somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শোককে শক্তিতে পরিনত করুন

২৯ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ৯:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগের কাছে পাকিস্তানি জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করার ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনের প্রক্রিয়া চলাকালে পাকিস্তানি সেনারা কুখ্যাত ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নাম দিয়ে ২৫শে মার্চ নিরীহ বাঙালি বেসামরিক লোকজনের ওপড় ঝাপিয়ে পড়ে । তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতা-কর্মীসহ সকল সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করা। এদিন দুপুরের পর থেকেই ঢাকাসহ সারাদেশে থমথমে অবস্থা বিরাজ করতে থাকে।

ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতে ১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল পঞ্জাবের অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালাবাগে ভারতীয়রা এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেছিলেন। নৃশংসভাবে সেই সমাবেশ ভেস্তে দেওয়া হয়েছিল। যা হয়ে উঠেছিল ঔপনিবেশিক বর্বরতার করুণতম স্মৃতি।রেজিনাল্ড এডওয়ার্ড হ্যারি ডায়ার নামে একজন ব্রিটিশ কর্নেল সৈন্যদের সমাবেশে অংশ নেওয়া পুরুষ, মহিলা এবং শিশুদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। ব্রিটিশদের মতে, গুলিবর্ষণে প্রায় ৪০০ জন নিহত হয়েছিলেন। যাদের মধ্যে সবচেয়ে কমবয়সি ছিল নয় বছরের এক শিশু।

উপড়ের ঘটনাগুলোর সাথে মিল খুজে পাচ্ছেন কি আমাদের বর্তমান সময়ের ? বর্বরোচিত হামলার সাথে মিল থাকলেও অমিল শুধু একটা জায়গায়। পাক সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী বাঙ্গালী ছিল না। জেনারেল ডায়ারও ভারতীয় ছিল না। কিন্ত কত বড় দুর্ভাগা জাতি আমরা যে , আমাদের বাচ্চাদের ওপড় হামলা চালিয়েছে ,আমাদেরই সামরিক ও পুলিশ বাহিনী। দেশের জনগনকে রক্ষার শপথ নিয়ে এই বাহিনীগুলো ঝাপিয়ে পড়েছে নিজ দেশের নিরস্ত্র ছাত্র জনতার উপর!!!

ইতিহাস সাক্ষী যে , শেষ পর্যন্ত জালিমেরই পতন হয়। রাও ফরমানদের পরাজয়ের ইতিহাস আমরা জানি। আসুন দেখি জেনারেল ডায়ারের এই গনহত্যার পর ভারতে কি হয়েছিল। হতাহতের ঘটনা ভারতে ছড়িয়ে পড়লে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার নাইটহুড উপাধি বর্জন করেন। জালিয়ানওয়ালাবাগের ঐ গণহত্যা ভারতের জাতীয়তাবাদকে আরো কঠোর করে তুললো। গান্ধিজি লিখেছিলেন আমরা ডায়ারের শাস্তি চাইনা, যে ব্যবস্থা ডায়ারের মত মানুষ তৈরি করে, আমরা তার পরিবর্তন চাই। নাইজেল কলেট লিখেছেন প্রকৃতপক্ষে ঐ ঘটনার পরই গান্ধির স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হলো। ঐ ঘটনার আগে গান্ধি কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্রিটিশদের কাছ থেকে ছাড় দাবি করছিলেন । কিন্তু এরপর তিনি একবারেই ব্রিটিশ বিরোধী হয়ে পড়লেন। ভারতের মুক্তি আন্দোলনের যে প্রক্রিয়া তখনই চলছিলো, তাতে গতি বেড়ে গেল। ১৯২০ সালের মার্চে ডায়ারকে পদত্যাগ করতে বলা হলো। পরে একসময় তিনি নিজেও তার কাজের জন্য অনুশোচনা করতেন। ১৯২৭ সালে ইংল্যান্ডের সমারসেট কাউন্টিতে তার মৃত্যু হয়।

