পুরা একটা দিন সামহোয়ার ইন ব্লগ শোকে স্তব্ধ। মিথিলার শোক। হাহাকারে ভরপুর একেকটা পোস্ট। শোকাহতদের আমিও একজন। এলিজি আর শোকগাথায় ভরে গেছে। সেই সঙ্গে মিথিলার সঙ্গে শেষ কথোপকথনের রেশ। কেউ কেউ তো তার ওইলোকের জগত ঘুরে চাও খেয়ে এসেছেন!
কিন্তু এখন নিজেকে বড্ড প্রতারিত মনে হচ্ছে। ভীষণ প্রতারিত। মনে হচ্ছে আমার আবেগ নিয়ে দারুণ একটা খেলা খেলল কেউ বা কারা যেন! সঙ্গত কারণ আছে এই উপলব্ধির। মিথিলার পোস্ট, তার প্রেমিক রুবেলের পোস্ট এবং প্রাসঙ্গিক কিছু মন্তব্য আমাকে দ্বিধায় ফেলেছে।
কিছু ব্যাপার পরিষ্কার হওয়া দরকার। এইখানে কার মোটিভ কী? এর আগে পথিক নামে একজন ব্লগার রূপা নামে এক কাল্পনিক নারীকে সফলভাবেই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। রূপা কবিতা লিখত। পরে পথিক নিজেই জানিয়েছেন তা। রুবেল হয়তো একই পথ ধরেছিল। ক্যান্সারাক্রান্ত একটা মেয়ে, তার কল্পনার নারী। এইখানে যেই সমস্যাটা হলো সেটা ব্লগীয় আবেগ। মিথিলাকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে বেশ কিছু মিথ্যাচার করতে হয়েছে। কিন্তু কিছু ব্লগার তা সত্যি ভেবেছেন। আগ্রহী ও কৌতুহূলী হয়েছেন। তাদের কারণেই মিথিলাকে ব্লগাতে হয়েছে। মানুষের আবেগ নিয়ে খেলা করতে গিয়ে তাদের বুদ্ধিমত্তাকে এড়িয়ে গিয়েছেন রুবেল। যে কারণে মিথিলার পোস্টে বরফ পড়ে এমন সময় যখন নিউইয়র্কের ইতিহাসে ৯০ বছরে এই প্রথম বরফের চিহ্ন দেখা যায়নি। মিথিলা নিউইয়র্ক থেকে আনফেইথফুল গানের লিরিকস দেয়। পরের পোস্টে সে নিউইয়র্ক যায়।
তদন্ত এরপর সিলেট-ঢাকা হয়ে নিউইয়র্ক ঘুরে আসে। ঢাকার উত্তরায় সিলেমন রেস্ট হাউজে মিথিলা, তার বাবা কিংবা রুবেলের হদিস মেলেনা রেজিস্টার বুকে। এমনকি সিলেটের সেই পাড়াতেও না। নিউইয়র্কের কোনো হাসপাতালেই মিথিলা নামে ক্যান্সারাক্রান্ত কোনো বাঙালী মেয়ের লাশের খোজ পাওয়া যায় না।
অথচ মিথিমন কাব্য হয়। তৈরি হয় শিয়ামিজ টুইন। তাহলে রাগইমনের মোটিভ কী? তিনি একে উৎসাহ দিয়েছেন। একজন ক্যান্সারাক্রান্তের ডায়ালাইসিস হয় না। তার মতো ডাক্তারের তা জানার কথা। হলেও বা। কেমোথেরাপিই হলো না হয়। কিন্তু দুটোই খুব ব্যাথাতুর চিকিৎসা। সেখান থেকে উঠে এসে পরদিনই ব্লগিং-চ্যাটিং করা খুব কঠিন। ভার্চুয়ালিই সম্ভব। বাস্তবে না। ইমন চেপে গেছেন তা। কারণ? তার পাসওয়ার্ড অপব্যবহার ধামা চাপা। উনি মিথিলার সঙ্গে কথা বলেছেন দাবি করেছেন উল্টো।
হঠাৎই সুচিত্রা নামের এক ব্লগার তার গাত্রোদাহের কারণ হয়েছেন। সূচিত্রার একটা কবিতা থেকেই সংঘাত। সুচিত্রা তাকে ব্যান করার পর ইমন পোস্ট দিয়েছেন তা নিয়ে। তাতেও ঝাল মিটেনি। উনি মডারেটর ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন তার পোস্ট প্রথম পেজে ব্যান করে। অথচ সুচিত্রার এমন কোনো পোস্ট নেই যে কারণে তাকে প্রথম পেজে ব্যান করা যায়।
যে রাতে কৌশিকের পাসওয়ার্ড নিয়ে ঢুকলেন তিনি, তার উদ্দেশ্য ছিল স্রেফ সুচিত্রার কবিতায় কমেন্ট দেওয়া। সেটা তিনি করতে কৌশিকের আইডি ব্যবহার করেছেন। আলীপ্রাণেরটাও করতে পারতেন। করেননি। প্রথমে নিজের পোস্টে গিয়ে নিজেকে কমেন্ট দিলেন যে আপনার গদ্য আপনার কবিতার চেয়ে শক্তিশালী, তারপর সুচিত্রাকে। এরপর হিমু আর ধুসর গোধুলীর পোস্টে কমেন্ট দিতে গিয়ে ফাসলেন। কারণ উনি তার ছন্দ ছড়া দিয়ে কমেন্ট দিয়েছেন ওখানে। পরে কৌশিকের আইডিতে অআবার ঢুকে ইংরেজীতে কমেন্ট দিয়ে পাস ওয়ার্ড হ্যাক হয়েছিল বোঝাতে চেয়েছেন। বুদ্ধিমানরা ঠিকই বুঝেছে।
এই গুহ্য ব্যপারটা যখন প্রমাণাদিসহ ফাস হবার, তখন মিথিলা মরল। রাগইমন ঝাপিয়ে পড়লেন সেটা সত্য প্রমাণে। আবেগের খিচুরি পাকানো হলে ব্লগারদের। বেশ বেশ। (চলবে)