somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অনুগল্প: দুরে সরে যাবার গল্প

১০ ই মে, ২০১৬ রাত ৯:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

উৎসর্গঃ আমার বন্ধু মিদুল
আমি টেবিলের সামনে বসে আছি। আজ অবন্তীর বিয়ে, আমার অবন্তীর বিয়ে। খুব কষ্ট হচ্ছে,
বুকের এক পাশে চিনচিনে ব্যথা করে। চোখগুলো ঝাপসা হয়ে আসছে। মনে হচ্ছে ঙ্গান হারাচ্ছি,
সাথে অবন্তীকও।
কয়েক বছর আগে....
চড় খেয়ে গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছি আর সামনে থাকা রমনী (না ঠিক রমনী না বলা চলে বালিকা)
আমাকে আচ্ছা মত ঝাড়ি দিয়ে যাচ্ছে।
বালিকাঃ তোর সাহস তো কম না। নিজের চেহারা কোন দিন দেখছস?.....
কিছু বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু চুপ করে থাকাটা বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে হল।
এতগুলা ঝাড়ি খাওয়ার পর মনে হল কচু গাছের সাথে গিয়া গলায় দড়ি দেই কিন্তু পারলাম না। এই ঘটনার পর
থেকে আমি আর অবন্তীর সামনে যেতাম না। সময় আপন গতিতে চলতে থাকে সাথে আমরাও।
দেখতে দেখতে মাধ্যমিক পরিক্ষা চলে আসে। আজ হাই স্কুল লাইফের শেষ দিন, আমরা সবাই যার যার
মত মজা করছিলাম। হঠাৎ মনে হল অবন্তী আমার দিকে আসছে। প্রথমে বিষয়টিকে আমলে নেই নি।
আর যখন বুঝতে পার
লাম তখন মনে হল কেটে পরাই ভালো হবে। যেই ভাবা সেই কাজ। আমি চলেই যাচ্ছিলাম এমন সময়
অবন্তী পিছন থেকে ডাক দেয়।
অবন্তীঃ এই মিদুল।
আমিঃ ডাকিস কেন?
অবন্তীঃ কেন আমি কি তোকে ডাকতে পারি না।
ওর কথা শোনে মনে হল something is not right
আমিঃ পারবি না কেন, হাস পারে মুরগি পারে তুই ও পারিস। বলল কি জন্য ডাকছিস?
অবন্তীঃ বাজে বকিস না। তোর নাম্বারটা দেত।
আমিঃ কেন নাম্বার দিয়ে কি করবি?
অবন্তীঃ ভাত খাব any problem?
আমিঃ No my dear no problem.
অবন্তীঃ Then what are you waiting for?
আমিঃ আচ্ছা নাম্বার লিখ 017........। তোরটা দিবি না?
অবন্তীঃ ইসস সখ কত মনে হচ্ছে মায়ের হাতের মোয়া। যা ভাগ।
ওর কথা শুনে রাগে আমার টুট টুট টুট গালি দিতে ইচ্ছা করছিল কিন্তু পারিনি। কারণ আমি যে তাকে ভালোবাসি
নিজের থেকেও বেশি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিনা আমাকে বোকা বানিয়ে নাম্বারটা নিয়ে গেল। আফসুস
এক বালতি আফসুস
হাই স্কুল লাইফ এক সাথে পড়াশুনা করলেও আমরা ভিন্ন কলেজে পড়তাম। সবকিছু ঠিকই চলছিল আমার মন
থেকেও ধীরে ধীরে দুরে সরে যাচ্ছিল কিন্তু তারিখ টা আমার ঠিক মনে নাই রাত আনুমানিক ১২টার
দিকে আমার ফোনে কল আসে। আমি ছোট থেকে ঘুম কাতুরে ছেলে তাই ঠিক সময়ে রিসিভ
করতে পারিনি। সকালে ঘুম থেকে ওঠে দেখি আননোন নাম্বার থেকে ফোন আসছে। ভদ্রতার
খাতিরে বেক করলাম তারপর যা ঘটল তার জন্য আমি মোটেও রেডি ছিলাম না। ফোনের অপর
পাশথেকে কেউ একজন আমাকে আচ্ছামত ঝাড়ি দিয়ে যাচ্ছে। কথাগুলা এমনভাবে বলে যাচ্ছে মনে
হয় আমরা কত দিনের পরিচিত। আমি বোঝার চেষ্টা করছি কে আমাকে এমন ভাবে ঝাড়তে পারে। এমন
সময় মনে হল অবন্তী। আমি সিউর হবার জন্য বললাম অবন্তী। সাথে সাথে ফোনটা কেটে দিল।
কিছুক্ষন পর মেসেজ আসল..
অবন্তীঃ যাক চিনতে পাচ্ছিস আমাকে।
আমিঃ তোকে কি ভোলা যায় তুই সবসময় আমার সাথে আচ্ছিস।
অবন্তীঃ কি?
আমিঃ না কিছু না। কেমন আচ্ছিস?
এমনভাবেই শুরু হয়েছিল অবন্তীর সাথে আমার কথা বলাা। দেখতে দেখতে কলেজ শেষ হয়ে
এল। ইদানীং অবন্তী আমার খুব টেক কেয়ার করে। ওর কথা শুনে মনে হয় সে আমার প্রতি দূর্বল
হয়ে পরেছে। সব কিছু যখন ঠিকঠাক চলছিল ঠিক তখনই জানতে পারলাম আমার অবন্তীর...
কোন এক অজানা কারণে আমি আবার বাস্তবে ফিরে আসলাম। চোখ এখনও ঝাপসা হয়ে আছে কিন্তু
বুকের ব্যথা কমে আসছে। ঝাপসা চোখে দেখছি লাল পোশাক পড়া কেউ আমার দিকে আসছে। লাল
পোশাক পড়া মেয়ে সামনে আসল তখন তাকে ভালো করে দেখার জন্য চোখগুলা মুছলাম কিন্তু
তারপর আর কাউকে দেখতে পেলাম। হয়ত মনের ভুল।
আমি এখনও বসে আছি। এবার মনে হচ্ছে কিচ্ছু একটা করা উচিত না হলে পরে আফসুস করতে হবে।
আমি উঠে দাড়ালাম মনের সমস্ত শক্ত এক করে চলে গেলাম অবন্তীর রুমে। ঘর ভর্তি মানুষের
সামনে ওর হাত ধরলাম। আমার কান্ড দেখে সবাই অবাক আর সব থেকে বেশি অবাক হয়ত অবন্তী
নিজে। তারপর ওকে বললাম
আমিঃ যাবি আমার সাথে?
অবন্তীঃ হুমম কিন্তু বাবামার কি হবে?
আমিঃআমি জানি না তাদের কি হবে? আমি শুধু তোকে ভালোবাসি। পারবি না আমার সাথে যেতে? আমি হয়ত
তোকে প্রতিদিন KFC তে খাওয়াতে পারব না কিন্তু ক্রান্ত দিন শেষে তোর জন্য গোলাপ আনতে
ভুলে যাব না। এখন বল যাবি কি আমার সাথে?
কথাগুলা বলার সময় নিজেকে তাহসানের মত মনে হচ্ছিল।
অবন্তীঃ হুমম যাব চল।
এমন সময় আবারও কারো ধাক্কা খেয়ে আমি বাস্তবে ফিরলাম আর দেখলাম আমি এখনও টেবিলের
সামনে বসে আছি মনে মনে হাসলাম কিছুক্ষন। তারপর কান্নার শব্দ শুণতে পেলাম বুঝতে বাকি রইল
অবন্তী চলে যাচ্ছে শ্বশুরবাড়িতে। আমি কিছুই করতে পারলাম না। অবন্তী এখন গাড়িতে চোখদুটো
আবার ঝাপসা হয়ে আসছে। ঝাপসা চোখে আবারও দেখলাম অবন্তী আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এক
সময় গাড়ি চলে গেল আমি এখনও পথ চেয়ে আছি এই আশায় চেয়ে আছি যদি সে ফিরে আসে? কিন্তু
ও ফিরে আসল না।
পরিশিষ্টঃ সব গল্প যে closeup কাছে আসার গল্প হবে এটা ভাবা ঠিক না। কিছু গল্প দুরে সরে যাওয়ার হয়ে
থাকে।
বি.দ্রঃ গল্পটি পুরোটা সত্য না হলেও কিছুটা সত্য। নায়কের নাম ঠিক থাকলেও নায়কের বিশেষ
অনুরোধে নায়িকার ছদ্দ নাম ব্যবহার করা হয়েছে। ভুলগুলা ক্ষমার চোখে দেখবেন।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০১৬ রাত ৯:৫৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমেরিকানরা ভীষণ কনজারভেটিভ