ইতিহাস থেকে এবার আমাদের শিক্ষা নেবার পালা। জাতিগতভাবে শীড়দাড়ার পরীক্ষা দেবার পালা।১৯৭১ এর ২৫ শে মার্চের পর যদি এই জাতি ভয় পেয়ে পাকিদের হুজুর হুজুর করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরত , তবে আমাদের এই স্বাধীন দেশ পাবার সৌভাগ্য হত না। জেনারেল ডায়ারের নিশৃংষ গনহত্যার পর যদি ভারতবাসী ভয়ে কুকরে যেত , তবে ব্রিটিশদের দাস হয়েই আজো আমাদের জীবন কাটাতে হত। দেশের ১৮ কোটি জনগনের প্রত্যেকটি মানুষের কাধে আজ শহীদের রক্তের দায় চেপেছে। এতগুলো তরতাজা তরুনের রক্ত বৃথা যেতে পারে না। পক্ষ এখন দুটো। কোন পক্ষে আমরা দাড়াবো, সেটা নির্ধারনের সময় এখন। মনে রাখবেন আপনি নির্বিকার, চুপ মেরে আছেন মানে আপনি জালিমের পক্ষ নিলেন—----

তথ্যসুত্র ঃ উইকিপিডিয়া ও বিবিসি বাংলা

সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১১:০৯
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেশীর ভাগ হিন্দু আওয়ামী লীগে ভোট দেয় বা সমর্থন করে – এই কথাটা কতটা সত্য

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:৫৯

ভোট কেন্দ্রে গিয়ে কে কাকে ভোট দিচ্ছে এটা জানার কোন উপায় নেই। কারণ প্রকাশ্যে ব্যালট পেপার ব্যালট বাক্সে ফেলা হয় না। যদিও আওয়ামী লীগ আমলে বিভিন্ন সময়ে অনেক কেন্দ্রে বাধ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের চেয়ে বড় দেশপ্রেমিক ১৭৫৭ সালের পর বাংলার মাটিতে দ্বিতীয়টি পয়দাই হয়নি।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৪৫

ক্ষমতাচ্যুৎ স্বৈরাচারী ও গণহত্যাকারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী (জাভেদ) শুধু ইংল্যান্ডেই ৩৬০টি বাড়ির মালিক।
অগা মগা আলতু ফালতু বস্তি বাড়ি না, বেশির ভাগই কেনা হয়েছে বার্কলি গ্রুপের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগে তো পানি দিতনা মারার আগে। এখন ভাত পানি খাওয়াইয়া মারে।

লিখেছেন আহসানের ব্লগ, ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪


আগে তো পানি দিতনা শেষ নিস্বাশের আগে। এখন ভাত পানি খাওয়াইয়া মারে। আর শামীম মোল্লা ভাইয়ের কপালে অবশ্য অত্যাচার ছাড়া কিছু জোটে নাই। “ভাই আমারে আর মাইরেন না বলে অনুনয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ এবং ২০২৪ এর হানাদার ও রাজাকারকে সমর্থন করা যায় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:০০



১৯৭১ সালের হানাদার আমাদের দেশের সম্পদ তাদের দেশে নিয়েগেছে। ২০২৪ এর হানাদার আমাদের দেশের সম্পদ বিভিন্ন দেশে নিয়েগেছে। কারণ আমাদের দেশই এদের দেশ। ১৯৭১ সালের হানাদার ছিলো ভিনদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যা আর আমাদের ক্ষয়ে যাওয়া বিবেক

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৬


একটা গল্প প্রচলিত আছে এমন: রমজান মাসে বাংলাদেশে বেড়াতে এলেন উত্তর কোরিয়ার এক নাগরিক। কোনো এক রোজাদারকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনারা সারাদিন না খেয়ে থাকেন কেন?
উত্তরে রোজাদার বললেন, আমরা স্র্রষ্টার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×