somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে আপনি কাকে দেখতে চান ?

০৬ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইতিমধ্যেই আমরা জেনেছি যে, নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা দিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ডঃ ইউনুস ছাত্রদের এই অনুরোধে সারা দিয়ে রাজী হয়েছেন। এটা বিশাল বড় একটা স্বস্তির বিষয়। চারিদিকে বিজয় উল্লাশের মাঝে আমরা ভুলে যাচ্ছি যে, দেশে গনহত্যা ঘটিয়ে আওয়ামিলীগ নেত্রী পালিয়ে ইন্ডিয়া চলে গেছে। এছাড়া আওয়ামিলীগের সকল মন্ত্রী , এম্পি থেকে শুরু করে , পুলিশের সকল উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা , প্রসাষনের সকল আমলারা বিদেশে পালিয়ে যেতে সমর্থ হয়েছে। এখন পর্যন্ত কাউকে ধরা খেতে দেখি নাই। পর্যাপ্ত সময় নিয়ে এদের বিদেশে পালিয়ে যাবার সুযোগ দেয়া হয়েছে। আমরা যদি এর আগে ৯০ এর আন্দোলনে এরসাদের পতন কিংবা ১/১১ এর সময়ে বিএনপির পতনের দিকে দৃষ্টিপাত করি তাহলে কিন্ত ভিন্ন চিত্র দেখতে পাই। এরশাদ কিংবা খালেদা জিয়া , তারেক জিয়াকে পালিয়ে যেতে দেয়া হয়নি। তাদের সবাইকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এই কারনেই বলতে চাচ্ছি যে, শংকা কেটে যায়নি মোটেও। বিদেশে বসেও আওয়ামিলীগ বহু চাল চেলে যাচ্ছে। এদেরকে শক্ত হাতে বিচারের মুখোমুখি করতে হলে দরকার অত্যন্ত মেধাবী ও চৌকষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার । ১৫ বছরে আওয়ামী সরকারের বিশাল একটা সুবিধাভোগী শ্রেনী তৈরী হয়েছে , যাদের সংখ্যাও অনেক। এবারের আন্দোলনে এত পরিচিত মানুষের মুখোশ খুলে যেতে দেখে স্তম্ভিত হয়েছি। সুবিধাভোগীর সংখ্যা কয়েক লাখ হলেও অবাক হব না। এরাও কিন্ত বসে থাকবে না। পিঠ বাচাঁতে অনেকেই নানান পরিকল্পনা করবে নিশ্চিত। আসুন আমরা ব্লগাররা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটা রুপরেখা তেরী করি , যাদের আমরা ক্ষমতায় দেখতে চাই ।

(১) সমন্বয়কদের মাঝে অন্তত তিনজন ঃ এই জেন- যি প্রমান করেছে যে তাদের চিন্তাধারা আগের অন্য যে কোন প্রজন্মের চাইতে অনেক বেশি অগ্রগামী ও আধুনিক। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বয়ক তৈরী করে তারা যেভাবে দেশব্যপী সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন বারুদের গতিতে ছড়িয়ে দিতে সমর্থ হয়েছে তা এক কথায় অতুলনীয় একটা কৌশল। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে জেনেছি যে প্রধান সমন্বয়ক ছয় জন হলেও তারা নাকি মোট ৭৫ জন সমন্বয়কের লিস্ট বানিয়ে রেখেছিল যাতে একজন মারা গেলে সঙ্গে সঙ্গে আরেকজন তার জায়গা নিয়ে নিতে পারে। চট্টগ্রামের সমন্বয়ক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তালাত মাহমুদ রাফি শহীদ হবার পরপরই আরেকজন এসে তার জায়গা নিয়ে নেয়। জীবন বাজি রেখে এরকম একটা আন্দোলন যারা সংগঠিত করতে পারে , তাদের আমরা কি বলতে পারি ? দেশপ্রেমের এমন উদাহরনতো বিরল। অনেক দেখেছি তথাকথিত উচ্চশিক্ষিতদের মুখোশের আড়ালের নোংরা চেহারা। আর না! এবার তরুনরাই দেশের নেতৃত্বে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করুক।

(২) আসিফ নজরুল ঃ এবারের ছাত্র আন্দোলনে অভিভাবকের ভুমিকায় ছিলেন তিনি। শিক্ষকতার বাইরেও তিনি একজন আইনজীবি। রাজনৈতিকভাবে তিনি সাদা দলের শিক্ষক হলেও এই ফ্যসিস্ট সরকারের আমলে তাকে নিরপেক্ষতার সাথেই জনগনের পক্ষে কথা বলতে দেখা গেছে। তাছাড়া এই মুহুর্তে তিনি ছাত্রদেরই প্রতিনিধিত্ব করছেন ।

(৩) প্রফেসর আলি রিয়াজ ঃ ইলিনয় স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও সরকার বিভাগের বিশিষ্ট অধ্যাপক (ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর)। তিনি আটলান্টিক কাউন্সিলের অনাবাসিক সিনিয়র ফেলো এবং আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের সভাপতি। তার বেশিরভাগ গবেষণা ও প্রকাশনা ধর্ম এবং রাজনীতি বিষয় নিয়ে, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি এবং ইসলামী রাজনীতি সম্পর্কিত। তিনি বাংলাদেশী রাজনীতি এবং দক্ষিণ এশিয়ার মাদ্রাসাগুলি নিয়ে অনেক লেখালেখি করেছেন। তিনি ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মিড-ওয়েস্টার্ণ কনফারেন্স অন এশিয়ান এফেয়ার্সের ষান্মাসিক জার্নাল স্টাডিজ অন এশিয়ার সম্পাদক ছিলেন। তিনি ২০১৩ সালের ওয়াশিংটন ডিসিতে উড্রো উইলসন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর স্কলার্স-এ জননীতি বিশেষজ্ঞ ছিলেন ।

