somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চিঠি।

১৩ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ৯:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



চিঠি: এক হারিয়ে যাওয়া অনুভূতির নাম

চিঠি—শুধু একটুকরো কাগজ নয়, এটি আবেগের স্পর্শ, অপেক্ষার মধুরতা, ভালোবাসার নিঃশব্দ উচ্চারণ। এক সময় মানুষের ভাব বিনিময়ের প্রধান মাধ্যম ছিল এই চিঠি। স্বামী লিখতেন স্ত্রীর কাছে, স্ত্রী লিখতেন স্বামীর কাছে। মা লিখতেন সন্তানের কাছে, বন্ধুরা বিনিময় করত অন্তরের কথা। প্রতিটি চিঠির শব্দে থাকত গভীর ভালোবাসা, প্রতিটি বাক্যে লুকিয়ে থাকত অপেক্ষার অনুরণন।

একটা সময় ছিল, যখন প্রিয়জনের চিঠির অপেক্ষায় মানুষ অধীর হয়ে থাকত। প্রতিটি দিন কাটত এক অদ্ভুত উন্মুখতায়—"চিঠি এলো কি?" ডাকপিয়নের পায়ের শব্দে হৃদয় কাঁপত, প্রাপকের হাতে চিঠি পৌঁছানোর মুহূর্তটি হয়ে উঠত এক অমূল্য পাওয়া। হাতে লেখা চিঠির কালি শুকানোর আগেই সে চিঠি হয়ে উঠত অমূল্য ধন, যত্ন করে রাখা হতো বুকের গহীনে।

কিন্তু এখন? এখন চিঠির সেই মায়াবী দিনগুলো হারিয়ে গেছে। চিঠি লেখার সময় কই? সবাই ব্যস্ত—এক অদ্ভুত যান্ত্রিক ব্যস্ততা, যেখানে অনুভূতির চেয়ে সময়ের মূল্য বেশি। এক সময় যেখানে জেনারেল পোস্ট অফিস (জিপিও) ছিল মানুষের ভিড়ে মুখর, এখন সেখানে কেবল নীরবতা। লম্বা লাইনের সেই চিরচেনা দৃশ্য ম্লান হয়েছে। ডাকঘরের ব্যস্ততাও এখন শুধু টেবিল-ওয়ার্কে সীমাবদ্ধ।

তবে আমি এখনো চিঠি লিখি। হ্যাঁ, আমি লিখেছি। ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছি বন্ধুদের, লিখেছি এক সরকারি কর্মচারীর কাছে, লিখেছি কাছের কিছু মানুষকে। জানি, হয়তো সাত কর্মদিবসের মধ্যে চিঠিগুলো পৌঁছে যাবে তাদের হাতে। হয়তো তারা অবাক হবে—"এখনো কেউ চিঠি লেখে!" তাও আবার ইয়ো ইয়ো মার্কা পোলাপান। যারা ফেসবুক চালায়, জুমে মিটিং করে।

২০০৭ সালের পর মানুষ চিঠি লিখা ভুলেই গেছে।

আমি বিশ্বাস করি, চিঠির মধ্য দিয়ে আমরা শুধু শব্দ নয়, অনুভূতি পাঠাই। সময় বদলালেও, প্রযুক্তি যতই এগিয়ে যাক, কিছু অনুভূতির আবেদন কখনো ফুরায় না। হারিয়ে যাওয়া চিঠির দিনগুলো হয়তো ফিরবে না, কিন্তু আমরা চাইলে সেই আবেগটুকু আজও বাঁচিয়ে রাখতে পারি।

তাই আমি লিখি, লিখবো… যতদিন হৃদয়ে অনুভূতি আছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ৯:৩০
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=স্মৃতির মায়ায় জড়িয়ে আছে মন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:০৯


ঘাস লতা পাতা আমার গাঁয়ের মেঠো পথ, ধানের ক্ষেত
জংলী গাছ জড়ানো লতাবতী - আহা নিউরণে পাই স্মৃতির সংকেত,
রান্নাবাটির খেলাঘরে ফুলের পাপড়িতে তরকারী রান্না
এখন স্মৃতিগুলো পড়লে মনে, বুক ফুঁড়ে বেরোয় কান্না।

ফিরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×