বিশ্ব ব্যাপী সোলার বিদ্যুতের ব্যাবহার বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে এর স্থাপনা খরচ দ্রুত কমে আসছে। উপরের চিত্র অনুযায়ী বর্তমানে এই মুল্য ওয়াট প্রতি দুই ডলারের সামান্য বেশি। এই হিসেবে রামপাল কেন্দ্রের জন্য স্থাপনা খাতে বরাদ্দকৃত দুই বিলিয়ন ডলার দিয়ে প্রায় ১০০০ মেগাওয়াটের সোলার প্যানেল বসান যাবে। আর পরবর্তিতে কয়লার মুল্য ও বিদ্যুত কেন্দ্র ব্যাবস্থাপনার জন্য যে বিপুল পরিমান ব্যায় হবে তাও সৌর বিদ্যুতে বিনিয়োগ করা হলে প্রতি বছর আরো অন্তত একশ মেগাওয়াটের সৌর প্যানেল বসান যাবে।
সৌর বিদ্যুতের একমাত্র সমস্যা রাতে উৎপাদন না থাকা। তবে শুধুমাত্র সন্ধার পিক আওয়ার বাদ দিলে বিদ্যুতের ব্যাবহার দিনেই বেশী হয়। অফিস আদালত যেমন দিনেই খোলা থাকে তেমনি কল কারখানার উৎপাদনও হয় দিনের বেলা। প্রয়োজনে গ্যাস ও তেল ভিত্তিক কেন্দ্র গুলিতে দিনের বেলা কম বিদ্যুত উৎপাদন করা হবে। এতে যে তেল গ্যাস বেচে যাবে তা দিয়ে সন্ধায় পিক আওয়ারের চাহিদা মেটান যাবে।
সৌর বিদ্যুতের সুবিধা অনেক। এতে প্রাথমিক স্থাপনা খরচ কিছুটা বেশী হলেও দীর্ঘ মেয়াদে জ্বালানি ও পরিচালনা ব্যায় ছাড়াই প্রচুর বিদ্যুত উৎপাদন করা যায়। পরিবেশ বান্ধব এই উৎসের জন্য বাংলাদেশ খুবই উপযুক্ত স্থান, কারণ এখানে রোদের তীব্রতা বেশী এবং ঝড় বৃস্টির অল্প কয়েক দিন বাদে প্রায় সারা বছরই প্রচুর রোদ থাকে।
সৌর বিদ্যুৎ প্যানেল এক যায়গায় কেন্দ্রিভুত করার প্রয়োজন নাই। সারা দেশে ছোট ছোট (২-৩ মেগাওয়াট) কেন্দ্র করা হলে বিদ্যুত পরিবহনের জন্য ট্রান্সমিশন লাইন ও সিস্টেম লস কম হবে। এ'জন্য দামি ফসলী জমিও ব্যাবহার করা প্রয়োজন হবে না। পতিত অনাবাদী জমি, রাস্তার দুই পাশ, গোচারণ ভুমি, হাস মুরগির খামার, নদীর চর, বিল বা জলাভুমির মধ্যে একটু দুরে দুরে ১৫-২০ফিট পিলারের উপর সোলার প্যানেল বসান যেতে পারে।
কয়লা বা গ্যাস ভিত্তিক বৃহৎ বিদ্যুত প্রকল্প স্থাপনে ৫-৭ বছর সময় লাগে। আর পুরো ব্যাবস্থা গড়ে ওঠার আগে উৎপাদন শুরু করা সম্ভব নয়। কিন্তু সোলার প্যানেল থেকে দ্রুততম সময়ে বিদ্যুত পাওয়া সম্ভব। যখনই যে প্যানেল বসান হবে তখনই তা থেকে উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে।
তাই বিতর্কিত রামপাল প্রকল্পের অর্থে দেশব্যাপী সোলার প্যানেল বসানোর প্রস্তাব বিবেচনা করা যেতে পারে
সুত্র: Solar Industry Data