( ৪) দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ঃ অর্থনীতিবিদ ও গণনীতি বিশ্লেষক।দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) হলো বাংলাদেশের একটি সংস্থা যা সরকারি বিভিন্ন বাণিজ্যিক পদক্ষেপের বিষয়ে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে কাজ করে।

( ৫) সাংবাদিক তাসিম খলিল ও জুলকারনাইন সায়ের ঃ আওয়ামিলীগের ফ্যসিস্ট রুপ বহির্বিশ্বে তুলে ধরেছেন তারা। তাদের তৈরী ‘’অল প্রাইমিনিস্টার’স মেন ও আয়নাঘর ‘’ প্রতিবেদনের মাধ্যমে সারা বিশ্বের মানুষ জেনেছে যে কিভাবে ভয়ের রাজত্ব তৈরী করে দুই যূগেরও অধিক সময় ধরে একটি অগনতান্ত্রিক দল অবৈ্ধ উপায়ে ক্ষমতা ধরে রেখেছে। এরা অন্তর্বর্তীকালীণ সরকারকে খুব ভাল সাপোর্ট দিতে সমর্থ হবেন ।

( ৬) ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান ঃ এবারের আন্দলোনে রাজপথে নেমে ছাত্রদের সাথে ছিলেন তিনি। তার গাওয়া গানগুলো প্রচন্ড অনুপ্রেরনা যুগিয়েছে ছাত্রদের। সায়ানের গানের মূল বিষয় হলো জীবনমুখিতা ও প্রতিবাদ। তার গানে সমাজের অসঙ্গতি, বৈষম্য, ক্ষমতার অপব্যবহার, মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ নানা বিষয়ের সমালোচনা করা হয়। মানবিক মানুষের বড় প্রয়োজন এই রাস্ট্রের।

( ৭) জোনায়েদ সাকি ঃ জোনায়েদ সাকি গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারীর দায়িত্বে আছেন। বামপন্থী এই রাজনীতিবিদকে দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আগুন ঝড়া বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। অনেক আগে একবার ঢাকার মেয়র পদে নির্বাচন করতে নেমে তিনি ঢাকাকে আমুল বদলে দেয়ার রুপরেখা দিয়েছিলেন যেটা এখন কাজে লাগানো যেতে পারে।

আমি কয়েকটা নাম দিলাম। আপনারাও দিতে থাকুন ------


তথ্যসুত্র ঃ উইকিপিডিয়া
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ২:২২
১৫টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেশীর ভাগ হিন্দু আওয়ামী লীগে ভোট দেয় বা সমর্থন করে – এই কথাটা কতটা সত্য

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:৫৯

ভোট কেন্দ্রে গিয়ে কে কাকে ভোট দিচ্ছে এটা জানার কোন উপায় নেই। কারণ প্রকাশ্যে ব্যালট পেপার ব্যালট বাক্সে ফেলা হয় না। যদিও আওয়ামী লীগ আমলে বিভিন্ন সময়ে অনেক কেন্দ্রে বাধ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের চেয়ে বড় দেশপ্রেমিক ১৭৫৭ সালের পর বাংলার মাটিতে দ্বিতীয়টি পয়দাই হয়নি।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৪৫

ক্ষমতাচ্যুৎ স্বৈরাচারী ও গণহত্যাকারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী (জাভেদ) শুধু ইংল্যান্ডেই ৩৬০টি বাড়ির মালিক।
অগা মগা আলতু ফালতু বস্তি বাড়ি না, বেশির ভাগই কেনা হয়েছে বার্কলি গ্রুপের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগে তো পানি দিতনা মারার আগে। এখন ভাত পানি খাওয়াইয়া মারে।

লিখেছেন আহসানের ব্লগ, ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪


আগে তো পানি দিতনা শেষ নিস্বাশের আগে। এখন ভাত পানি খাওয়াইয়া মারে। আর শামীম মোল্লা ভাইয়ের কপালে অবশ্য অত্যাচার ছাড়া কিছু জোটে নাই। “ভাই আমারে আর মাইরেন না বলে অনুনয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ এবং ২০২৪ এর হানাদার ও রাজাকারকে সমর্থন করা যায় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:০০



১৯৭১ সালের হানাদার আমাদের দেশের সম্পদ তাদের দেশে নিয়েগেছে। ২০২৪ এর হানাদার আমাদের দেশের সম্পদ বিভিন্ন দেশে নিয়েগেছে। কারণ আমাদের দেশই এদের দেশ। ১৯৭১ সালের হানাদার ছিলো ভিনদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যা আর আমাদের ক্ষয়ে যাওয়া বিবেক

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৬


একটা গল্প প্রচলিত আছে এমন: রমজান মাসে বাংলাদেশে বেড়াতে এলেন উত্তর কোরিয়ার এক নাগরিক। কোনো এক রোজাদারকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনারা সারাদিন না খেয়ে থাকেন কেন?
উত্তরে রোজাদার বললেন, আমরা স্র্রষ্টার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×