ফারাক্কার পর এবার টিপাইমুখ বাঁধের মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটানোর যে মারাত্মক কর্মসুচী বাস্তবায়িত করতে যাচ্ছে তার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই দেশে-বিদেশে বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ জানানো শুরু হয়েছে। দেশে এই প্রতিবাদের প্রধান কর্মসুচি হিসেবে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়া হয়েছে। এই ব্লগেও এ'সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে পণ্য বর্জনের মাধ্যমে কি ভারতকে এই অপকর্ম থেকে বরত রাখা সম্ভব? আসুন হিসেব করে দেখি।
ভারতীয় হাইকমিশনারের বক্তব্য অনুযায়ী এই প্রকল্পের মুল উদ্যেশ্য হচ্ছে ১৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনে সক্ষম জলবিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপন করা। এর মাধ্যমে বছরে মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমান হবে ১৫০০*১০০০*২৪*৩৬৫*০.৮=১০.৫ বিলিয়ন ইউনিট।(এক ইউনিট = এক কিলোওয়াট আওয়ার, উৎপাদন ফ্যক্টর ৮০%)। বাংলাদেশে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের গড় মুল্য ৩ টাকা হিসেবে এই বিদ্যুতের দাম হবে ৩১.৫ বিলিয়ন টাকা।
এবার দেখি ভারত বাংলাদেশে কি পরিমান পন্য রফতানী করে। Click This Link সাইটের হিসেব অনুযায়ী ২০০৭-২০০৮ অর্থ বছরের প্রথম নয় মাসে মোট রফতানীর পরিমান ছিল ২.৪ বিলিয়ন ডলার, বছর হিসেবে যা হবে ৩.২ বিলয়ন। এটা বৈধ পথে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা পন্যের হিসাব। এর সাথে অবৈধ পথে আসা পন্য যোগ করাহলে বছরে অন্তত ৫ বিলিয়ন ডলারের পন্য ভারত থেকে বাংলাদেশে আসে। আমরা যদি পন্য বর্জনের মাধ্যমে আমদানীর পরিমান মাত্র ১০% কমাতে পারি তাহলেই ভারতের রফতানী কমে যাবে ০.৫ বিলিয়ন ডলার বা ৩৫ বিলিয়ন টাকা। যা টিপাইমুখ বাঁধের মাধ্যমে উৎপাদিত বিদ্যুতের দামের চেয়ে বেশী।
ভারত থেকে আসা পন্যের মধ্যে সাধারন দরিদ্র মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় চাল-ডাল যেমন আছে তেমনি আছে বহু বিলাস দ্রব্য। এমনসব পন্যও আছে যা দেশেও তৈরী হয়। আমরা যদি ভারতীয় বিলাশদ্রব এবং বাংলাদেশে উৎপাদিত বা অন্যদেশ থেকে আসা বিকল্প আছে এমন পন্য বর্জন করতে পারি তাহলেই তার পরিমান ১০% এর চেয়ে অনেক বেশী হবে।
সুতরাং আসুন ভারতীয় পণ্য বর্জন আন্দোলন জোরদার করে টিপাইমুখ বাঁধ প্রতিহত করি, দেশকে এক মহাবিপর্জয় থেকে রক্ষা করি।