অনেক মন খারাপ করা একটা বিদায় পেলাম পরিবারের কাছ থেকে। যাই হোক, আমি আর আমার বউ প্লেনে উঠে বসলাম ভোর ৫:৩০ এর দিকে (০২ অগাস্ট)। যখন প্লেন আকাশে উঠল তখন ঢাকা শহরটা উপর থেকে দেখে নিলাম, অনেক দিনের জন্য। খুব খারাপ লাগছিল।
আমি ইতিহাদে যাচ্ছিলাম। যাই হোক, অনেক ক্ষুধা লাগার পরে ওরা সকালের নাশতা দিতে আসল। আমি শুনেছি যে প্লেনে খাবার দাবার নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট না করা ভাল। তাই নিলাম পরাটা-নিরামিষ। (ক্যান যে এইটা নিছিলাম

যাইহোক, আমার ট্রানজিট ছিল আবুধাবিত। আমার ঘাড়ে মোটামুটি পর্বত সাইজের একটা ব্যাগ ছিল। সেটা নিয়ে হাঁটতে মোটামুটি খবর হয়ে গেল। শেষমেশ, শিকাগোর ফ্লাইটে উঠলাম।
আবুধাবি থেকে শিকাগো ১৪ ঘন্টার ফ্লাইট। পেটের ভেতর পরাটা ভীষণরকম ফাইট শুরু করে দিল। আমার ঠিক মনে পরছিল না কবে শেষ এতটা খারাপ লেগেছিল। একটা মজার ব্যাপার খেয়াল করলাম, ওরা কোক চাইলে সামান্য একটু দেয়(পুরো ক্যান দেয় না, ক্যান থেকে ছোট গ্লাসে ঢেলে দেয় )। আর যারা বিয়ার চাইল তাদের দিল পুরা এক ক্যান।

একবেলার খাবার খেলাম, আরেক বেলারটা খেতেই পারলাম না শুধু শুকনা পাউরুটি খেয়ে বসে থাকলাম। ব্লাংকেট নিয়েও শীতে আমার কাঁপাকাঁপি দশা, অথচ পাশেই এক ব্রিটিশ পরিবার (উইথ কয়েকটা পিচ্চি) আরামসে টি-শার্ট পরে বসে আছে।
শিকাগো নামার পরে সবার আগে যে কথাটা মাথায় আসল সেটা হল,"হুম, অবশেষে আসলাম খুব একটা রসগোল্লার দেশে"। ইমিগ্রেশন লাইনে দাঁড়িয়ে কথাটার মানে বের করার চেষ্টা করতে থাকলাম, পারলাম না। (কথাটা অর্থহীন না, মানে আছে। আমার মত নাদান বান্দারা হয়ত জানে না

এয়ারলাইনের কাউন্টারে যাবার পর দিল এক ঝাড়ি, এখনও এইখানে? তোমার ফ্লাইট তো অন্য টার্মিনালের শেষ মাথায়। ফ্লাইট ধরতে চাইলে দৌড় দাও। দিলাম ডমেস্টিক ফ্লাইট ধরার জন্য দৌড়। দৌড়ের পর গিয়ে দেখা গেল ফ্লাইট ২ ঘন্টা ডিলে। যারা আমদের নিতে আসবেন তাদের ফোন করার জন্য কয়েনবক্স ফোন এর শরণাপন্ন হলাম।(আমদের দেশ অনেক এগিয়ে, আমরা কয়েন বয তুলে দিছি দেশ থেকে

কয়েনবক্স এর নিয়মে লেখা:
১। ডায়াল টোন শোনো।
২। নাম্বার ডায়াল করো।
৩। পয়সা ফেল তারপর লাইন পেলে কথা বল।
আমি কানে রিসিভার ধরে ডায়লটোন শুনে নাম্বার ডায়াল করার মাঝখানেই পয়সা চাইতে লাগল। দিলাম পয়সা, বলল, 'তুমি ভুল ভাল নাম্বার দিছ, আগে ঠিকমত জাইনা তারপরে আস।' হায় হায় আমার পয়সা তো নিয়া গেল



আবার চেষ্টা করলাম, একই ঘটনা, পয়সা নিয়া যায় আর আমার ভুংভাং দেয় যে নম্বর ঠিক নাই।



এরপরের বার,পয়সা চাইলেও পয়সা দিলাম না। পুরা নম্বর ডায়াল করে পয়সা দিলাম, এতেই কাজ হল। (আমার কতগুলা পয়সা শুরুতেই উড়ে গেল

তারপর, ভাবলাম পিপাসা লেগেছে পানি খাই।
হলিউডি সিনেমাতে দেখেছি পানি খাওয়ার একটা বেসিন থেকে হিরোরা পানি খায়। (ঐযে, বেসিনের মত থাকে একজায়গায় সুইচ দিলে পিচকিরি মত পানি বের হয়)
ভাবলাম এইটা একটু খেয়ে দেখি। এমন ক্লোরিন দেয়া (ঢাকার ফুটানো পানি খাওয়া মানুষ আমি), একটু মুখে দিয়েই যে শব্দটা মুখ থেকে বেরিয়ে এল তা হল, "ইয়াক"
[পরে আরো লিখব আশা থাকল। বাসায় ইন্টারনেট নাই এখনও]
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:৫১