লিখেছেন মুনতাসির, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:২৬

আমেরিকা নিয়ে মন্তব্য করার যোগ্যতা আমার নেই—এটা প্রথমেই বলে ফেলা ভালো। আমি শুধু আমার অভিজ্ঞতার কথা বলছি। আমেরিকা তথা উত্তর আমেরিকাতে আমার যাওয়া হয়েছে বেশ কিছুবার। সবগুলো ভ্রমণ যোগ করলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২১

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

ট্রাম্প হচ্ছে একজন আপাদমস্তক বিজনেসম্যান। কমলা হ্যা্রিস যেহেতু ইন্ডিয়ান বংশোদ্ভূত তাই ইন্ডিয়ান ভোটার টানার জন্য সে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে জাস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

চট্রগ্রামে যৌথবাহিনীর ওপর ইসকনের এসিড হামলা সাত পুলিশ আহত।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৪৩

এসিড নিক্ষেপে আহত পুলিশ সদস্য



চট্টগ্রামে পুলিশের ওপর ইসকন সমর্থকদের হামলা ও এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানব সভ্যতা চিরতরে ধ্বংস হবে কি করে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৬



সে এক বড় অদ্ভুত বিষয়।
চিন্তা করে দেখুন এত দিনের চেনা পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। বিশাল বিশাল ইমারত ভেঙ্গে যাবে, গুড়িয়ে যাবে। মানুষ গুহা থেকে বেরিয়ে আজকের আধুনিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসকন

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৭


INTERNATIONAL SOCIETY FOR KRISHNA CONSCIOUSNESS যার সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ISKCON এর বাংলা অর্থ হল আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ। যে সংঘের ঘোষিত উদ্দেশ্য হল মানুষকে কৃষ্ণভাবনাময় করে তোলার মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রকৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×