বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বে ফ্যসিস্ট আওয়ামিলীগের পতনের পর দরকার ছিল বিপ্লবী সরকার গঠন। যে বিপ্লবী সরকারে উচিত ছিল বিপ্লবের স্টেকোহোল্ডারদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা। একমাত্র তাহলেই এই রক্তক্ষয়ী বিপ্লবের কাঙ্খিত সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হত। কিন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টামন্ডলির অধিকাংশই বিপ্লবের অংশীদার নয়। যে কারনে এই উপদেষ্টামন্ডলি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ১ দফা দাবীর ফ্যসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপ এবং নতুন রাজনৈ্তিক বন্দোবস্ত কায়েমের বিষয়ে কোন বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিতে সমর্থ হচ্ছে না।
সবচেয়ে দুঃক্ষজনক অবস্থান হচ্ছে বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈ্তিক দল বিএনপির। ১৬ বছর দমন, নির্যাতনের স্বীকার এই দলটি দেশের জনগনকে সংঘবদ্ধ করতে সবসময়েই চরম ব্যার্থতার পরিচয় দিয়েছে। এখন সারাদেশের ছাত্রদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সাফল্যের মধু খাবার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে ক্ষমতায় যাবার জন্য। যেহেতু এই দেশের অধিকাংশ মানুষ অশিক্ষিত ও চরম দরিদ্র , তাই এই দরিদ্র মানুষদের মিথ্যা আশ্বাষ , সামান্য টাকা ও মার্কার লোভ দেখিয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করা অনেকটাই সহজ। বিএনপি এই কারনেই সংস্কার বা দেশ সেবায় এতটুকু আগ্রহী নয়। তাদের আগ্রহ কেবল নির্বাচনে!
জিয়া পরিবারের লোভের মাত্রা সম্পর্কে আমাদের সবারই খুব ভাল করেই জানা আছে। শেখ ও জিয়া পরিবার একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। এদের চিন্তা চেতনায় দেশ ও জনগন এক বিন্দুও নাই। ক্ষমতার জন্য এরা সবকিছু করতে পারে। ক্ষমতায় যেতে মরিয়া বিএনপির ফ্যসিস্ট আওয়ামিলীগের পুনর্বাসনেও বিন্দুমাত্র আপত্তি নাই। বিপ্লবীদের সামনে কি অবস্থা হবে, তা নিয়ে তাদের কোন চিন্তাই নাই। আসলে বিএনপি যদি বিপ্লবে সত্যিই অংশগ্রহন করত , তাহলে তাদের পক্ষে সম্ভব হত না আজকের এই সেচ্ছাচারী অবস্থান নেয়া। আন্দোলনে বিএনপির কর্মীরা ছাত্রদের ভীরে মিশে গিয়েছিল কিন্ত বিএনপির নেতৃবৃন্দ নয়। তাদের কাউকেই আমরা সেসময় দেখিনি। বেশিরভাগই নেতাই বিদেশে চলে গিয়েছিল কিংবা গর্তে মুখ লুকিয়ে রেখেছিল। অনলাইনে বিপ্লবের পক্ষে অত্যন্ত সক্রিয় ভুমিকায় দেখেছি কেবল মির্জা ফখরুলের জামাতা ফাহাম আব্দুস সালাম, রুমিন ফারহানা , জাহেদূর রহমান প্রমুখকে।
ফ্যসিবাদি ব্যবস্থা বিলোপ এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত কায়েমের পথে এখন প্রধান কাটা বিএনপি। তাই বিএনপির মাঝে ব্যপক সংস্কার প্রয়োজন। এই দলে গনতান্ত্রিক চর্চা এবং শহীদ জিয়াউর রহমান এর আদর্শকে ফিরিয়ে আনা অতি আবশ্যক। আশা করি আজকেরএই সেমিনারে বিএনপি পন্থী জুলাই বিপ্লবের স্টেক হোল্ডারদের কাছ থেকে আমরা কাংখিত কোণ দিক নির্দেশনা পাব ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:৪৪