যারা সত্যিই আল্লাহর উপর সম্পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রাখেন মনে হচ্ছে তারাই, আল্লাহর অলৌকিকত্বে অবিশ্বাস করছেন। গতকাল থেকে কয়েকটা পেজে, এবং কিছু মানুষের লেখার ইত্তর দিতে লিখছি! রেশমা কে বাঁচানো নিয়ে অনেকেই অনেক প্রশ্ন তুলছেন। যেগুলো চোখে পড়েছে, আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে উত্তর দেই!
১/ রেশমা কিভাবে শুকনো খাবার আর পানি খেয়ে জীবিত ছিল?
উত্তরঃ আপনারা কয়জন জানেন যে, রেশমা তিন তালায় নামাজ ঘরে আটকে ছিল! নামাজ ঘরে আটকে থাকাটাই আমার ঈমানের জন্যে যথেষ্ট। কিন্তু তবু যাদের জন্যে যথেষ্ট না তাদের বলি, সাধারণত নামাজ ঘরে বিস্কুটের টিন, পানি ইত্যাদি থাকেই। যতদূর মনে পড়ে, আমাদের স্কুলে ছিল। শুকনো খাবার পাবার এটা একটা সোর্স হতে পারে এখানে না থাকার কোন কারণ নেই!
২/ প্রধানমন্ত্রী মূল ঘটনার সাতদিন পরে আহতদের দেখতে গিয়েছিলেন হাসপাতালে। আর এখানে এক ঘণ্টার মধ্যে চলে গেলেন?
উত্তরঃ আপনাদের সন্তুষ্টির উত্তর দেই। এটা ভোটের রাজনীতি! রেশমা কে নিয়ে আবেগাপ্লুত মানুষ। এই সময়টাতেই যাওয়াটাই সবচেয়ে বড় সুযোগ! এইজন্যেই তিনি তার কাজ ফেলে সেখানে ছুটে গিয়েছিলেন। আর ফোনে কথা বলার ব্যাপারটা? ওটাও একই। তিনি নিজে ফোনে কথা বলেছেন। রেশমা নিজে থেকে বলেনি প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলবে।
৩/ এক জায়গায় দেখলাম, বাংলাদেশে নাকি "নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবার" বললে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে! এখানে কিভাবে দেয়া হলো?
উত্তরঃ আপনাদের জ্ঞাতার্থে বলি, সাভার দূর্ঘটনার প্রথম দিন থেকেই যখন মানুষকে উদ্ধার করা হচ্ছে তখন থেকেই, আল্লাহু আকবার বলেই উদ্ধার করা হচ্ছে! এখানে নতুন কোন ঘটনা ঘটেনি।
৪/ রেশমা কেন খুব বেশি ক্লান্ত না, অথবা অসুস্থ না? তাকে কেন ফ্রেশ দেখাচ্ছে?
উত্তরঃ আপনি পাগল নাকি??!! শাহীনার কথা মনে আছে? শাহীনা কিন্তু পাঁচদিন একেবারে না খেয়ে নিচে পড়ে ছিল। কিন্তু সে জোরে চিৎকার করছিলো, যেন তাকে বাঁচানো হয়। আমরা সবাই সেই চিৎকার শুনেছি। পাথরে ঢাকা তাকে দেখা যায় না। কিন্তু পাথর ভেদ করে তার কণ্ঠ শোনা গিয়েছিলো! এখন বলেন তো, "একটা মানুষ কিভাবে পাঁচদিন, কোন কিছু না খেয়ে এতো জোরে চিৎকার করতে পারছিলো! এই প্রশ্নটা কেন আপনারা করেননি? ওটার নামই জীবনীশক্তি! শাহীনা যদি পাঁচদিন না খেয়ে অতো জোরে চিৎকার করতে পারে, তাহলে রেশমাও অন্তত শুকনো খাবার-পানি খেয়ে মিনমিনে গলায় কথা বলতে পারে। এটার নামই অলৌকিকত্ব! যদি এই অলৌকিকত্ব না বিশ্বাস করেন, তাহলে তো পুরো ঘটনাটাই মিথ্যে হয়ে যায়।
৫/ দুইজন মানুষ নাকি দুই কথা বলেছে! উদ্ধারকর্মী কিশোর মনোয়ার এবং সেনা সদস্য! দুজনেই বলেছে, তারা প্রথমে হাত নড়া দেখতে পেয়েছে! দুইটা বক্তব্য একইসাথে কিভাবে সত্যি হওয়া সম্ভব?
