘুমানের টাইম চেঞ্জ হইছে।ইফতারির পরে নামাজ পড়ার নাম নিয়া এলাকায় ঘুরতে বাহির হইতাম।রাত ১০ টা পর্যন্ত বন্ধুগো লগে আড্ডা মাইরা বাসায় ফিরতাম।আব্বা কইত কিরে নামাজ পড়ছস ।বলতাম হ তারাবির নামাজ পইড়াই বাসায় আইছি।আব্বা কইত গুড ।খাইয়া ১১ টার সময় কম্পিউটার এ বসতাম।রাত ১ টা পর্যন্ত নেটে গুতাগুতি করতাম।১ টার পরে গেম খেলতে বইতাম।৩ তা পর্যন্ত গেম খেইল্লা সেহেরি খাইতে বইতাম।তারপর দিতাম এক এক ঘুম এ উঠতাম বিকাল ৪ টায়।তো এভাবেই দিনগুলা চলত।
তো এইবার ভাবলাম চান রাত টা এভাবে কাটামু না।তারাতারি ঘুমাইয়া যামু ।যথারীতি ১১ টার সময় নেটে বসলাম।প্লান ছিল ১২ টার মধ্যে কাজ শেষ কইরা ঘুমাইয়া যামু।রাত ১২ টার সময় গুমাতে যাবার আগে শেষ একবার ফেসবুক এ ঢুকলাম।বাংলাদেশ বিরোধী একটা পেজ এ আইসা পড়লাম।দেখি কলকাতার দাদা বাবুরা বাংলাদেশকে ভয়াবহ ভাবে গালাগালি করতাছে।মাথায় গেল রক্ত উইঠা।আমার বাংলাদেশরে তোরা অপমান করছ।আমার দেশ ছোট হইলে কি হইব কোটি কোটি দেশপ্রেমিক আছে এখানে।আমি এইবার আদাজল খাইয়া ওদের ভারতকে পচাইতে শুরু করলাম।টানা গদামের উপর রাখতে শুরু করলাম।দাদাবাবুরা নাই পাইরা দেখি তাদের চোখে পানি আইসা গেল।একজন দেখি কয় তারা নাকি বাংলাদেশরে ভালবাসে।কিন্তু বাংলাদেশে ভারত বিরোধিতায় তারা নাকি কষ্ট পায়।এই জন্য তারা নাকি এই পেজ বানাইছে।যাক এই কথা শুইন্না আর ভারতরে পচাইলাম না।একটু পরে দেখি পেজের এডমিন এইবার ইসলামরে পচাইতে শুরু করল।কি জঘন্য ভাষায় আক্রমন।এইবার আমিও হিন্দু ধর্মরে পচাইতে শুরু করলাম।বেদের কয়েকটা নারী বিরোধী শ্লোক দিলাম।এইবার দেখি দাদারা কয় বেদ নাকি তাদের ধর্মগ্রন্থ না।তাদের ধর্মগ্রন্থ নাকি গীতা।
আমারে কয় পারলে গীতার একটা ভুল দেখান।গীতার ও একটা ভুল দেখাইলাম এই যে এইটা
শ্রীমদ্ভগবত গীতায় নারীঃ
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গীতাতে নারীকে পাপযোনী ও শুদ্রের স্তরের সম স্তর বিবেচনা করত গীতার নবম অধ্যায়ের ৩২ নং শ্লোকে বললেনঃ
মাং হি পার্থ ব্যপাশ্রিত্য যেহপি সু্যঃ পাপযোনয়ঃ ।
স্ত্রিয়ো বৈশ্যাস্তথা শুদ্রাস্তেহপি যান্তি পরাং গতিম্ ৩২
অর্থঃ হে পার্থ, স্ত্রীলোক, বৈশ্য ও শুদ্র অথবা যাঁহারা পাপযোনিসম্ভূত অন্ত্যজ জাতি, তাঁহারাও আমার আশ্রয় লইলে নিশ্চয়ই পরমগতি প্রাপ্ত হন।” সূত্রঃ শ্রীমদদ্ভগবদগীতা, লেখক- শ্রীজগদীশচন্দ্র ঘোষ, অধ্যায়-৯, শ্লোক-৩২, পৃষ্ঠা- ২০৭
এখন দেখি দাদারা আর কোন সারা শব্দ করে না।একটু পরে দেখি দাদারা বিজ্ঞান নিয়া টান মারল।এইবার দাদাদের প্রচণ্ড গদাম চালাইতে থাকলাম।গদাম খাইয়া দাদারা আর দেখি কোন সাড়া শব্দ করে না ।এইবার আমিও একটি চুপ মারলাম।ভাবলাম এইবার একটু যাইয়া ঘুমাই।কিন্তু ঘড়ির দিকে তাকায়া দেখি সকাল ৫ টা বাজে ।আমি তো পুরাই অবাক হইয়া গেলাম।এত সময় গেল কেমনে টের পাইলাম না।কইলাম দূর আর ঘুমামু না।গেমস খেলা শুরু করলাম।৬ টা ৩০পর্যন্ত গেমস খেইলা গেলাম গোসল করতে।গোসল কইরা পাঞ্জাবি পইরা গেলাম নামাজ পড়তে।দেখি বাহিতে ধুমায়া বৃষ্টি পড়তাছে।কোনরকমে মসজিদে গেলাম।মাথার উপর পেন্ডেল দেওয়া অবস্থায় নামাজ পড়লাম।আমার মাথায় দেখি ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি পড়তাছে।নামাজ কোনরকম শেষ করলাম।হুজুরে তারপর বয়ান দেওয়া শুরু করল।মোনাজাত দেখি হুজুরে আর শেষ করতে চায় না।মেজাজটা খারাপ হইয়া গেল।হুজুরে মোনাজাত শেষ করার সাথে সাথেই সবাই সাথে কোলাকুলি করা শুরু করলাম।আমার এক স্যার এর সাথেও কোলাকুলি করলাম।স্যার এ কইল তুমি পুলাডা খারাপ হইয়া গেছ।স্যার এর কাছ থাইক্কা পলাইলাম।এইবার বন্ধুগো লগে কোলাকুলি শুরু করলাম।এক বন্ধু কইল রাইতে নাকি ওর ১৫ হাজার টাকার মোবাইলটা হারায়া গেছে।মনে মনে খুশি হইলাম।ভাবলাম একদম ঠিক কাজ হইছে শালা বেশি পার্ট লয়।বৃষ্টি দেখি আবার পড়া শুরু করল।দৌড় মাইরা বাসায় চইলা আইলাম।সামান্য খাওয়া-দাওয়া করলাম।এক বন্ধু এই সময়ে কল দিল।কইল দোস্ত আজকে সারাদিন ঘুরমু।আমিও কইলাম ঠিক আছে ।ভাবলাম এইটু বিছনায় শুয়ে জিরিয়ে নিচে যাব।কিন্তু কে জান্ত এই শুয়াই হবে আমার শেষ শোয়া ।একদম ঘুম থেকে উঠলাম ৫ টা ৩০ এ।মানে আমার ইদের আনন্দ একদম মাটি