প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রিসভার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গতকাল বিশাল সমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলমসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্য সমন্বয়করা।ঠিক একই সময়ে কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে ছড়িয়ে পড়ে ছাত্রলীগের তান্ডব। কুমিল্লায় তাদের ভয়াবহ তান্ডবে অনেকের মৃত্যূর খর পাওয়া গেছে। চট্টগ্রামে সড়কের বাতি নিভিয়ে দিয়ে গোলাগোলির ভিডিও এসেছে ফেসবুকে। ১৮ই জুলাই এর রাতের মতই একটা শেষ মরনকামড় দেয়ার চেষ্টা করেছে ছাত্রলীগ।তবে ঢাকায় একেবারেই সুবিধা করতে পারে নাই। আজকেও ছাত্রলীগ ঢাকায় শো ডাউনের কথা ঘোষনা করেছে। তবে বাস্তবে তাদের অবস্থা হচ্ছে , লোকবল একেবারেই নাই। তারা এইটা বুঝতে পারছে যে, এখন ছাত্র জনতার বিরুদ্ধে দাড়াইলে কাড়ি কাড়ি টাকা মিলবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রান রক্ষা করা সম্ভব হবে না। তারাতো আর রাজনীতিবিদ নয় যে, বেগতিক দেখলেই উড়াল দিতে পারবে। তাই তাদের শেষ অস্ত্র এখন গুজব। অনলাইনে ইচ্ছামত ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে, কিন্ত বাস্তবে তাদের অবস্থা দেখুন --
ইজরাইল থেকে এত দাম দিয়া আড়ি পাতার যন্ত্র কিনে অন্যের মোবাইল, মেসেঞ্জারে আড়ি পেতে এখন শেষমেশ তাদেরই মেসেজ ফাস হচ্ছে। মজার ব্যপার হচ্ছে, ফাস করছে তাদেরই লোক।যাই হোক এত রক্ত ঝড়িয়ে শেষ পর্যন্ত ভাল খবর যে, রাষ্ট্রের যেকোনো প্রয়োজনে সেনাবাহিনী জনগণের পাশে থাকার ঘোষনা দিয়েছে। '' অল প্রাইম মিনিস্টার'স মেন '' রা শেষতক বুঝতে পেরেছে যে, ছাত্রদের এই গনজোয়ারের বিরুদ্ধে গেলে তারা চিরদনের জন্য ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। আর আওয়ামিলীগ বিপদে পড়লে ইন্ডিয়ান আর্মি আমাদের দেশে ঢুকে বিড়াট মেসেকার চালানোর যে ভয় এতকাল জারী রেখেছিল সরকার , তা যে স্রেফ ভয় দেখানর উদ্দেশ্যেই ছিল, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ইন্ডিয়া গনতান্ত্রিক দেশ। চায়না বা উত্তর কোড়িয়া নয়। আরেক দেশে ছাত্র আন্দোলন দমন করতে , সে দেশে আর্মি পাঠানোর সিদ্ধান্ত মোদীর একার নেবার ক্ষমতা নাই। আর কোন গনতান্ত্রিক দেশের কেবিনেটেই এমন ফালতু প্রস্তাব পাশ হতে পারে না। পশ্চিমবঙ্গে এখন আমাদের ছাত্রদের সাথে সংহতি জানিয়ে “মোদির পোষা হাসিনা, তোমায় ভালোবাসি না '' শ্লোগান দিয়ে তুমুল প্রতিবাদ চলছে।
ছাত্রলীগের হাতে প্রান দেয়া বুয়েটের আবরার ফাহাদকে বড় মনে পড়ছে আজ। এই প্রজন্মের মনে তুষের আগুন জ্বালানোর কাজটা সেই করে গেছে । আর তাইতো এরই ধারাবাহিকতায় আবু সাইদরা বুক পেতে গুলি খেতেও বিন্দুমাত্র ভয় পায়নি। গলে পচে যাওয়া এই রাস্ট্রে বেঁচে থাকার চাইতে মৃত্যূকেই স্রেয় মনে করেছে এই প্রজন্ম। আবু সাইদের পথ অনুসরন করে হাজার হাজার ছাত্র বুক পেতে দিয়ে শ্লোগান দিয়েছে - বুকের মাঝে দারুন ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর '' । মৃত্যৃকে যার আর ভয় নাই , তাকে ঠেকায় কার সাধ্য! নতুন এক ইতিহাস তৈরীর দ্বারপ্রান্তে এখন দেশ ------
অটঃ এই ব্লগে আমি মুলত ঢাবিয়ান নিকে লিখতাম। ছাত্রদের এই তুমুল আন্দোলন শুরু হবার পর আমার মনে হয়েছে যে, প্রবাসে বসে এই মধ্যবয়সে এই নিক ব্যবহারের যোগ্য আমি আর নই। এই নিক ব্যবহারকারীর স্থান রাজপথ , অনলাইন নয়। তবে এখন ফেসবুকেই স্বনামে তুমুল প্রতিবাদ জারী রেখেছি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়কার সহপাঠীদের নিয়ে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই আগস্ট, ২০২৪ ভোর ৬:১৩