উত্তরঃ আপনাদের কেন সাধারণ ব্রেইন নেই, আমি জানিনা। কিন্তু আমার সাধারণ সেন্স বলে, এমন একটা জায়গায় উদ্ধারকাজ শুধুমাত্র একটা কিশোর ছেলের পক্ষে করা সম্ভব নয়। আমি বলি দুইটাই সত্যি! ওখানে সেনা সদস্য এবং মনোয়ার দুজনেই ছিল! এবং মনোয়ার কিন্তু তার বক্তব্যে বলেছেও যে, "আমি আমার পাশে স্যারকে সাথে সাথে বলি।" তাদের দুজনেরই কাছাকাছি অবস্থানের কারণেই কিন্তু দুজনের বক্তব্যেই "হাত নাড়ার" ব্যাপারটি মিলে গিয়েছে! বানানো ঘটনা হলে মিলতো না!
৬/ এইটা সবচেয়ে বড় পয়েন্ট! রেশমার "সালোয়ার কামিজ"? ওটা কিভাবে এতোদিনে ময়লা হয়নি?
উত্তরঃ এই উত্তরটা একটু ভাবার মতো। ধরে নিন, রেশমা আসলে ১৭ দিন ওখানে ছিল না। ঐদিন সকালেই ওখানে ওকে রাখা হয়েছে। কিন্তু সে পাথরের স্তুপের ভিতরে ছিল। এটাতো সত্যি। আমরা সবাই ভিডিওতে দেখেছি কিভাবে রড কেটে, পাথর সরিয়ে ওকে বের করা হয়েছে। আচ্ছা, সতেরো দিনের ধুলাবালির কথা বাদ দিন, তার পাশে রড কাটতে, আর পাথর ভাঙতে যে ৪৫ মিনিট সময় লেগেছে তাতেই তো তার ধুলোয় মাখামাখি হয়ে যাবার কথা। যারা উদ্ধার কর্মী ছিল তারা তো ময়লা করে ফেলেছিলেন নিজের শরীর! কিন্তু ভিতরে থেকে রেশমার কামিজের কিছু হয়নি! এটাই কি রেশমা যে ঘরে ছিল সেটা কতোটা দুর্ভেদ্য এবং সুরক্ষিত ঘর ছিল সেটা প্রমাণ করে না? বাইরের ধুলোবালি, এমনকি একেবারে হাতের কাছে যেটা ভাঙা হচ্ছে সেই ধুলোবালি পর্যন্ত ভিতরে ঢুকছে না, তাহলে ১৭ দিনে যে ধ্বংসযজ্ঞ চলেছে, সেটা কিভাবে ঢুকবে? আরো ভালোভাবে বুঝতে একটা কাজ করুন। আপনার রুমের দরজা জানালা খুব ভালোভাবে বন্ধ করে দিন। এমনভাবে বন্ধ করুন যেন, ভিতরে খুব সামান্য পরিমাণ ধুলোবালি ঢুকে, অথবা হালকা আলো ঢুকে! এমন অবস্থায় ২০দিন বন্দী থাকুন। তারপর বের হয়ে দেখেন, আপনার জামা কাপড়ে কি কোন ময়লা ভরেছে কিনা? আপনি দেখবেন, সেটা আগের মতোই আছে। তারপর নিজেই কারণ মিলিয়ে নিন!
---
আপাতত আর কোন প্রশ্ন চোখে পড়েনি। পড়লে মন্তব্যে লিখুন। আমি উত্তর দেবার চেষ্টা করব।
আর হ্যা, সৃষ্টিকর্তার অলৌকিকত্বে বিশ্বাস রাখুন! এই ঘটনার একটা মজার ব্যাপার হচ্ছে, আপনাদের তথাকথিত নাস্তিক, অবিশ্বাসীরা সত্যি অলৌকিকত্বে বিশ্বাস করেছে, আর তথাকথিত বিশ্বাসীরা অবিশ্বাসে আছে!
মেয়েটা বেঁচে ফিরেছে, তাতে আল্লাহর কাছে কোটি কোটি শোকরিয়া! রেশমা হোক, আমাদের জীবনের সকল বাধা জয় করে, হতাশা দূর করার অনুপ্রেরণা!
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০১৩ সকাল ১১:৪৭